বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট থেকে পৃথিবীকে রক্ষার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা নয় বরং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে অন্তত ১০ লাখ মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের রাজপথে।
গতকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন ২০১৯ (কপ২৫)- স্থল মাদ্রিদ শহরে উপস্থিত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই এই বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয় বলে জানা গেছে। জলবায়ু নিরাপত্তা ও জলবায়ু অধিকার কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী ও এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ সম্মিলিতভাবে এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পালন করেন।
এসময় বিক্ষোভকারীরা দাবি জানান, শুধু পরিকল্পনা গ্রহণ না করে যেন জলবায়ু রক্ষায় করণীয় বিষয়ে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ গ্রহণের তৎপরতা চালানো হয়। পাশাপাশি জলবায়ু সংকট সমাধানের লক্ষ্যে প্যারিস চুক্তি দ্রæত বাস্তবায়নে বিশ্বনেতাদের সক্রিয় হওয়ার আহবানও জানান বিক্ষোভকারীরা। একই তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ডয়েচ ভেলে।
এদিকে সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্ব নেতারা জলবায়ু সংকট নিরসনে এরই মধ্যে নানাবিদ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়মূলক প্রভাব প্রতিরোধে তাদের এসকল পরিকল্পনা অপ্রতুল বলে অভিহিত করেছেন। ড্যানির প্রতিটি কথায় যেন সুইডেনের সেই আলোচিত পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটা থানবার্গের কথার প্রতিধ্বনিত
বিক্ষোভ চলাকালীন অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচ ও গান পরিবেশন করেন। আর সুরে সুরে নিজেদের জলবায়ু অধিকার ও পৃথিবীকে এই সংকট থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানান। এ সময় ছোট ছোট শিশুরা তাদের পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্যদের সঙ্গে দলে দলে বিক্ষোভস্থলে যোগ দেন। তাদের দাবি, এই নতুন প্রজন্মের জন্য একটি উপযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা।
বিক্ষোভকারীরা “জলবায়ু রক্ষায় পদক্ষেপ এখনই”, “একটি পৃথিবী একটি সম্ভাবনা,” এমন আরো অনেক ধরনের স্লোগান সম্বলিত ফ্যাস্টুন-ব্যানার নিয়ে মাদ্রিদের পুরো রাজপথ প্রদক্ষিন করেন।
বিক্ষোভে অংশ নিতে সুদূর কলম্বিয়া থেকে আসা ১৫ বছর বয়সী ড্যানি বলেন, “সরকার জলবায়ু সমস্যাকে অগ্রাহ্য করছে। তারা কেবল তাদের নিজস্ব স্বার্থে আগ্রহী, সাধারণের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। পরবর্তী প্রজন্মের স্বার্থে তাদের করণীয়গুলো নিয়ে তারা কেন গভীরভাবে ভাবছে না।” ড্যানির প্রতিটি কথায় যেন সুইডেনের সেই আলোচিত পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটা থানবার্গের কথার প্রতিধ্বনি।
বিক্ষোভকারীরা সবচেয়ে বেশি জোর দেন প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে। বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশ কর্তৃক অনুমোদিত এই চুক্তির অধীনে, শতাব্দীর শেষের দিকে প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে সীমাবদ্ধ করার লক্ষ্যে শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন নির্গমন হ্রাস করার জন্য নিজস্ব লক্ষ্য অর্জন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থির করেন, এটিই এই চুক্তির মূল প্রতিপাদ্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন