বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কবর থেকে পাওয়া শিশুটি এখন সুস্থ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:২১ পিএম

অক্টোবরে ভারতের উত্তর প্রদেশে কবর খুঁড়তে গিয়ে পাওয়া এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছিল। নিজের মৃত শিশুকে কবর দেয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী হিতেশ কুমার সিরোহি। কিন্তু সেখানে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন তিনি আরেক নবজাতককে। গুরুতর অবস্থায় তাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন তার রক্তে দূষণ এবং বিপদজনক মাত্রার প্লাটিলেট কাউন্ট ছিল।

অনেকটা আকস্মিকভাবে ওই শিশুটিকে একজন গ্রামবাসী খুঁজে পান, যিনি তার সদ্য মারা যাওয়া নবজাতক শিশুকে দাফন করতে কবর খুঁড়েছিলেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সাধারণত মৃতদেহ পুড়িয়ে থাকে, তবে শিশুদের অনেক সময় কবর দেয়া হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, সেই উদ্ধার হওয়া নবজাতক এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে এবং হাসছে। মৃত সদ্যোজাতককে কবর দিতে গিয়েছিলেন হিতেশ। মাটি খুঁড়েতে গিয়ে লক্ষ্য করেন তিন ফুট নীচে একটা শক্ত কিছু রাখা রয়েছে। সেটি ছিলো মাটির পাত্র।

পাত্রটা টেনে বাইরে নিয়ে আসার পর তাজ্জব হয়ে যান তিনি। পাত্রের ভিতরে তখনও ছটফট করছে একটা তাজা প্রাণ। এক সদ্যোজাত কন্যা শিশু! ভীষণ জোরে শ্বাস নিচ্ছিল সে।

তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে শিশুটিকে স্থানান্তর করা হয় ডা. খান্না’র শিশু হাসপাতালে। শিশুটি এখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে বাড়িয়ালা জেলার শিশু কল্যাণ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিশুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রাভি খাননা বলেন, তার ওজন বেড়েছে। রক্ত কণিকার সংখ্যাও সন্তোষজনক।

শিশুটি কতক্ষণ ধরে কবর দেয়া অবস্থায় ছিল, সেটি জানা যায়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন, তারা শুধু ধারণা করতে পারেন যে, শিশুটি কীভাবে টিকে ছিল।
ড. খান্না বলেছেন, তাকে হয়তো তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে কবর দেয়া হয়েছিল এবং সে নিজের শরীরের বাদামী চর্বির ওপরেই নির্ভর করে টিকে ছিল।
তলপেটে, উরু এবং গালে এ ধরণের চর্বি নিয়ে শিশুদের জন্ম হয়। জরুরি পরিস্থিতিতে এর ওপর নির্ভর করে শিশুরা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।
তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকে হয়তো দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে কবর দেয়া হয়েছিল এবং উদ্ধার করা না হলে সে হয়তো আর এক বা দুই ঘণ্টা টিকে থাকতে পারতো।

মাটির পাত্রে থাকা ফুটোর কারণে হয়তো সেখানে বাতাস চলাচল করেছে, ফলে সে অক্সিজেন পেয়েছে। অথবা নরম মাটির ভেতর থেকেও সে অক্সিজেন পেয়ে থাকতে পারে।
গত অক্টোবর মাসে 'অজ্ঞাতনামা' ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ এবং নবজাতকটির বাবা-মায়ের সন্ধান করতে শুরু করে। পুলিশ বলেছে, তাদের বিশ্বাস শিশুটিকে কবর দেয়ার সঙ্গে তার বাবা-মা জড়িত আছে, কারণ এই ঘটনাটি এতো আলোচনার জন্ম দিলেও, কেউ শিশুটির অভিভাবকত্ব দাবি করতে এগিয়ে আসেনি।
তবে এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা। তবে বিশ্বের যেসব দেশে লিঙ্গ বৈষম্য সবচেয়ে বেশি, ভারত তার অন্যতম। নারীদের ক্ষেত্রে অনেক সময় সামাজিকভাবে বৈষম্য করা হয় এবং মেয়েদেরকে আর্থিক বোঝা বলে মনে করা হয়, বিশেষ করে দরিদ্র সমাজগুলোয়।

যেহেতু শিশুটির মা-বাবার পরিচয় এখনো জানা যায়নি, তাই এখনও শিশুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকছে বাড়িয়ালা শিশু কল্যাণ কর্তৃপক্ষ। সেখানে তাকে নির্দিষ্ট সময় রাখা হবে। এরপর কেউ যদি তাকে দত্তক নিতে চায় তাহলে আবেদন করতে পারবে। বিবিসি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন