মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ইলিয়াস কাঞ্চন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:০১ পিএম

‘ইলিয়াস কাঞ্চনকে আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই- আপনি যে দেশ-বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা এনজিও এর নামে এনেছেন, তা দিয়ে কয়টা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন? সেখানে কতোজন ড্রাইভারকে ট্রেনিং দিয়েছেন?’- গতকাল রবিবার (৮ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে চালকদের উন্নত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে উদ্দেশ্য করে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এসব কথা বলেন। এ নিয়ে সাবেক এই মন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

তার বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ উল্লেখ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাজাহান খানকে এর প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে।

রবিবার রাতে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ সড়ক চাই’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে শাজাহান খানের মিথ্যাচারে আমরা বিস্মিত, হতবাক এবং তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, শাজাহান খান নিরাপদ সড়ক চাই’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সম্পর্কে জঘন্যতম একটি মিথ্যাচার করেছেন।

‘ইলিয়াস কাঞ্চন কোথা থেকে কতো টাকা পান, কি উদ্দেশ্যে পান, সেখান থেকে কতো টাকা নিজে নেন, পুত্রের নামে নেন, পুত্রবধূর নামে নেন সেই হিসেবটা আমি জনসম্মুখে তুলে ধরবো।’

আমরা ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দিচ্ছি তাকে (শাজাহান খান) এই সময়ের মধ্যে এই তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। নতুবা আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।

আমরা মনে করি সমাজের একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, জাতীয় পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সম্মানিত মানুষের বিরুদ্ধে শাহজাহান খানের এমন মিথ্যাচার শুধুমাত্র নিজের দুর্বলতা ঢাকার জন্যই বলছেন। তিনি এই মানহানীকর কথা বলেছেন জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য। 

একটি কথা না বললেই নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুগপোযুগী সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নে নির্দেশ দিলেন তখন কি করে শাহজাহান খান সরকারে থেকে এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন সেই প্রশ্ন জাতির কাছে রাখছি।

আমরা মনে করি সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮কে বাধাগ্রস্ত করতে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে শাহজাহান অবান্তর এসব প্রশ্নের অবতারণা করছেন। আমরা বিশ্বাস করি এদেশের মানুষ এসবের যোগ্য জবাব দিবে।

সেইসাথে উল্টো প্রশ্ন রাখছি, পরিবহন সেক্টরে বছরে বিভিন্ন খাতের নামে যে টাকা উত্তোলন (চাঁদা আদায়) করা হয় সেই টাকার কত অংশ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে, কয়টা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের দক্ষ করার জন্য, কয়টি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য, কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য, কয়টি আবাসন পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের আবাসনের জন্য, তাদের জীবনমান উন্নয়নে এই টাকার কত অংশ ব্যয় করা হয়?

তিনি (শাজাহান খান) প্রশ্ন করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই কতোজন দক্ষ চালক তৈরি করেছেন? এই প্রশ্নে জাতিকে জানাচ্ছি আমাদের সীমিত ক্ষমতায় চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, বিনা ফিতে দারিদ্র এসএসসি পাস বেকার শ্রেণীকে চালক প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইসেন্স পাইয়ে কর্মক্ষম করার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আমরা মনে করি, আমরা পথ দেখাতে পারি এবং সেই পথেই আছি।

অতীতেও এই শাজাহান খান দেশে নানান ঘটনার জন্মদিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। দেশবাসী সকলের মনে আছে, গত বছর বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার সংবাদ শোনার পরেও এই নৌমন্ত্রীর মুখের হাসি দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। তিনি দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে নিছক ঘটনা ভেবে হেলাফেলায় গুরুত্বহীন বক্তব্য দিতে গিয়ে দেশবাসীর মর্মমূলে আঘাত করেছেন। তার এই হীন কর্মকান্ডের কারণেই আজ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বার বার বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

শাজাহান খান কি কারণে কি উদ্দেশ্যে বারবার এমন লাগামহীন বক্তব্য দিয়ে সমাজে একটি বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করেন তা আমাদের কারোই বোধগম্য নয়।

পূর্বেও এই শাজাহান খান শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের কুশপুত্তলিকায় আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন। এরপর গোটা দেশজুড়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভে সকলে ফেটে পড়লে শাজাহান খান ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। সেইসাথে বলছি এবারও রাস্তায় ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবি পোড়ানো ও অসম্মান করার প্রতিবাদে দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমাদের আস্থার জায়গা এই দেশবাসী।

পরিশেষে আবারও আমরা তার (শাজাহান খান) দেয়া গতকালের বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ দেশবাসীকে দেখানোর আহবান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, তিনি কেন এমন মিথ্যাচার করলেন তার জবাব দেশবাসীর সামনে তাকেই দিতে হবে এবং এমন কাজের জন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে এই মিথ্যা ও জঘন্যতম বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে নিসচা কর্মি ও ভক্তসমাজ।-বিজ্ঞপ্তি

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
monir ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:০৬ পিএম says : 0
উনাকে কেন যে বার বার সরকার শ্রমিক ফেডারেশনের দায়িত্বে রেখেছেন তা বুঝে আসে না। এমন একটা দুর্নীতিবাজ লোক কেন ফেডারেশনে থাকে তা জানিনা।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন