শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দ্রুতই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চলতি মাসেই বহুল প্রতীক্ষিত ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রায় সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে। তবে দীর্ঘ দিন ধরেও ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। অনেকেই পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুন পাসপোর্ট করার অপেক্ষায় রয়েছেন, কিন্তু ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, জার্মানির কোম্পানি ভেরিদোস জিএমবিএইচ দেশে ই-পাসপোর্ট এর কাজ করছে। ই-পাসপোর্ট চালুর মাধ্যমে অভিবাসন প্রক্রিয়া ত্রুটিমুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার কথা ছিল গত জুলাই মাসে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটি চালু করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই বর্তমানে প্রচলিত মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) বই সংকট দেখা দেয়। ফলে সারাদেশে জরুরি পাসপোর্ট পেতেও বিলম্ব হয়। পরবর্তীতে জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ এমআরপি বই আমদানি করে সেই সঙ্কট সামাল দেওয়া হয়।

বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ই-পাসপোর্ট চালু করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এর কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে।

চলতি মাসেই ই-পাসপোর্ট চালু করা সম্ভব হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। ই-পাসপোর্ট চালু করার জন্য কার্যক্রম চলছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এটি (ই-পাসপোর্ট) চালু করবো বলে মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ মন্তব্য করেন।

সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এ পাসপোর্ট চালুর জন্য জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোজের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে অনেক আগেই। তাদের কারিগরি সহযোগিতায় ই-পাসপোর্ট চালু হতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকার আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও সেনানিবাস এই চারটি অফিস থেকে ই-পাসপোর্টের সুবিধা পাবেন পাসপোর্ট গ্রহীতারা। পর্যায়ক্রমে এটির কার্যক্রম ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক অফিসগুলোতে চালু হবে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশের প্রায় ৭০টি মিশনেও ই-পাসপোর্ট পর্যায়ক্রমে চালু হবে। দুই ক্যাটাগরির ই-পাসপোর্ট চার ধরনের ফি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে জরুরি ও অতি জরুরি। মেয়াদ ৫ ও ১০ বছর।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ই-পাসপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়। জার্মানির সরকারি ভেরিডোজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বহিগর্মন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, জার্মান কোম্পানি ৩০ লাখ ই-পাসপোর্ট বই সরবরাহ করবে।

বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, ই-পাসপোর্টের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়ন করতে হবে না। এমনকি ছবি সংযোজন তা সত্যায়ন করারও দরকার হবে না। তবে পাসপোর্ট পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি লাগবে।

ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি
ই-পাসপোর্টের পৃষ্ঠাসংখ্যা, মেয়াদকাল, বিতরণের ধরন অনুসারে ভ্যাট ছাড়া সর্বনিন্ম ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে পাসপোর্টের জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৩ হাজার ৪৫০ টাকা এবং অতি জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৬ হাজার ৯০০ টাকা। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ ও ১০ বছর। পাসপোর্টের পৃষ্ঠাসংখ্যাও হবে দুই ধরনের, ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠা। নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট বিতরণের পদ্ধতি তিন ধরনের। সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরি। দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে এবং অন্যান্য তথ্য সঠিক থাকলে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে। জরুরিভাবে পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে এবং অন্যান্য তথ্য ঠিক থাকলে সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। অতি জরুরি পাসপোর্ট ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট দুই দিনে, জরুরি পাসপোর্ট তিন দিনে এবং সাধারণ পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫ হাজার টাকা, জরুরি ফি ৭ হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার ৫বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৭ হাজার টাকা, জরুরি ফি ৯ হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার টাকা।

ই-পাসপোর্ট করতে যা লাগবে
ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী। অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তার মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
আলমগীর হোসেন ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৬ এএম says : 0
অন্য জেলার লোক কি করতে পারবে উক্ত শাখায় পাসপোর্ট
Total Reply(0)
Nazmul Sobuj ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৬ এএম says : 0
ভুল সংসোদন করা যাবে
Total Reply(0)
Sazal Kanti Ray ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৬ এএম says : 0
২মাসেও পাইলাম না
Total Reply(0)
Md Mohin Md Mohin ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৭ এএম says : 0
ই পাসপোর্ট দিলে কি হবে ডিজিটাল পাসপোর্ট গুলো মাঝে নিজের নাম ও ঠিক মত বুঝাযায় না আর গ্রামের নাম তো বাদ দিলাম জেলাটা ও ঠিক মত বুঝাযায় না কেনো আমি যে বাংলাদেশি তা ও পাসপোর্টে বুঝাযায় না কিযে সমস্যায় আছি
Total Reply(0)
Safikul Islam Selim ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৭ এএম says : 0
নির্ধারিত সময়ে পাওয়া যাবেতো?! নাকি দালালি বা স্পীডমানি না দিলে হয়রানি করা হবে?!
Total Reply(0)
Mohammad Piyas Hossain ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৭ এএম says : 0
যুদ্ধের পর থেকে শুনতেছি, বাস্তবায়ন হতে আরও কত বছর লাগবে বলা যাচ্ছে না।
Total Reply(0)
Walid Dewan ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৮ এএম says : 0
জাতীয় পরিচয় পত্র ই পেলাম না এখোনো ! আর জাতীয় পরিচয় পত্র যদি থাকে তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কেন লাগবে ?
Total Reply(0)
Nazmulhaque Sapon Amin ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৮ এএম says : 0
অতিরিক্ত বিলাসীতা ছাড়া আর কিছুই না।মিনিমাম লজ্জাতো থাকা প্রয়োজন।যে দেশে পেয়াজ আমদানি করতে হয় অন্য দেশ থেকে।সেই দেশে আবার ই পাসপোর্ট।।
Total Reply(0)
Shekh Shadi ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৯ এএম says : 0
ই পাসপোর্ট এর নিয়ম কে করেছে? সরকার করেছে তাইলে ফি জনগন থেকে নিবে কেনো। একবার নরমাল পাসপোর্ট এরপর করলো ডিজিটাল পাসপোর্ট এখন আবার ই পাসপোর্ট। এই গুলা যে আমাদের জন্যে অনেক পেরেশানির তা কি সরকার বুঝতে পারে নাকি কিছু দিন পরপর এরটা নিয়ম করবে আর টাকা হাতিয়ে নিবে। আমরা কি সরকারের কাছে গিয়ে বলেছি ই পাসপোর্ট করেন। আমরা চলাচল করতে পারলেই হল।
Total Reply(1)
sohel ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:৫৩ পিএম says : 4
মূর্খের মতো কথা না বলে ই পাসপোর্ট এর সুবিধা কি জানুন। সারাদুনিয়া ই-পাসপোর্ট আছে। "টাকা হাতিয়ে নিবে" নিবে মানে কি ? যাদের আগের পাসপোর্ট আছে সেটার মেয়াদ থাকলে ই পাসপোর্ট লাগবেনা। যারা নতুন করে করবে তারাই ই পাসপোর্ট করবে।

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন