বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রক্তপাত হলেও গণহত্যার মতো কিছুই হয়নি : অং সান সু চি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:১৫ পিএম

নেদারল্যান্ডের হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। গণহত্যার অভিযোগে শুনানির প্রথম দিনে যখন রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সামরিক বাহিনীর একের পর এক নৃশংসতার ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছিল তখন সেখানে পাথরের মতো মুখ করে বসে ছিলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি। আর আজ আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে’তে মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর সু চি।

এসময় অং সান সু চি বলেন, দুঃখজনকভাবে, গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিমূলক চিত্র তুলে ধরেছে। তিনি জানান, গণহত্যার উদ্দেশে অভিযান পরিচালনার অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। কিন্তু রাখাইনে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানে রক্তপাত হলেও গণহত্যার মতো কিছু হয়নি।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি বলেন, রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন কোনোভাবেই মেনে নেবে না আমাদের সরকার। যখন দেশের বিচার ব্যবস্থা ব্যর্থ হবে, শুধু তখনই আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এর বিচার করতে পারবে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি জটিল এবং রোহিঙ্গারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন সু চি। কিন্তু ২০১৭ সালের সেই রক্তাক্ত অভিযানের কথা বলতে গিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে সু চি বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (এআরএসএ) মতো সশস্ত্র স্থানীয় গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছিল তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।

গণহত্যার অভিপ্রায় শুধুমাত্র অনুমান নির্ভর হতে পারে না জানিয়ে সু চি বলেন, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন গণহত্যার উদ্দেশ্য কী হতে পারে; যা অন্যায় কাজ করার দায়ে অভিযুক্ত সৈনিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে তদন্ত, বিচার ও শাস্তি দেয়? যদিও এখানে সবার মনযোগ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর তারপরও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসারণ করে বেসামরিক অপরাধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও এজেন্ট অং সান সু চি বলেন, রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুতদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মিয়ানমার। এ ছাড়াও সংঘাতকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ না নিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানান সু চি।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার আইনজীবীরা গতকাল গণহত্যার বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। গাম্বিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করতে রাষ্ট্রীয় মদদে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা বলেন, গণহত্যা এখনও চলছে এবং তা বন্ধ করতে অন্তবর্তী আদেশ জরুরি। তিনদিন ধরে এ শুনানি চলবে। এরপর ১৫ জন বিচারপতি অন্তবর্তী আদেশ দিতে পারেন।

গাম্বিয়া গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করে। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি'র পক্ষ থেকে গাম্বিয়া এ মামলা করে। গতকাল থেকে ওই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এবারই প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গেছে আফ্রিকার ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গাম্বিয়া। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack ali ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:৫১ পিএম says : 0
Such a lier and murder of Muslim.....May Allah's[SWT] curse upon them-- Ameen
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন