বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

ইসলামের দৃষ্টিতে মানবাধিকার

বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ (United Nations Organization Called U.N.O) নামক আন্তর্জাতিক সংস্থার আত্মপ্রকাশ হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী শক্তিবর্গ: যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন ও ফ্রান্স জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা। ১৯৪৫ সালের জন্মলগ্নে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ছিল ৫১, বর্তমানে দুনিয়ার প্রায় সব স্বাধীন রাষ্ট্র এর সদস্য। সদস্য সংখ্যা ১৯৩। ১৯৭৪ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬ নং সদস্যপদ লাভ করে। ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম এশীয় নেতা হিসেবে জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ প্রদান করে এক ইতিহাস রচনা করেন।

১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর The Universal Declaration of Human Rights was adopted by the UN General Assembly- সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ গৃহীত হয়। এবার আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান পালন করেছি। ১৯৪৮ সালে আমেরিকার মেয়েরা সম্পত্তি ভোগের অধিকার পায়, অথচ ১৫০০ বছর আগে আল কোরআনের ৩নং সূরা নিসায় বিশেষ করে মহিলাদের নামে সূরা নাজিল হয় এবং মহিলাদের সম্পত্তি ভোগের অধিকার ও অংশ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়।

The Constitution of the People’s Republic of Bangladesh provides for fundamental rights in Part III Article 26 to Article 47A.


মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলামিক বিধান: সূরা আম্বিয়া আয়াত ১০৭: ‘ওয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আল’আমিন’ অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা রাসুল (সা.) কে বলেন, ‘আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের প্রতি কেবল রহমত/ আশির্বাদ রূপে প্রেরণ করেছি।’ তাফসিরে বর্ণিত-রাসুল (সা.) কে আল্লাহ কেবল মুসলিমদের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ প্রেরণ করেন নাই, অমুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ সমগ্র মানবজাতির জন্য, জ্বীন জাতি, পশু-পাখি, জীব-জন্তু, গাছ-পালা, নদী-নালা, পাহার-পর্বত সকল সৃষ্ট বস্তুর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। বোখারি শরীফে বলা হয়েছে, ‘খায়রুন্নাছে মানয়েনফাউন্নাসে’ অর্থ: যে মানুষের কল্যাণ করে, সেবা করে সেই সর্বোত্তম ব্যক্তি। এখানে মুসলিম মোত্তাকি বলা হয়নি, মানুষ বলা হয়েছে, মুসলিম, অমুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সব মানুষের সেবার কথা বলা হয়েছে।

মহানবী (সা.) আরবের মদিনায় দুনিয়ার সর্বপ্রথম কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করেন এবং সব ধর্মের মানুষের সম অধিকার স্বীকৃত হয় এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে মানবাধিকার: ইসলামের দৃষ্টিতে মানবাধিকার অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ বিষয়। পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, এতিম, বিধবা, চাকর-চাকরানী, মুসলিম-অমুসলিম সকল মানুষের অধিকার ইসলামে স্পষ্টভাবে বলে দেয়া আছে। এই সকলের নির্ধারিত অধিকার প্রদান করাকে ইসলাম অবশ্য কর্তব্য বলে ঘোষণা করেছে। ইসলাম বলে, মানুষের অধিকার হরণ বা নষ্ট করা হলে নিজের নেক আমল বরবাদ হয়ে যায়। যতক্ষণ সে ক্ষমা না করে দেবে, ততক্ষণ অপরের অধিকার নষ্ট করার অপরাধের ক্ষমা পাওয়া যাবে না।

ইসলাম ঘোষণা করে, গোটা মানব জাতি এক আল্লাহ্র সৃষ্টি। এক পিতামাতার সন্তান। একই বংশের ধারার উত্তরাধিকারী। ইসলাম বলে, সকল মানুষের জীবন, সম্পদ এবং ইজ্জত-আব্রু সমান। ন্যায় ও ইনসাফে সমান অধিকারী। ইসলামের শিক্ষা হলো, সব মানুষের সেবা করা উচিত। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ্র দেয়া জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না, তারা তাঁর অনুগ্রহসমূহের সঠিক ব্যবহারও জানে না। ফলে তাদের ইহকাল ও পরকাল দু’টোই শাস্তি রূপ পরিগ্রহ করে।

দ্বীন সম্পর্ক সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে গভীর এবং সবচেয়ে মজবুত সম্পর্ক। এ সম্পর্ক জানের দুশমনকেও প্রাণের বন্ধু ও প্রিয়তম ভাই বানিয়ে দেয়। কোরআন ঘোষণা করেছে, ‘তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর। তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু। অতপরঃ তিনি তোমাদের মন জুড়ে দিয়েছেন আর তারই অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে’ (সূরা আল ইমরান: ১০৩)।

ইসলাম উন্নত নৈতিক চরিত্রের শিক্ষা দেয়। সৎ চরিত্রের জন্য অসীম পুরস্কারের ঘোষণা দেয়। অসৎ নৈতিক চরিত্রের জন্য ইহ ও পরকালীন অশুভ পরিণতির দুঃসংবাদের ঘোষণা দেয়। নৈতিক আদর্শকে রাজনীতি, অর্থনীতিসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিচালিকা শক্তি বলে ঘোষণা দেয়। জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগকে উন্নত নৈতিক চরিত্রের রঙ্গে রঙ্গীন করাবার ব্যবস্থা করে। নৈতিক মূল্যবোধ নিজ সত্তা, আত্মীয়-স্বজন, জাতি ও দেশসহ সকল কিছুর ঊর্ধ্বে বলে ঘোষণা করে। সর্বোপরি, সুকৃতির বিস্তার ও দুষ্কৃতির বিনাশকেই সে মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বলে ঘোষণা করে, ‘এর হলো যে সব লোক, যাদেরকে আমরা পৃথিবীতে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে, সুকৃতির নির্দেশ দেবে এবং দুষ্কৃতি থেকে নিষেধ করবে’ (আল হজ্জ : ৪১)।

পারস্পারিক অধিকার প্রযোজ্য হবার এবং প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে মুসলমান হবার শর্ত নেই। প্রতিটি মানুষ, মানুষ হিসেবে সুবিচার, দয়া এবং উত্তম ব্যবহার লাভের অধিকারী। প্রত্যেক অসহায় দরিদ্র ব্যক্তি অসহায় দরিদ্র হিসেবে আমাদের সহানুভূতি লাভের অধিকারী। প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের উপর আমাদের প্রত্যেক প্রতিবেশীর অধিকার বর্তায়। আমাদের উপর প্রত্যেক আত্মীয়ের অধিকার বর্তায়, চাই সে মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম। কোরআন বলেছে, ‘যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমার সাথে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের তোমাদের বাড়ি থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের সাথে কল্যাণকর ও সুবিচারপূর্ণ ব্যবহার করতে আল্লাহ্ তোমাদের নিষেধ করনে না। অবশ্যই আল্লাহ্ সুবিচারকদের পছন্দ করেন। যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের নিষেধ করেছেন। এই লোকদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তার যালিম’ (সূরা আল মুমতাহিনাঃ আয়াত : ৮-৯)।

আল্লাহ্ তা’য়ালা যুলুম এবং বাড়াবাড়ি পছন্দ করেন না, তা কোনো মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম। একথাও বুঝা গেল যে, অমুসলিম যদি মুসলিমের উপর বাড়াবাড়ি করে তবে সমপরিমাণের প্রতিশোধ নেবার পরিবর্তে ক্ষমা করে দেয়া উত্তম। এই কথাটি বিভিন্ন সূরায় বলা হয়েছে। সূরা শুরা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর মক্কী জীবন ছিল দা’ওয়াতী অধ্যায়, তাই উক্ত আয়াতগুলোতে যে হেদায়াত দেয়া হয়েছে সেটাকে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াতী অধ্যায়ের হেদায়াত বলা যেতে পারে। মদিনায় গিয়ে ক্ষমা লাভের পর কাফির-মুশরিকদের যুদ্ধের মোকাবেলায় যুদ্ধই করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ‘যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছে, তাদেরও অনুমতি দেয়া হয়েছে। কারণ তাদের উপর যুলুম করা হয়েছে। অবশ্যই আল্লাহ্ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম’ (সুরা আল হজ্জ: ৩৯)।

মযলুমের যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হলেও এ ক্ষেত্রে তাদেরকে সীমা লংঘন করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ্র পথে সেই সব লোকদের সাথে লড়াই কর, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তবে সীমালংঘন কর না। কারণ আল্লাহ্ সীমা লংঘনকারীদের পছন্দ করেন না’ (সুরা আল বাকারা: ১৯০)।

এর দুতিন আয়াত পরেই বলা হয়েছে, ‘কাজেই যারা তোমাদের হাত তোলে, তোমরাও তাদের উপর হাত তোল ততটুকু যতটুকু তারা তোলে। আল্লাহ্কে ভয় করবে। মনে রেখ, আল্লাহ্ তাদের সাথেই আছেন যারা সীমা লংঘন থেকে বিরত থাকে’ (সূরা আল বাকারা: ১৯৪)। অর্থ: প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষেত্রেও আল্লাহকে ভয় করতে হবে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।

এখানে কয়েকটি কথা মনে রাখা দরকার। তাহলো, এই যে, প্রতিশোধ নেয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ অনুমতি ও বিধান কেবল অমুসলিমদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, কোনো মুসলমান যদি অপর মুসলমানের প্রতি যুলুম ও বাড়াবাড়ি করে, তবে তার ক্ষেত্রেও এ অনুমতি এবং এ বিধান প্রযোজ্য। মযলুম যালিম থেকে সমপরিমাণ প্রতিশোধ নিতে পারে, তবে ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম।’

সূরা আল মায়িদা ও আল বাকারার মতই এটি মাদানী সূরা। এই সূরায় অমুসলিম শত্রুদের প্রসংগে নি¤েœাক্ত হিদায়াত দেয়া হয়েছে, ‘কোনো বিশেষ দলের শত্রুরা তোমাদেরকে যেন এতটা উত্তেজিত করে দেয় (যার ফলে) তোমরা ইনসাফ ত্যাগ বস। ন্যায় বিচার কর। এটাই তাকওয়ার সাথে গভীর সামঞ্জস্যশীল আল্লাহ্ ভয় করে কাহ কর। তোমরা যা কিছু কর । আল্লাহ্ সে সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল’ (সূরা আল মায়িদা, আয়াতঃ ৮)।

শুধু ন্যায়বিচার করতেই বলা হয়নি, বরঞ্চ সেই সাথে যেসব অমুসলিম অসদাচরণ করে তাদের সঙ্গে সদাচরণ করারও উপদেশ দেয়া হয়েছে, ‘ভাল আর মন্দ সমান নয়। অন্যায় ও মন্দকে দূর করে দেয় ভাল দিয়ে যা অতীব উত্তম। দেখবে তোমার সাথে যার শত্রুতা ছিল, সে তোমার প্রাণের বন্ধু হয়ে গেছে’ (সূরা হামীম আস সাজদা-৩৪)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমরা (রা.) সূত্রে নবী করীম (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো চুক্তিবদ্ধ প্রাণকে (যিম্মি অথবা রাষ্ট্র কর্তৃক নিরাপত্তা প্রাপ্ত ব্যক্তি) হত্যা করল, সে বেহেস্তের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ বেহেস্তের ঘ্রাণ চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়’ (বুখারী)।

মানবাধিকার: আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে মেয়ে সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো। অজ্ঞ সমাজের এই অধঃপতিত মানসিকতার প্রেক্ষাপটে রাসূলুল্লাহ (সা.) কন্যা সন্তান লালন পালনের এবং তাদেরে সাথে ভালো ব্যবহার করার অস্বাভাবিক পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি পূর্ণ বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত দু’টি কন্যা সন্তান প্রতিপালিত করেছে, কিয়ামতের দিন আমার ও তার মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না। এ কথা বলে তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলোকে পরস্পরের মিশিয়ে দেখালেন’ (মুসলিম)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘কোনো বাপ তার সন্তানকে সুন্দর নৈতিক চরিত্র শিক্ষা দানের চাইতে উত্তম কিছু দান করে না’ (তিরমিযী, বায়হাকী)।

মানুষ তার সন্তানকে ও পরিবার পরিজনের জন্য যা কিছু ব্যয় করে তা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তার বিধান অনুযায়ী ব্যয় করে, তবে এই ব্যয় আল্লাহর পথে ব্যয় বলে গণ্য হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুসলমান যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আপন পরিবার পরিজনের জন্য ব্যয় করে, তখন তা তার পক্ষে সদকা বলে গণ্য হয়’ (বুুখারী, মুসলিম)। অপর হাদীসে এর চাইতে ও অগ্রসর হয়ে বলা হয়েছে, ‘মানুষ যা ব্যয় করে তন্মধ্যে সর্বোত্তম দীনার হচ্ছে সেটি, যা সে আপন বাল-বাচ্চাদের জন্য ব্যয় করে, যা সে ব্যয় করে আল্লাহর পথে জিহাদ করার উদ্দেশ্যে, কোনো পশুর জন্যে এবং যা সে ব্যয় করে তার আল্লাহর পথের সাথীদের জন্যে’ (মুসলিম)।

পরিবার-পরিজন ছাড়াও সকল আত্মীয় স্বজনের প্রতিই আামদের কর্তব্য রয়েছে। কারণ, একদিকে তারা মানুষ হিসেবে তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য রয়েছে। অপরদিকে তারা আমাদের আত্মীয় আর এ হিসেবেও তাদের প্রতি রয়েছে আামাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মিসকীনদের জন্য ব্যয় করা একটি সাদকা। আর আত্মীয়দের জন্য ব্যয় করা দুটি সদকা। কারণ, এটি একদিকে দান আর অপরদিকে রক্ত সম্পর্ক রক্ষা করা’ (তিরমিযী. নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, দারমী, মুসনাদে আহমাদ)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন