শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মতলবে ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গত ১৭ দিনে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার শিশু ও বৃদ্ধ। চাঁদপুর ও আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় ব্যাপকহারে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছে প্রায় ১শ’ ৭৩ জন শিশু। এ সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণের চেয়েও বেশি।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ কেন্দ্রে গত ২০ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৯শ’ ৫২টি শিশু। এর মধ্যে ৫ বছর বয়সী শিশু ২ হাজার ২শ’ ৫৪ জন শিশু। বাকি ৬শ’ ৯৮ জন বয়স পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে। উল্লিখিত সময়ে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছে প্রায় ১৭৩টি শিশু। এ সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণেরও বেশি। স্বাভাবিক সময়ে এখানে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয় ৪৫-৫০ টি শিশু।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০১৮ সালে ৩৫ দিনে ৫ সহ¯্রাধিক শিশু। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ১৫৭টি শিশু। এছাড়াও গত বছর ২০১৭ উল্লিখিত ৩৫ দিনে ভর্তি হয়েছিলো ৩ হাজার ৭শ’ ৫১টি শিশু। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছিলো প্রায় ১১৮টি শিশু। গতবারের তুলনায় এবার ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি।

সূত্রটি আরও জানায়, ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২৬২, ফরিদগঞ্জের ১৯০, হাজীগঞ্জের ১১৬, কচুয়ার ১১৭, হাইমচরের ৩৩, মতলব উত্তরের ১০৭, মতলব দক্ষিণের ১০৩, শাহরাস্তির ৯৬, কুমিল্লার দাউদকান্দি ১৩৩, দেবিদ্বার ১৩৫, লাকসাম ১৪৬, মুরাদনগর ১৪৩, লক্ষীপুর সদরের ১৭৯, রায়পুর ৯৫, রামগঞ্জ ৮৩, নোয়াখালীর চাটখিলের ৩৪, কুমিল্লার চান্দিনা ১৩০, হোমনা ৪১ সহ বিভিন্ন উপজেলার শিশু ও বৃদ্ধ এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।গত শুক্রবার আইসিডিডিআরবির মতলব শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ভিড়।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলারদেবিদ্বারা গ্রাম থেকে আসা দুই বছর বয়সী শিশু সার্থিক সাহা মা বলেন, মেয়েটা ঘন ঘন বুমি ও পাতলা পায়খাানা করতে থাকে। স্থানীয় ডাক্তারের চিকিৎসা নেই। ভালো হওয়ার লক্ষণ না দেখে গত বৃহস্পতিবার এ হাসপাতালে ভর্তি করাই।। স্যালাইন ও বেবিজিংক খাইতে দিছে।

আইসিডিডিআরবির মতলব শাখার প্রতিষ্ঠান প্রধান ডা. ফজল খান বলেন, এ হাসপাতালে ৬০ জন ডায়রিয়া রোগীর আসন রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক শিশুর চিকিৎসা করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের এ হাসপাতালের ডায়রিয়া চিকিৎসার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোতে এ চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে জনসাধারণ উপকৃত হবে। এখন পর্যন্ত কোনো শিশু মারা যায়নি। আইসিডিডিআরবির মতলব শাখার জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর দাস বলেন, দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার গ্রহণই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। শীতে শিশুরা ব্যাপক হারে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগ এড়াতে দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার বর্জন করতে হবে। শিশুদের ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে দ্রæত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন