শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এনআরসির প্রতিবাদে মুসলমান হতে চাইছেন ভারতের সিভিল কর্মকর্তারা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৬:০৪ পিএম

হর্ষ মন্দার (বামে), শশীকান্ত সেন্থিল (ডানে)


সাবেক আইএএস (ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ সার্ভিস) কর্মকর্তা ও মানবাধিকারকর্মী হর্ষ মন্দার মঙ্গলবার বলেছেন, সংসদ যদি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করে তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে মুসলমান হিসাবে ঘোষণা করবেন। এনআরসির প্রতিবাদে সম্প্রতি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন আরেক আইএএস কর্মকর্তা ও কর্ণাটকের দক্ষিণা কান্নাডা জেলার ডেপুটি কমিশনার শশীকান্ত সেন্থিল। তিনি সত্যাগ্রহের ডাক দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব হারিয়ে তিনি ডিটেনশন সেন্টারে যেতে রাজি আছেন।

প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিউট অফ পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি-র অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তী। বুধবার টুইটারে নিজেকে ‘মুসলিম’ ঘোষণা করে লেখার যুক্তি, ‘আমি মুসলিম। ভারতেই আমার জন্ম। আমি সুরা ফাতিহা জানি। গায়ত্রীমন্ত্রও জানি। কারণ আমার জন্ম ভারতে।’ হর্ষ মন্দার ও শশীকান্ত সেন্থিল দু’জনেই নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধনে (এনআরসি) কাগজ জমা না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। হর্ষ মন্দার টুইট বার্তায় বলেন, ‘অবশেষে মুসলমানদের সাথে আমার নাগরিকত্বও প্রত্যাহার করে কোনও ডিটেনশন সেন্টারে আটক করে রাখার দাবি জানাচ্ছি।’ এনআরসি’র প্রতিবাদ করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। সেন্থিলের মতোই কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পরে আইএএস অফিসার হিসেবে পদত্যাগ করেছিলেন কান্নন গোপীনাথন। মোদি সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুসলমানদের উদ্দেশে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘বিলটা অমানবিক, অসাংবিধানিক। সরকারি নীতিতে আক্রান্ত হলে মুসলিমদের প্রতিবাদ করার সমস্ত অধিকার রয়েছে।’

কেউ ডাক দিচ্ছেন সত্যাগ্রহের। কেউ ‘আইন অমান্য আন্দোলন’-এর। টুইটারে ‘সিএবি-এনআরসি সত্যাগ্রহ’, ‘নো টু সিএবি-এআরসি’ হ্যাশট্যাগের ছড়াছড়ি। এত দিন রাজনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ হচ্ছিল। দেশের ৬২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকও বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পর বুধবার রাজ্যসভায় বিল আসার আগে থেকেই ভিন্ন ধরণের নাগরিক প্রতিবাদ শুরু হল।

যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, বিলের সঙ্গে দেশের মুসলিমদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ফলে মুসলমানরাই হেনস্থার শিকার হবেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গুজরাত দাঙ্গার পরে চাকরি ছেড়ে দেয়া মন্দার বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে আইন অমান্য করতে মুসলিম হিসেবে নাম নথিভুক্ত করাব। তার পরে এনআরসি-তে নথি জমা দিতে অস্বীকার করব। নথির অভাবে নাগরিকত্ব চলে যাওয়া মুসলিমদের যে শাস্তি হবে, ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে, আমাকে সেই শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি তুলব।’

জেএনইউয়ের ছাত্রনেতা উমর খালিদও জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলে, দেশে এনআরসি হলেও কাগজ জমা দেবেন না। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতের উপরে নীতিগত আঘাত। কিন্তু এনআরসি রোজকার জীবনে বিপজ্জনক।’ সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য নিউজ মিনিট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
JAMAL SK ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১০:১৬ পিএম says : 0
একমত
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন