শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুই সিটিতে ক্লিন ইমেজের লিডারশিপ : ওবায়দুল কাদের

পদত্যাগের বক্তব্য বাণিজ্যমন্ত্রীর কথার কথা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পদত্যাগ চাওয়ার বিষয়টি কথার কথা বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যখনই চাইবে তখনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা নির্বাচন করতে চাই বলেই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগে ক্লিন ইমেজের নেতা দেয়া হয়েছে। রেলপথ, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজের পারফরম্যান্স ভালো নয়, এমন গুঞ্জন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রীর পারফরম্যান্স মূল্যায়নের দায়িত্ব মন্ত্রিসভার নয়। একজন মন্ত্রীকে রাখা বা না রাখা নিরঙ্কুশভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এ ব্যাপারে আমার পক্ষে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। কিছু সচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, অনুসন্ধান চলছে, সময়মতো খবর পাবেন। দুদককে বলা আছে, যেখানে দুর্নীতি সেখানে ব্যবস্থা নেবেন, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।

নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক এ বিষয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল হয়েছে সেটি অস্বীকার করার কিছু নেই। যেটুকু কন্ট্রোল নেই, সেটুকু কন্ট্রোলে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা সরকার চালাচ্ছে। পেঁয়াজের দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা কি দুর্বল? ক্রয় করতে পারছে না? কোনো একটা ভোগ্যপণ্য বাজারে ঘাটতি আছে, সে জন্য এমনকি দুর্ভিক্ষের কোনো পদধ্বনি আছে? তাই বলে তো ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা হতে পারে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, হ্যাঁ তা হতে পারে না। অবশ্যই এটা হওয়া অস্বাভাবিক। একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিক হতে হয়তো কিছু সময় লাগবে। দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ কী ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিটি নির্বাচন হবে জেনেই আমরা সম্মেলনের (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ) কাজ সেরেছি। সিটি সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করা, স্মার্টার করা, নির্বাচনে বিজয়ের উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান আমরা সিটিতে গড়ে তুলতে এই কনফারেন্সের আয়োজন করেছি। আমরা দুই সিটিতে ক্লিন ইমেজ উপহার দিয়েছি। কারণ, আমরা নির্বাচন করতে চাই এবং বিজয় চাই; সেজন্য আমরা ক্লিন ইমেজের লিডারশিপ এনেছি। নির্বাচন সামনে তাই আমরা মনে করেছি এখানে কনফারেন্স (কাউন্সিল) করে নিউ লিডারশিপ আনা দরকার।

এবার প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ দেখার সম্ভাবনা আছে কি নাÑ এমন প্রশ্নের তার উত্তর, এটা আমরা ভাবনা-চিন্তা করছি। আমাদের মনোনয়ন বোর্ড বসবে যখনই শিডিউল ডিক্লিয়ার হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডেই সিদ্ধান্ত নেবো। এখন আমরা খুঁজছি, চিন্তা-ভাবনা করছি। আওয়ামী লীগ যথাসময়ে সিটি নির্বাচন চায় কিনাÑ প্রশ্নে কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন যখনই চায়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের কোনো প্রস্তাব আছে কি না? আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেনÑ এটা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। তারা যখনই চাইবে আমরা নির্বাচন করতে প্রস্তুত।

আওয়ামী লীগেও কী এবার নতুন মুখ আসবেÑ প্রশ্নে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নতুন মুখ তো আসবে। আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানে নতুন পুরাতন মিলিয়ে কমিটি। আপনি (সাধারণ সম্পাদক) থাকবেন কি নাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আমি বারবার এক কথাই বলেছি, এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আমাদের সভাপতি যেটা ভালো মনে করবেন, কাউন্সিলরদের মাইন্ড সেট তিনি ভালো করেই জানেন। আমাদের কাউন্সিলররাও সবসময় নেত্রীর উপর আস্থা রাখেন। তার সিদ্ধান্তে আমাদের দ্বিমত নেই। দলের স্বার্থে তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তাকে স্বাগত জানাব। আমি নিজেও স্বাগত জানাব।

শুদ্ধি অভিযান নিয়ে এক প্রশ্নে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে সময় মতো দেখবেন। শুদ্ধি অভিযান স্থিমিতও হয়নি, কোনো শৈথিল্যও হয়নি। এর আগে ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙগুলি দাস সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমাদের কিছু প্রকল্প আছে সেগুলোর কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি (ভারতীয় হাইকমিশনার)। কুমিল্লার ময়নামতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল- এগুলো বড় প্রকল্প। এছাড়াও ফেনী নদীর ওপর একটা সেতুও শেষ পর্যায়ে। খাগড়াছড়িতে আরো কিছু প্রকল্প আছে এগুলো নিয়ে আলাপ হয়েছে। পুশ ইন নিয়ে আলোচনা না হলেও ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি এমনই একটা বিষয় বললেন যে, প্রধানমন্ত্রী গেলেন এটা নিয়ে ভারতবিরোধী একটা প্রোপাগান্ডা, এটার কারণ ও যুক্তি কী? উনিও বললেন, এমওইউ-কে কেন চুক্তি বলা হচ্ছে। এমওইউ তো ওপেন সিক্রেট। এমওইউ নিয়ে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলেও ভারতীয় হাই-কমিশনার জানিয়েছেন, ওরা একটি রিপোর্ট করেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এনআরসি নিয়ে তারা বারবার বলে আসছে উদ্বিগ্ন হবার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি, ঘটবে না। ভারত সরকার স্বয়ং প্রাইম মিনিস্টার আশ্বস্ত করেছেন, সুতরাং এ নিয়ে আমরা আর প্রশ্ন করে বিব্রত করতে চাই না। আমাদের বাইল্যাটারাল রিলেশনশিপটা ভালো, চমৎকার পর্যায়ে আছে। কাজেই যেকোনো সমস্যা হলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনেক উচ্চতায়, এসময়ে আমাদের মধ্যে কোনো প্রকার টানাপোড়েন নেই। যে কারণে কোনো কিছু বৈরিতার সৃষ্টি করে না।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন