বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

প্লাস্টিক দূষণে লাখ লাখ সামুদ্রিক কাঁকড়া মরছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:৩০ পিএম

প্লাস্টিক দূষণের কারণে ভারত মহাসাগরের কোকোস (কিলিং) দ্বীপপুঞ্জের পাঁচ লাখ আট হাজার এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের হেন্ডারসন দ্বীপের ৬১ হাজার সামুদ্রিক কাঁকড়া মারা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়ার ইনস্টিটিউট ফর মেরিন অ্যান্ড অ্যান্টার্কটিক স্টাডিজ, লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং কমিউনিটি সায়েন্স অর্গানাইজেশন টু হ্যান্ডস প্রজেক্টের গবেষকদের মতে, উপকূলের প্রতি বর্গমিটারে এক থেকে দুটি কাঁকড়া মরে পড়ে আছে। খবর যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের।

তারা হেন্ডারসন দ্বীপ এবং কোকোস দ্বীপপুঞ্জের চারটি দ্বীপে জরিপ চালায়। তারা এসব উপকূলে পড়ে থাকা প্রতি প্লাস্টিক কন্টেইনারের মৃত কাঁকড়া গুনে দেখেন। তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ শেষে পাওয়া ফলাফল কোকোস দ্বীপপুঞ্জের আরও ১৫টি দ্বীপ থেকে পাওয়া ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন তারা।

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের সিনিয়র কিউরেটর ড. অ্যালেক্স বন্ড বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সামুদ্রিক কাঁকড়ার নিজস্ব খোলস থাকে না। নিজেদের সুরক্ষায় তারা সাধারণত শামুক-ঝিনুকের পরিত্যক্ত খোলসের ভেতর বসবাস করে এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক খোলস ছেড়ে আরেকটিতে আশ্রয় নেয়। যখন কোনও প্লাস্টিকের কন্টেইনারে আটকা পড়ে একটি কাঁকড়া মারা যায়, তখন অন্যরা এক ধরনের রাসায়নিক সঙ্কেত দেয়।

তিনি বলেন, এই সঙ্কেতের মানে হলো একটি খোলস খালি আছে। এতে অন্যরা আকৃষ্ট হয়ে কন্টেইনারটিতে প্রবেশ করে মারা যায়। মূলত এটি একটি ভয়াবহ শৃঙ্খলা। কারণ প্লাস্টিকের কন্টেইনারে আটকা পড়ে একটি কাঁকড়ার মৃত্যুই এর আশেপাশের অন্যগুলোর মৃত্যুর কারণ।

প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের সঙ্গে কাঁকড়ারা মোটেও অভ্যস্ত নয়। একারণে এসব থেকে কীভাবে বের হতে হয় সেটি তারা বুঝতে পারে না। ফলে একবার প্লাস্টিকের ভেতর ঢুকলে এর মধ্যে আটকা পড়ে না খেয়েই মারা যায় কাঁকড়ারা।

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, ভুল করে একবার একটি কাঁকড়া প্লাস্টিকের মধ্যে আটকা পড়ে মারা গেলে তা থেকে রীতিমতো চেইন রিঅ্যাকশন শুরু হয়ে যায়। কোথাও কাঁকড়া মারা গেলে অন্য কাঁকড়াদের কাছে সংকেত যায়, সেখানে একটি খোলস খালি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্য কেউ এসে সেই জায়গা দখল করে। এভাবে একটির পর একটি মারা যেতে থাকে।

সম্প্রতি কাঁকড়াদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে গবেষণা করেছেন লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম ও ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়ার ইনস্টিটিউট ফর মেরিন অ্যান্ড অ্যান্টার্কটিক স্টাটিজের (আইএমএএস) বিজ্ঞানীরা। এতে সহযোগিতা করেছে বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা ‘টু হ্যান্ডস প্রজেক্ট’।

ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামের সিনিয়র কিউরেটর ইনচার্জ ড. অ্যালেক্স বন্ড বলেন, সমস্যাটা খুবই গুরুতর। কারণ এর জন্য লাগে মাত্র একটি কাঁকড়া।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া আইএমএএস-এর গবেষক ড. জেনিফার লেভারস বলেন, এই ফলাফল বেদনাদায়ক হলেও আশ্চর্যজনক কিছু নয়। যেসব সমুদ্রসৈকত ও উদ্ভিদের ওপর তারা নির্ভরশীল তার চারপাশে অসংখ্য বন্যপ্রাণী রয়েছে। এটা অবশ্যম্ভাবী যে, এসব প্রাণী একে অপরের সংস্পর্শে আসবে ও প্লাস্টিক দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন