শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লড়াইটা বর্তমান ও সাবেক চ্যাম্পিয়নের

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপির্এল) সবশেষ ষষ্ঠ আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। ঠিক এর আগের (পঞ্চম) আসরের শিরোপাধারী দল রংপুর রেঞ্জার্স। সপ্তম আসরটি সাজানো হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকি পালনকে কেন্দ্র করে। বিজয়ের মাসে জাঁকজমক আয়োজনের মাধ্যমে করা হয়েছিল এবারের আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার হাতেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল। তাই এই আসরের নামকরনও করা হয জাতিরজনকের নামেই। এবারের আসরটি পরিচিতি পাচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’ নামে।
বিশেষ এই বিপিএলে পুরো তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিজ হাতেই রেখেছে। এবারের আসরে সাত দলের শিরোপার লড়াইয়ে প্রতিটি দলই পরিচালনা করছে বিসিবি। তবে কুমিল্লা ও রংপুর দল দুটো সরাসরি থাকছে বিসিবির নিয়ন্ত্রনেই। উদ্বোধনী দিনেই মুখোমুখি লড়াই করতে দেখা যাবে এই দুই দলকে। ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো এই আসরে এ দুই দলের লড়াইকে বিসিবির দুই দলের লড়াই আখ্যা দিলেও অতুক্তি হবে না।
হেড টু হেড
বাংলাদেশের সবচেয়ে জমজমাট এই আসরে এখন পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি লড়াইয়ে মেতেছে দল দুটি। জয়ের পাল্লাটা ভারী কুমিল্লার। তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই রংপুরও। কুমিল্লার ছয় জয়ের বিপরীতে রংপুরের জয় পাঁচ ম্যাচে। মোট এগারো ম্যাচের মধ্যে দশটির ভেন্যুই ছিল মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। সেখানে কুমিল্লার জয় ৬টিতে। রংপুরের ৪টিতে। আরেকটি ম্যাচ হয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে। সেখানে কাঙ্খিত জয় তুলে নিয়েছে রংপুর।
দু’দলেই বিদেশী অধিনায়ক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরে তারুণ্যনির্ভর দল গড়েছে রংপুর রেঞ্জার্স। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, নাঈম শেখ, জাকির হাসান, সঞ্জিত সাহার মতো তরুণ ক্রিকেটার আছেন দলটিতে। অভিজ্ঞদের মধ্যে আছেন আরাফাত সানি, জহুরুল ইসলাম, নাদিফ চৌধুরী, ফজলে রাব্বিরা। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে শাই হোপ, মোহাম্মদ শেহজাদ, জুনায়েদ খান, লুইস গ্রেগোরি, ক্যামেরন ডেলপোর্ট থাকছেন। তবে সবাইকে ছাপিয়ে দলের নেতৃত্বভার পড়ছে আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীর কাঁধে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডবের পরবর্তী সময়ে শাসন করবে যে সব ক্রিকেটার, তাদের মধ্যে অন্যতম ধরা হয় সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানদের। এই দুই মারকুটে ব্যাটসম্যানই রয়েছেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স দলে। দলটির পরিচালনা এবং তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক এবং বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। নাঈমুর রহমান দুর্জয় টিম ডিরেক্টর এবং মিনহাজুল আবেদিন নান্নু হচ্ছেন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর। দলটির টিম ম্যানেজমেন্ট অধিনায়ক নির্বাচন করতে গিয়েই খানিকটা দ্বিধা-দ্বন্দে পড়ে গেলেন। সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার ছাড়া এই দলে নেতৃত্ব দেয়ার মত আর কোনো ক্রিকেটার নেই। বিদেশীদের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য কোনো ক্রিকেটার নেই কুমিল্লা দলে। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার দাসুন সানাকার হাতেই উঠল আর্মব্যান্ড।
সেরাটা দেয়ার প্রতিশ্রুতি
লড়াইয়ে নামার আগে দু’দলই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে নিজেদের সেরাটা দেয়ার। প্রথম ম্যাচের আগে অনুশীলনে বড় সময় কাটিয়েছেন উভয় শিবিরের সব বড় নামই। রংপুরের অধিনায়ক নবীর কন্ঠে শোনা গেল বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের বন্দনা, ‘মেধাবি বাংলাদেশি ও বিদেশি প্লেয়ারদের সমন্বয়ে রংপুর দলটি বেশ ভাল।’ সেই সঙ্গে দলের সবাইকে নিয়ে একটি উইনিং কম্বিনেশন খুঁজে বের করার দিকে নজর এই আফগান দলপতির, ‘একটি উইনিং কম্বিনেশন তৈরীতে আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করব। মেধাবি বাংলাদেশি ও বিদেশিদের নিয়ে আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল করেছি। লিগে ভাল ফলাফলের জন্য আমরা আমাদের সেরাটাই দেব।’
কুমিল্লা দলের প্রতিনিধি হিসেবে পাওয়া গেল দেশীয় পেসার আল আমিন হোসেনকে। তিনি বেশি কথা বললেন না। শুধু জানিয়ে গেলেন ভালো করতে চায় তার দল, ‘অবশ্যই ভালো করতে চাই।’ কথা কম বলে কি কাজে বেশি মনযোগ দিচ্ছে তার দল? আজ মাঠেই অবশ্য তার প্রমান মিলবে।
ও’ডোনেলের অদ্ভুত অভিজ্ঞতা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই এখন মাঠের খেলার দিকে চোখ সবার। এ দিকে, মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হলেন রংপুর রেঞ্জার্সের কোচ মার্ক ও’ডোনেল। মাঠের এক পাশে অনুশীলন করছে খুলনা টাইগার্স, আরেক পাশে চট্টগ্রাম। এ ছাড়া মাঝ মাঠে অনুশীলন করছে আবার রাজশাহী রয়্যালস। এর পর সেই মাঠে অনুশীলন করতে নামে রংপুর রেঞ্জার্স। এভাবে অদলবদল করে আরও দু’দল প্র্যাকটিস করে। একই মাঠে ছয় দলের ক্রিকেটারদের অনুশীলন দেখে রীতিমতো বিস্মিত রংপুর কোচ, ‘এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখেননি।’
ও’ডোনেল আরো বলেন, ‘এখানে ছয় দল অনুশীলন করছে। কিছু দর্শকও আছেন। এমন অবস্থায় যে কেউ আঘাত পেতে পারেন। এ ভেবে আমি চিন্তিত। এ রকম মাঠ আমি আগে কখনো দেখিনি। যেখানে স্বল্প সময়ের মধ্যে একসঙ্গে ছয় দল অনুশীলন করে।’
যাদের উপর নজর
কুমিল্লার তারকাখচিত দলে পেস বোলিংয়ে আল আমিন, আবু হায়দার ও বানুকা রাজাপাকসে দলের মূল শক্তি। স্পিন বোলিংয়ে আছে মুজিবের মতো তারকা। ব্যাটহাতে কুশল পেরেরা, সাব্বির, সৌম্য, মালানেই ভরসা দলটির। অন্যদিকে তাসকিন, মুস্তাফিজও জুনায়েদের সমন্বয়ে গঠিত রংপুরের পেস আক্রমণ অনেক শক্তিশালী। স্পিনারদের মদ্যে আছেন অধিনায়ক নবী ও সানির মতো তারকা। ব্যাটিংয়ে অ্যাবেল, শেহজাদ, জহুরুল ও গ্রেগরির সমন্বয়ে গঠিত দলটি যেকোন দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।

সম্ভাব্য একাদশ
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : আবু হায়দার, আল আমিন হোসেন, ফারদিন হাসান, ইরফান হোসেন, মাহিদুল ইসলাম আকন, ডেভিড মালান, মুজিব-উর-রহমান, কুশল পেরেরা, বানুকা রাজাপাকসে, সাব্বির রহমান, দাসুন সানাকা, সৌম্য সরকার, সুমন খান, সানজামুল ইসলাম, ইয়াসির আলি।
রংপুর রেঞ্জার্স : টম অ্যাবেল, আরাফাত সানি, ক্যামেরুন ডেলপোত, ফজলে মাহমুদ, লুইস গ্রেগরি, জহুরুল ইসলাম, জুনায়েদ খান, মোহাম্মদ নবী, মোহাম্মদ নাঈম, মোহাম্মদ শেহজাদ, মুস্তাফিজুর রহমান, নাদিফ চৌধুরি, রিশাদ হোসেন, সঞ্জিত সাহা, তাসকিন আহমেদ, জাকির হোসেন, শাহ হোপ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন