বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পেঁয়াজের জন্য কাশ্মীর সমালোচনা অগ্রাহ্য করে তুরস্কের দ্বারে মোদি সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:২০ পিএম

তুরস্কের সাথে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিম্নগামীই ছিল। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বাড়তেই থাকায় এখন নরেন্দ্র মোদি সরকার সব উপেক্ষা করে আবার আঙ্কারার দরজায় দাঁড়িয়েছেন।

কাশ্মীর ইস্যুতে তুরস্ক পাকিস্তানকে সমর্থন করায় এবং ইস্যুটি সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে উত্থাপন করার পর দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে অবনতি ঘটে। ওই সময় এরদোগান বলেছিলেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হতে হবে সঙ্ঘাতের ভিত্তিতে নয়, বরং ন্যায়বিচার, সাম্যভিত্তিক সংলাপের মাধ্যমে।

ভারত দ্রুত এর জবাব দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুরস্ক সফর স্থগিত করার মাধ্যমে এবং চলতি বছরের প্রথম দিকে ৫টি ৪৫ হাজার টনি সাপোর্ট শিপ নির্মাণের জন্য তুরস্কের আনাদুলু শিপিয়ার্ডের সঙ্গে ২.৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি প্রস্তাব বাতিলের মাধ্যমে।

কিন্তু ভারতে পেঁয়াজের খুচরা দাম বাড়ছেই। এর মূল্য এখন কেজি ৬০ থেকে ১০০ রুপিতে রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মোদি সরকারের মূল্য স্থিতিশীলকরণ তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি (পিএসএফএমসি) ২২ নভেম্বর বসে তুরস্ক থেকে ১১ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় বলে এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এক কর্মকর্তা বলেন, তুরস্ক থেকে ১১ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৫,৫০০ টন হবে লাল পেঁয়াজ, বাকিটা হবে হলুদ পেঁয়াজ। তুর্কি চালান ৭ জানুয়ারি ভারতে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তুরস্ক ছাড়াও মিসর, নেদারল্যান্ডস থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করছে ভারত। মিসর থেকে আমদানি করা হচ্ছে ৬,০৯০ টন, নেদারল্যান্ড থেকে আনা হচ্ছে ৫,০০০ টন। মিসর থেকে পেঁয়াজের প্রথম চালান ১২ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ের জওহেরলাল নেহরু বন্দরে পৌঁছাবে।

অপর এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে প্রথম চালান ১০ ডিসেম্বর আসবে। কিন্তু দু দিন বিলম্ব ঘটছে। মিসর থেকে বাকি পেঁয়াজ তিনটি চালানে যথাক্রমে ১৭, ২৪ ও ৩১ ডিসেম্বর আসবে। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, দরপত্র-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই বিলম্ব ঘটছে।

ভারতে পেঁয়াজ আমদানির সাথে জড়িত সংস্থা হচ্ছে মেটালস অ্যান্ড মিনারেলস ট্রেডিং করপোরেশন (এমএমটিসি)। ভোক্তাবিষযক মন্ত্রী ৯ নভেম্বর এমএমটিসিকে ১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন।

এমএমটিসি দরপত্র আহ্বান করলেও এতে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রথমবার অপর্যাপ্ত দরপত্রের কারণে তা বাতিল করা হয়। ২০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির দ্বিতীয় দরপত্র আহ্বানও বাতিল করা হয় ৮ নভেম্বর। দাম অনেক বেশি হওয়ায় এবং আসতে বেশ দেরি হবে বলে তা বাতিল করা হয়। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। এমএমটিসি ১৪ নভেম্বর তৃতীয় দরপত্র আহ্বান করে। এর শেষ তারিখ ছিল ২২ নভেম্বর। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ২৫ নভেম্বর। দি প্রিন্ট জানতে পেরেছে, এবারও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

ভারতে পেঁয়াজ আসা মাত্র এর দায়িত্ব গ্রহণ করে সরকারের সমবায় শাখা ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কোঅপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারশন অব ইন্ডিয়া। তারাই দেশজুড়ে এই পেঁয়াজ বিতরণের দায়িত্ব পালন করে থাকে।

এক কর্মকর্তা বলেন, রাজ্যগুলো ইতোমধ্যেই আমদানি করা পেঁয়াজের ব্যাপারে তাদের চাহিদার কথা জানিয়ে দিয়েছে।

সবচেয়ে বেশি চাহিদার কথা জানিয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ। তাদের প্রয়োজন সপ্তাহে ১,০৫০ টন। পশ্চিমবঙ্গ সপ্তাহে চেয়েছে ৩০০ টন, উড়িশ্যা সপ্তাহে ১০০ টন, কেরালা সপ্তাহে ৪০ টন। আর দিল্লি, নাফেদ ও মাদার ডেইরির প্রয়োজন সপ্তাহে ৭০০ টন। সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন