শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

ক্রসফায়ারে ফাহিম হত্যাকান্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন

প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আহমেদ জামিল
বাংলাদেশ এখন মৃত্যু এক উপত্যকা। জীবন যেখানে মৃত্যুর কাছাকাছি। গুম ও খুন যেন প্রতিদিনের ঘটনা। আর সেই সাথে চলছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হরণের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া। অতি সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশী হেফাজতে তথাকথিত ক্রসফায়ারের নামে দুটি হত্যাকা-ের ঘটনা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। গত ১৮ জুন পুলিশের রিমান্ডে থাকা উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর পরীক্ষার্থী ও মেধাবী ছাত্র গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম হাতকড়া পরা অবস্থায় তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মাদারীপুর সরকারি নাজিম উদ্দীন কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যা প্রচেষ্টার সময় জনতার হাতে ধৃত এবং পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ফাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ১৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এরপর চিরাচরিত সেই নাটক সাজানো হয়। অস্ত্র উদ্ধার ও ফাহিমের সঙ্গী সাথীদের খোঁজে পুলিশ ফাহিমকে নিয়ে তল্লাশীতে গেলে ফাহিমের সঙ্গী-সাথীরা পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ করলে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। ফাহিমের আক্রমণকারী তথাকথিত সঙ্গী-সাথীদের কেউ বন্দুকযুদ্ধে নিহত বা আহত না হলেও, পুলিশের হেফাজতে থাকা এবং হাতকড়া পরা অবস্থায় ফাহিম ঠিকই তথাকথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন। ফাহিমকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে হাজির করা হলেও ফাহিমের সঙ্গী-সাথীদের তল্লাশী এবং অস্ত্র উদ্ধারের সময় তার শরীরে বুলেট গ্রুপ জ্যাকেট ছিল না কেন এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফাহিম হত্যার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার আরো একজন ‘জঙ্গি’ এবিটি সদস্য নিহত হয়। পুলিশ দাবি করে নিহত যুবক ব্লগার অভিজিৎ হত্যার আসামী শরিফুল। মিডিয়াও পুলিশের সাথে কোরাস গাইতে থাকে।
কিন্তু মাত্র এক দিনের মাথায় পাওয়া গেল ভিন্ন সংবাদ অর্থাৎ নিহত যুবক শরিফুল নয়, তার আসল নাম মুকুল রানা। তিনি সাতক্ষীরার বাসিন্দা। মুকুল রানা সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ইংরেজি সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। চার মাস আগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার পরিবার-পরিজন তার কোনো হদিস পায়নি। সাতক্ষীরার মুকুলকে পুলিশ ঢাকায় এনে হত্যা করে। মুকুলের আসল পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়লে পুলিশ প্রশাসন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কৌশল নিয়ে জানায় যে মুকুলের চেহারার সাথে শরীফের চেহারার সাদৃশ্য ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্তান ফাহিম এবং সাতক্ষীরার মুকুল হলেন সেই এলাকার সন্তান যেখানে প্রায়ই সরকারবিরোধী শক্তিশালী আন্দোলন হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ সা¤্রাজ্যবাদী ভারতের আগ্রাসনেরও বিরোধী।
উল্লেখ্য, গত সাড়ে পাঁচ মাসে ফাহিম ও মুকুলের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৬৮ জন। এ সংখ্যা হয়তো আরো বাড়তে থাকবে। তবে ফাহিম হত্যার ঘটনা পুলিশ প্রশাসন এবং সেই সাথে সরকারকে নানা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। গুপ্তহত্যার বিষয়ে সরকার ও পুলিশ কি প্রকৃত নায়কদের আড়াল করতে চাচ্ছে? কারণ সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের তরফ হতে এ নিয়ে নানা ভেল্কিবাজি করা হয়েছে। অভিজিৎ হত্যাকা-ের বিষয়টিই ধরা যাক। অভিজিতের হত্যাকারীদের বিষয়ে শুরুতে পুলিশের পক্ষ হতে বলা হয়েছিল, হত্যাকারীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এরপর অনেকদিন নীরব থেকে পুলিশ হঠাৎ বললো, খুনিরা দেশের বাইরে চলে গেছে। তাহলে এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হত্যাকারীদের নজরদারিতে রাখা হলো অথচ গ্রেফতার করা হলো না কেন? পুলিশের নজরদারিতে থাকা অবস্থায় কী করে তারা দেশের বাইরে চলে গেল?
আবার গত ১৬ জুন পুলিশ জানালো অভিজিৎ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ৬ জঙ্গির একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর অভিজিৎ হত্যাকা-ের সাথে জড়িত পুরস্কার ঘোষিত ৬ জঙ্গির আরো একজন শরিফ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আগেই বলা হয়েছে নিহত ব্যক্তি শরিফ নন, মুকুল। পুলিশ কোনো যাচাইবাছাই এবং সঠিক তথ্য বের না করে নিছক চেহারার মিল আছে এ দোহাই দিয়ে মুকুলকে হত্যা করে। এ ঘটনা অবশ্যই সমাজে ভয়ভীতি ছড়াবে। কারণ অভিযুক্ত কোনো সন্ত্রাসী এবং জঙ্গির চেহারার সাথে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তির চেহারার মিল থাকলে তাকেও ক্রসফায়ারে হত্যার শিকার হতে হবে। এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ইন্ধন পুলিশকে আরো স্বেচ্ছাচারী ও বেপরোয়া করে তুলবে এবং এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটাতে থাকবে।
আগেই বলা হয়েছে ফাহিম হত্যার ঘটনা সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে নানা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। কারণ এতদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব গুপ্তহত্যা সংঘটিত হয়েছিল তাতে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না। জনতার হাতে ধৃত এবং পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা এবং গ্রেফতার হওয়া ফাহিমের মাধ্যমে এই প্রথম গুপ্ত হত্যাকা-ের একটি যোগসূত্র পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। জঙ্গিদের কাজের ধরন, মনস্তত্ত্ব, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও প্রণোদনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। যা শেষ হয়ে গেল পুলিশের গুলিতে ফাহিম নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে। প্রকৃত বিরোধী দলগুলোর বিবেকমান সুশীল সমাজের তরফ হতে বলা হচ্ছে, অভিযুক্তদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচারের সম্মুখীন করা হলে তাদের জবানবন্দি থেকে এমন সব তথ্য বেরিয়ে আসতো যা হয়তো ক্ষমতাসীনদের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলতো। প্রকৃত তথ্য-প্রমাণ ও সত্য যাতে প্রকাশ না পায় তার জন্য চিরতরে মুখ বন্ধের কৌশল হিসেবেই এসব হত্যাকা-।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ফেসবুকে যে পোস্ট লিখেছেন তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, “এ আশঙ্কাটিই করে রেখে ছিলাম শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীর ওপর হামলাকারী ফাহিমকে রিমান্ডে নিয়ে বন্দুকযুদ্ধের নামে খুন করা হবে। এখন আর কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং নানা কাহিনী চালিয়ে দেয়া সম্ভব হবে। কেউ ধার না পড়লে যথারীতি অনেক গল্প শুনতাম, কিন্তু গোল বাঁধিয়েছে এই এলাকার মানুষ। পুরোটা না হলেও ফাহিম কিছুটা তথ্য সূত্র হতে পারতো নিশ্চয়ই। যারা ফাহিমের মতো কিশোরদের গুম করে এসব অপারেশনে যেতে বাধ্য করে তাদের পক্ষে এরকম অবস্থায় বসে থাকা চলে না।” তবে ফাহিম হত্যাকা- যেন অনেক সত্যের দিক উন্মোচন করে দিয়ে গেল। মানুষ বুঝে গেছে গুপ্তহত্যার পেছনে মদদদাতা কারা। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের জঙ্গি সম্পৃক্ততা বেরিয়ে পড়ার ভয়ে এ ধরনের ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হবার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবিরোধী বিশেষ পুলিশ অভিযানের নির্দেশ দেন। এর পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশ বেপরোয়াভাবে যাকে তাকে গ্রেফতার করতে থাকে। এতে ১৪ হাজারের বেশি সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের ভাষ্যানুযায়ী গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৯৪ জন জঙ্গি এবং যারা হত্যাকা-ের সাথে জড়িত নয়। অর্থাৎ বাকিরা সরকারবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। জঙ্গি দমনের অজুহাতে সরকারবিরোধী দলের ওপর যে দমননীতি চালানো হচ্ছে তা আবারো প্রমাণিত হলো। দেশে-বিদেশে সরকার প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তার জোট সঙ্গী জামায়াতকে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক ও ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে চলেছে। শুধু বিরোধী দল দমনই নয়, ঈদের আগে পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে জঙ্গিবিরোধী এই বিশেষ অভিযান।
উত্তরাঞ্চলের বগুড়ায় বিশেষ অভিযানকালে পুলিশ ৩৭২ জনকে গ্রেফতার করলেও মাত্র ১৭১ জনকে আদালতে তোলে। অর্থাৎ বাকিদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যানরাইটস-ওয়াচ সবাই এই গণগ্রেফতারের ব্যাপারে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অবশ্য ভারত তার প্রভাবে থাকা এ সরকারকে দমনাভিযানের ব্যাপারে আবারো সমর্থন দিয়েছে। যা হোক, ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লিসা কার্টিস এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান দরকার ছিল। কিন্তু হাজার হাজার বন্দির মধ্যে জঙ্গিমাত্র ১৯৪ জন বলে পুলিশের দেয়া তথ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ উদ্যোগটি হামলা বন্ধের আন্তরিক চেষ্টার চেয়ে বরং রাজনৈতিক বিরোধীদের চাপে রাখার একটা হাতিয়ার বলেই বেশি মনে হচ্ছে। তবে যে গুপ্তহত্যাকারীদের ধরার নামে এই অভিযান কিন্তু এই গুপ্তহত্যার পেছনে দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্ণধার ডা. প্রফেসর জাফর উল্লাহ চৌধুরী ‘বাংলাদেশ এখন ভারত নিয়ন্ত্রিত ভোটের অধিকারবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ বলে মন্তব্য করার কদিন পরই আবার বলেছেন, বাংলাদেশে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। প্রফেসর জাফরের মন্তব্যটি বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ধারণা করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের কাউকে কাউকে হত্যা করে বাংলাদেশে হিন্দুদের রক্ষার নামে ভারতের সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে দখলদারিত্ব আরো পাকাপোক্ত করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যেই ঘটে চলেছে এ ধরনের হত্যাকা-। ভারতের প্রভাব বলয়ে থাকা সরকার এ বিষয়ে রহস্যজহনকভাবে নীরব। যা হোক, ‘র’-এর হয়ে নেপালের মাধোসীদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে একশ্রেণীর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতা এবং হিন্দু সেলিব্রিটি।
তবে এক্ষেত্রে ঢালাওভাবে বাংলাদেশের সকল হিন্দু নাগরিককে অভিযুক্ত করতে চাই না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও বাংলাদেশের নাগরিক। তারাও এদেশকে ভালোবাসেন। তারাও চান সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সাথে শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাস করতে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তি হীন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা বিপন্ন হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। কিছুদিন আগে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জঙ্গিদের ধরা পড়ার সাথে সাথে ক্রসফায়ারে দেবার দাবি করেছিল। মনে হয়, সে মোতাবেক কাজ চলছে। কোনো বিচার নয়। সঠিক যাচাই করে দেখা নয় যে ব্যক্তিটি প্রকৃত জঙ্গি কি না। একমাত্র ক্রসফায়ারই সমাধান। ইনকিলাবের সাংবাদিক মোবায়েদুর রহমানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন তাদের ২০ জন মুসলিম, ৩ জন হিন্দু, ২ জন খ্রিস্টান ও ১ জন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের। সব ধরনের গুপ্তহত্যা নিন্দনীয় স্বীকার করার পরও বলছি, হিন্দু হত্যাকে অনেক বড় করে দেখিয়ে মহলবিশেষ হীন মতলব হাসিল করতে চাইছে।
সম্প্রতি বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানাদাস গুপ্ত হিন্দুদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। জানা যায়, এ অভিযোগ নিয়ে রানাদাস গুপ্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখাও করেছেন। এখন রামকৃষ্ণ মিশনে জঙ্গি হামলার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দু’জনেই ভীষণ উদ্বিগ্ন। এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেছেন, বাংলাদেশ চাইলে সন্ত্রাসবাদ দমনে যে কোনো ধরনের সহযোগিতায় প্রস্তুত ভারত। এদেশের ভারতের আধিপত্যবিরোধী জাতীয়তাবাদী ও ইসলামপন্থী দলগুলোকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে দমনাভিযানের সাথে ভারতের সরাসরি সংশ্লিষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত এটি। তাই পুলিশ হেফাজতে থাকা ফাহিমের হত্যাকা- যেন প্যান্ডরার বাক্স খুলে দিল। জঙ্গি সৃষ্টি, পৃষ্ঠপোষকতা, তরুণদের কাউকে কাউকে বিপথগামী করে সন্ত্রাসী হত্যাকা- এবং হিন্দু হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ফলাও করে প্রচার করে ভারতের চূড়ান্ত দখলদারিত্ব কায়েমের যে হীন ষড়যন্ত্র চলছে দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
লেখক : কলামিস্ট
লধসরষ২০১৩১২@ ষরাব পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন