মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বিদায় কাঠমান্ডু, দেখা হবে ইসলামাবাদে

জাহেদ খোকন, নেপাল থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:০৬ পিএম

দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ১৩তম আসরের বর্ণিল উদ্বোধন হয়েছিল গত ১ ডিসেম্বর। এদিন আতশবাজির আলোকচ্ছটায় কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম হয়ে উঠেছিল স্বপ্নীল। গেমসকে উপলক্ষ্য করে সাত দেশের ক্রীড়াবিদ, কোচ, কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের পদচারণায় দশদিন নেপালের দুই শহর কাঠমান্ডু ও পোখরা ছিল মুখরিত। এবার বিদায় নেবার পালা। বর্ণিল আয়োজনে নেপাল এসএ গেমসের পর্দা উঠলেও রাগিনীর সুরে কিন্তু তা নামেনি। শুরুর মতো এবারের এসএ গেমসের শেষটাও ছিল আলো ঝলমলে। যেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চমক ছিল লেজার শোর মাধ্যমে ডিসিপ্লিনগুলো ফুটিয়ে তোলা। সেখানে আর ১০দিনের গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষত্ব থাকলো ড্রোন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামের আকাশে ১৫০টি ড্রোন উড়িয়ে বিদায় যাত্রাকে বর্ণিল করার চেষ্টা করে নেপাল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। ড্রোন ওড়ানোর মধ্যদিয়েই শুরু হয় নেপাল এসএ গেমসের সমাপণী অনুষ্ঠান। ভাঙ্গলো মিলন মেলা। বিদায় কাঠমান্ডু, দেখা হবে পাকিস্তানের ইসলমাবাদে।

এবারের এসএ গেমসে সাত দেশের দু’হাজার সাতশ’ ১৫ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নিয়েছিলেন। যারা ২৬টি ডিসিপ্লিনের (পরে প্যারাগ্লাইডিং বাদ পড়ে) ৩০৮টি ইভেন্টে খেলেছেন। গেমসের প্রায় সব ডিসিপ্লিনের ফাইনাল আগে শেষ হলেও ফুটবলের চুড়ান্ত খেলা ছিল মঙ্গলবার। নেপালীরা ফুটবল পাগল জাতি। গেমসের ফাইনালে উঠায় টিকিটের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। টিকিটের দাম বাড়ানো নিয়ে প্রতিবাদ করছিলেন সমর্থকরা। সাংবাদিকরা সেটা কাভার করছিলেন। ফলে পুলিশী হামলার শিকার হন কয়েকজন নেপালী সাংবাদিক। এর প্রতিবাদে নেপালের সব সাংবাদিক গেমস কাভার বর্জনের হুমকি দিলে পুলিশ ক্ষমা চেয়ে পাড় পায়। পরে অবশ্য সব ঠিক হয়ে যায়। স্বাগতিক নেপাল ফুটবলের ফাইনালে খেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানের চেয়ে সবার আগ্রহ বেশি ছিল ফুটবল ম্যাচের দিকেই। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সমাপনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মতো খুব বেশি সাংস্কৃতিক কারুকার্য ছিল না সমাপণীতে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রিরা নেপালী সাংস্কৃতিক প্রদর্শন করেন কিছুক্ষণ। মাঝে মধ্যে চলেছে গেমসের আনুষ্ঠানিকতাও। নিভিয়ে দেয়া হয় ১০ দিন আগের জ্বালানো মশাল। এরপরই শুরু হয় মার্চপাস্ট। সমাপণীতেও সাত দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রীড়াবিদ ও কর্মকর্তারা মার্চপাস্টে অংশ নেন। মার্চপাস্ট শেষে এসএ গেমসের পরের আসরের আয়োজক পাকিস্তানের হাতে পতাকা হস্তান্তর করে নেপাল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েন। এসময় নেপাল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জীবন রাম শ্রেষ্ঠা গেমসের পতাকা তুলে দেন পরবর্তী আসরের আয়োজক পাকিস্তান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লে. জেনারেল সৈয়দ আরিফ হাসানের হাতে। তবে ঘোষনা দিলেও শংকা রয়েছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে গেমস আয়োজন নিয়ে। কাঠমান্ডুতে আসা বিভিন্ন দেশের মিডিয়া কর্মীদের মতে, রাজনৈতিকভাবে দুই চির বৈরী দেশের উত্তেজনার পারদ যদি বাড়ে- ইসলামাবাদে খেলতে যেতে নাও পারে ভারত। যদি তাই ঘটে, তাহলে এসএ গেমসের পরবর্তী আসরের যৌথ আয়োজক হতে পারে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ।

সমাপনী অনুষ্ঠানেও নেপাল অলিম্পিক অ্যসোসিয়েশনের সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় সমাপানী অনুষ্ঠানে না আসলেও তার বক্তব্য ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নেপালের ক্রীড়ামন্ত্রী ও অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাবৃন্দ। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চোখ জুড়ানো আতশবাজির মধ্য দিয়ে শেষ হয় নেপাল এসএ গেমসে সমাপণী অনুষ্ঠান।

এসএ গেমসের এবারের আসরে ভারত দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েও পদক তালিকায় শীর্ষে। নেপাল প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় স্থানে। বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংখ্যক পদক জিতেও পঞ্চমস্থানে। তবে পদক সংখ্যায় বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে বেশি থাকলেও স্বর্ণ কম হওয়ায় টেবিলের পঞ্চমস্থানে অবস্থান করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন