ভারতের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের নিদর্শন হিসেবে রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউকে ইন্দিরা অ্যাভিনিউ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকাল এক আলোচনা সভায় সরকারের প্রতি এই আহবান জানানো হয়। ওই সভায় ভারতের প্রতি বাংলাদেশের নির্ভরতার ইংগিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিন কোটি মানুষ ঘর ছেড়েছিল। ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এক কোটি মানুষ। ভারতের অবদান ও সহযোগিতা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অসম্পূর্ণ।
রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’- শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এতে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মানিক। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বক্তৃতা করেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, ব্রিটিশ মানবাধিকার নেতা জুলিয়ান ফ্রান্সিস প্রমূখ।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশের জনগণের যে প্রত্যাশা, বন্ধুপ্রতিম ভারত এমন কিছু করবে না যাতে দেশের জনগণের মধ্যে দুশ্চিন্তা বা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পারস্পারিক বন্ধুত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারত এগিয়ে যাবে। উভয় দেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে। তিনি বলেন, আজ আমরা বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়ার বার্ষিকী উপলক্ষে একত্রিত হয়েছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উভয় দেশ অভিন্ন ইতিহাস, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় এই দু’দেশের সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা ও বোঝাপড়ায় অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ়তর জায়গায় রয়েছে। যার ফলে পারস্পরিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিগত এক দশকে আমাদের উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোনালী অধ্যায় বলে আখ্যায়িত করেছেন এ সম্পর্ককে। আমাদের দু’দেশের সরকারপ্রধানের অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নিঃসন্দেহে আরও অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে। আমরা আশাবাদী যে আগামীতে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর থেকে গভীরতর হবে।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যেমন ১৯৯১ সালে ছিল, ভবিষ্যতেও সেই সম্পর্ক থাকবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, প্রতিবেশী প্রথম। আর প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। আমাদের প্রত্যাশা মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যেন এই দেশের তরুণ প্রজন্ম বেড়ে ওঠে। আর যেন কোনো অশুভ শক্তি এখানে মাথাচাড়া না দিয়ে ওঠে। আর যেন অপরাশেন সার্চ লাইট না আসে। আর যেন ‘আমি বীরঙ্গনা বলছি’এমন বই না লেখা হয়।
শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদান আমরা ভুলিনি। তার অবদানের কথা স্মরণ করে রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউকে ইন্দিরা গান্ধী রোড বা অ্যাভিনিউ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন