‘শুধু ঢাকার নয়, সমগ্র দেশের নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে। নদীগুলোর মর্মান্তিক অবস্থা দেখলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। নদীগুলোকে রক্ষা করা দরকার। যদি নদীগুলোকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে বাংলাদেশকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। আপনাদের সঙ্গে নিয়ে নদীরক্ষায় যুদ্ধ করতে চাই। এজন্য সামগ্রিক ঐক্য দরকার। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নদী উদ্ধারে জোর দিয়েছেন। সরকার জনগণের সেবক। বঙ্গবন্ধু কন্যার রক্তের মধ্যে সেবা কথাটি লেখা রয়েছে।’-নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদী তীর রক্ষা, দখল ও দূষণরোধে অপসারণ কার্যক্রমের সময় আমরা ধর্মীয় পবিত্র জায়গাগুলোতে হাত দিতে পারতাম, কিন্তু করিনি। সরকার সারাদেশে ৫০০ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা যায়। ভবিষ্যতে মসজিদগুলো অ্যাডজাস্ট করা হবে। মসজিদগুলো আলোকিত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হবে। সুন্দর স্থাপত্য ডিজাইন থাকবে। মসজিদ দেখে মন ভরে যাবে। সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার, সরকারও সহায়তা করবে।
আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর ফোরশের/তীরভূমিতে অননুমোতিভাবে গড়ে ওঠা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, পরিবেশ দূষণমুক্ত করে নদীগুলোকে সুন্দর করতে চাই। আগামী ১০-১২ বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গার পানিকে স্বচ্ছ করতে চাই। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা অপসারণে সহযোগিতার জন্য মিডিয়ার বন্ধুদের প্রতিমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।
এ সময় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানান্তরের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিবসহ মুফতি, মাওলানা সাহেবদের সঙ্গে এসব বিষয়ে এর আগে বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছেন কোথায় মসজিদ নির্মাণ করা যাবে, আর কোথায় করা যাবে না। মুফতি মাওলানা সাহেবদের পরামর্শ নেওয়া হবে।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর ফোরশের/তীরভূমিতে (বৃত্তাকার নৌপথ অংশে) অননুমোতিভাবে ১১৩টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে ৭৭টি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার; পাঁচটি কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা; একটি ঈদগাহ; ১৪টি স্কুল ও কলেজ; ১৩টি স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট এবং তিনটি অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন সচিব মো. আবদুস সামাদ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ আবদুর রাজ্জাক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এতে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম, নৌপুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, আতাউল্লাহ হাফেজ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন