শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কক্সবাজারে রিকেট রোগের প্রাদুর্ভাব

আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লক্ষাধিক

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দেশের সর্বদক্ষিণ প্রান্তের জেলা পর্যটন শহর কক্সবাজারের ৮ উপজেলায় রিকেট রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানে এ রোগির সংখ্যা দেড় লাখেরও অধিক। জেলার শতকরা ১১ জন শিশু রিকেট রোগে আক্রান্ত। গণসচেতনতা গড়ে না উঠলে স্বল্প সময়ের মাঝে এ রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

জেলার ৮ উপজেলায় রয়েছে সমুদ্র উপকূল। ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াস প্রবণ এলাকা হওয়ায় প্রতি বছরই এ জেলায় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে আঘাত হেনে থাকে। বিশেষত ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় ও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে এ উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়ে অনেকেই জন্মগত ভাবে না হলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। এ প্রতিবন্ধীদের সামাজিকভাবে সুচিকিৎসা প্রদানের জন্য স্থাপিত হয়নি কোন সরকারি হাসপাতাল।

এক জরিপে দেখা গেছে, জেলার শতকরা ১১ জন শিশু রিকেট রোগে আক্রান্ত। এ রোগে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বেশী। বিশেষজ্ঞদের মতে, রিকেট একটি হাড়ের রোগ। এটি বাড়ন্ত শিশু ও ছোট ছেলে-মেয়েদের হয়ে থাকে। অপর্যাপ্ত বা বিলম্বে হাড় গঠনের জন্য এ রোগ দেখা দেয়। এর ফলে শিশুদের নড়াচড়া করতে এবং দাঁড়াতে অসুবিধা হয়। রিকেট রোগ শিশুর ৬ মাস বয়সে কিংবা তার আগেও দেখা দিতে পারে। এ রোগ হলে শিশুদের গায়ের গঠন ধনুক আকৃতির হয়, দুই হাটু এক সাথে লেগে থাকে, পায়ের হাড় তলোয়ার আকৃতির হয়, ২ পা এক সাথে বাকানো, এক পা সামান্য বেঁকে থাকে ইত্যাদি লক্ষণগুলোকে রিকেট রোগ বলে। এছাড়া মেডিকেল বোর্ডের মতে, রিকেট রোগির কপাল সামনের দিকে ঝুকে পড়া, বুকের পাজর উচু, হাতের কজ্বি মোটা, হাত এবং পায়ের গোড়ালী মোটা হয়ে যাওয়া এ রোগের লক্ষণ।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেছেন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি’র অভাবে এ রোগ দেখা দেয়। সাধারণত ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা রিকেট রোগে আক্রান্ত হয় বেশী। বর্তমানে এ রোগে আক্রান্ত রোগিদের মাঝে ২ থেকে ৮ বছর বয়সের রোগিদের ওষুধ ও বিশেষ আকৃতির পা দিয়ে সুস্থ এবং ততোর্ধ্ব রোগিদের অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ করা যায়। রিকেট রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে মায়ের গর্ভকালিন থাকা অবস্থায় মাকে পর্যাপ্ত পরিমানের ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি সৃষ্টি করতে হবে গণসচেতনতা। আর এটা না হলে রিকেট কক্সবাজার জেলায় ব্যাপক আকার ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন