টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে হতদরিদ্রদের অর্ধশত বস্তা চাল গোপনে কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আওলাদ মিয়া উয়ার্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগ রয়েছে তিনি গত সোমবার ভোরে ১০ টাকা কেজি দরের চাল কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি না করে ভাতগ্রাম বাজারের দোকানে বিক্রি করেছেন। এ নিয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র কার্ডধারীদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ২৮ জন ডিলার নিয়োগ দেয়। উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন ওই ইউনিয়নের একজন ডিলার। তিনি ইউনিয়নের ৫৩৯ জন দরিদ্র কার্ডধারীর জন্য নভেম্বর মাসে মির্জাপুর খাদ্যগুদাম থেকে ১৬ হাজার ১৭০ কেজি চাল উত্তোলন করে ভাতগ্রাম বাজারের দোকানে মজুত করেন।
ওই চাল ইউনিয়নের ২, ৪, ৫, ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৫৩৯ জন দরিদ্রের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। চাল বিক্রির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা এলাকার কার্ডধারীদের জানানোর কথা থাকলেও অনেকে তা জানাননি। সে জন্য অনেক কার্ডধারীও সময় মত চাল কিনতে পারেনি। কার্ডধারীরা লোকমুখে চাল বিক্রির বিষয়টি জানতে পেরে ডিলারের দোকানে যান। সেখানে তাদের জানানো হয় চাল বিক্রি শেষ হয়েছে। কার্ডধারীদের অনেকেই চাল না পেয়ে বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু ডিলার আওলাদ হোসেন কার্ডধারীদের কাছে চাল বিক্রি না করে গত সোমবার ফজরের আজানের পর অর্ধশত বস্তা চাল পিকআপযোগে অন্যত্র বিক্রি করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। এ নিয়ে কার্ডধারী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অনেকেই ডিলারের বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বিতরণ করা চাল ওজনে কম দেওয়ারও অভিযোগ করেন।
বন্দ্যে কাওয়ালজানি গ্রামের শহিদুর রহমান, বিভাস মÐল, চন্দনা রানী, বেলু রানী মÐল ও ব্রজবাসী বলেন, গত মাসের চাল বিক্রির বিষয়টি তাদের জানানো হয়নি। এলাকার লোকদের কাছে খবর শুনে চাল কিনতে গেলে তাদের জানায়, চাল বিক্রি শেষ।
ভাতগ্রাম বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক লাবু মিয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ও উয়ার্শী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহŸায়ক মনিরুজ্জামান সুমন জানান, গত সোমবার ভোরে ডিলার আওলাদ হোসেন চালের বস্তা পিকআপযোগে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
উয়ার্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডিলার আওলাদ হোসেন বলেন, নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত কয়েকজন কার্ডধারী চাল নিতে না আসায় চাল অন্য ব্যক্তিদের দিয়ে দেয়া হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন