বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আত্মঘাতী ট্রানজিট

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ভারতীয় মালামাল পরিবহন জানুয়ারিতে : বন্দর-শিপিং-রাজস্ব খাত হবে হ-য-ব-র-ল দেশের আমদানি-রফতানি সামাল দিতেই সক্ষমতা, নিরাপত্তা, যন্ত্রপাতি অপ্রতুল : নেই পৃ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড দিনরাত কর্মচঞ্চল সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর -ইনকিলাব


চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় মালামাল পরিবহন করা হবে। আসছে জানুয়ারি মাসে তা ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ শুরু হচ্ছে। বাস্তবে তা শুরু হয় সাড়ে চার বছর আগেই। এটি ‘ভারত থেকে ভারতীয় পণ্যের ভারতমুখী’ পরিবহন। এতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির কোনো শর্ত নেই। দেশের দুই প্রধান বন্দর ভারতকে উদার হাতে বিলিয়ে দেবে সেবা। ভারতের ট্রানজিটের ব্যবহার উপযোগী করে বিশেষত মংলা বন্দরের অবকাঠামো ও যান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ডজনের মতো প্রকল্প ত্বরিৎ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়। পূর্বে রামগড়, ফেনী, আখাউড়া, আশুগঞ্জ, সিলেট থেকে শুরু করে দিনাজপুরসহ উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উভয় বন্দরের সঙ্গে সড়ক, নৌ ও রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক সহজ করা হচ্ছে।

সরকারি-বেসরকারি, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, বন্দর-শিপিং-কাস্টমস-পরিবহন বিশেষজ্ঞমহল এহেন অভিনব পণ্য পরিবহন পদ্ধতিটিকে বলছেন, ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, কানেকটিভিটি অথবা করিডোর। একেক সময় একেক নামে। পদ্ধতি যাই হোক তার বিবরণ, শর্তাবলী, লাভালাভ কী তাও এখন পর্যন্ত অজানা অধ্যায়। বলা হচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের অভাবী ও ভূমিবেষ্টিত রাজ্যগুলোতে মালামাল পরিবহন করা হবে (প্রথমত আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়) ভারতের অপরাপর অঞ্চল থেকে। এখন কলকাতা বন্দর দিয়ে দীর্ঘ ঘুরপথে সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে দেশটির। অথচ অতীত থেকেই সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যে এবং পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের কাছে বাংলাদেশের উৎপাদিত হরেক ধরনের শিল্পপণ্য, সেবাপণ্য ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ভারতের শুল্ক ও অশুল্ক বাধার কারণে বাংলাদেশের উৎকৃষ্টমানের পণ্য সেখানে ঢুকতে পারেনা। সেসব রাজ্যের জনগণও বঞ্চিত হচ্ছে সুলভে বাংলাদেশের পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে না পেরে।

বিগত ৩ থেকে ৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লী সফরকালে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার সম্পর্কিত এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) চুক্তি স্বাক্ষর হয়। গত ৫ ডিসেম্বর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক তার বাস্তবায়নের দিকগুলো তুলে ধরা হয়। চুক্তি অনুসারে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরে ভারতীয় পণ্য পৌঁছানোর পর তা সড়ক, রেল ও নদী পথে আখাউড়া হয়ে আগরতলা, তামাবিল হয়ে মেঘালয়, শেওলা হয়ে আসাম ও বিবিরবাজার হয়ে ত্রিপুরায় যাবে। দীর্ঘদিন দিল্লীর পীড়াপড়ির পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের উদ্দেশে বাংলাদেশ ও ভারত ২০১৫ সালে প্রথম সমঝোতা চুক্তি করে (৬ ও ৭ জুন’১৫ইং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে)। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতমুখী পণ্যের ট্রানজিট পরীক্ষামূলক প্রথম চালু হয় ২ জুন ’১৫ইং ‘এমভি ইরাবতী স্টার’ নামক জাহাজ বন্দরের ১৩ নম্বর জেটিতে ভিড়ে, ভারতের তিনটি বন্দরগামী পণ্যভর্তি ৯২টি কন্টেইনার খালাসের মধ্যদিয়ে।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বন্দর ব্যবহারকারী স্টেক হোল্ডারগণের অভিমত, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে বিনামাসুলে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে একতরফা সার্ভিস দিতে গিয়ে বন্দর-শিপিং সেক্টর পড়ে যাবে চরম হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিতে। জাতীয় অর্থনীতির আকার বাড়ছে। প্রবৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। এরফলে দেশে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যও বাড়ছে। সমগ্র দেশের আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম সামাল দিতে গিয়েই চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের এখন হিমশিম অবস্থা। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে সার্বক্ষণিক কর্মব্যস্ত (২৪/৭) সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম।

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চট্টগ্রাম বন্দর বছরের অধিকাংশ সময়েই কন্টেইনার জট ও জাহাজজটের মুখোমুখি হচ্ছে। উভয় বন্দরের সক্ষমতা, নিরাপত্তা, যন্ত্রপাতি, দক্ষতা এখনও বিশ্বমানের নিরিখে অপ্রতুল। চট্টগ্রাম বন্দর-কাস্টমসের বহুল প্রত্যাশিত পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন এখনও হয়নি। কাস্টমসের সার্ভার ডাউনের কারণে মাঝেমধ্যে ব্যবসায়ীরা বিড়ম্বনায় পড়েন। তাছাড়া উত্তর চট্টগ্রামের মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর থেকে শুরু করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চায়না অর্থনৈতিক জোন, মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপাঞ্চলসহ কক্সবাজারজুড়ে শিল্প ও জ্বালানি খাতে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকার সমপরিমান দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ চলছে এগিয়ে। ব্যাপক এ উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রয়োজন পূরণে প্রস্তুতি অপর্যাপ্ত। ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা বিলিয়ে দেওয়ার আগে গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনই জরুরি। এমনিতেই বছরজুড়ে পণ্যের চাপে দুই বন্দরের ঠাঁই নেই। এ অবস্থায় সময়ের প্রয়োজন উপেক্ষা করে ভারতকে বন্দরে ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিতে গিয়ে কার্যত আত্মঘাতি হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন শঙ্কা ও সতর্কবাণী বন্দর-শিপিং সংশ্লিষ্টদের।

বিশেষজ্ঞ ও বন্দর স্টেক হোল্ডারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের মতো বিশাল একটি দেশের মালামালের বোঝা বহনের মতো আকার-আয়তন, সক্ষমতা চট্টগ্রাম কিংবা মংলা বন্দরের আদৌ নেই। প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম হাজার বছরের নিরাপদ পোতাশ্রয়। এটি প্রাকৃতিকভাবেই একটি ফিডার পোর্ট। অর্থাৎ জোয়ার-ভাটার সময়ের উপর নির্ভর করে, তাও সতর্ক পাইলটিংয়ের মাধ্যমে বন্দরে জাহাজগুলো আসা-যাওয়া করতে পারে। সর্বোচ্চ ৯ মিটারের জাহাজ ভিড়তে পারে। গত দীর্ঘ দুই দশকেও বন্দরে নতুন কোনো জেটি নির্মিত হয়নি। এ অবস্থায় বিদ্যমান ১৯টি ছোট-বড় জেটি-বার্থ দিয়েই ভারতের মালামাল খালাস ও পরিবহন করতে হবে। এ ধরনের অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা-সীমাবদ্ধতার মাঝে ভারতের নিয়মিত ট্রানজিট পণ্য পরিবহন করতে যাওয়া ঝুঁকি, চাপ ও জটের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া সমীচীন হবে না। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দর নিছক একটি মার্চেন্ট পোর্ট নয়। এটি বাংলাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মহাবন্দর। জ্বালানি, নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেকগুলো স্পর্শকাতর রাষ্ট্রীয় স্থাপনা এখানে গড়ে উঠেছে।

তাছাড়া দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের প্রতিবছর কন্টেইনারসহ কার্গো হ্যান্ডলিং ধারাবাহিকভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার প্রবৃদ্ধির হার বার্ষিক ৯ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত। এ বন্দর নিরবচ্ছিন্ন মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান। বন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পবহর নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের গৌরব এ প্রতিষ্ঠানের। শুধু তাই নয় বন্দরের তহবিলে এবং কারিগরি সহায়তা ও গবেষণায় তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা গড়ে উঠেছে, মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মিত হতে যাচ্ছে বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন গভীর সমুদ্রবন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক আমদানি-রফতানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্রমাগত বেড়ে গিয়ে এখন ৩০ লাখ টিইইউএস ছাড়িয়ে গেছে।

অথচ এক্ষেত্রে ইতিপূর্বে বন্দর-শিপিং বিশেষজ্ঞদের প্রক্ষেপণ (পূর্বাভাস) ছিল আজকের বাস্তবতার চেয়ে কম তথা অসাড়। আঙ্কটাড নীতিমালাসহ বিশে^র শিপিং পোর্ট সার্কেলের নীতি অনুসারে কোনো সমুদ্র বন্দর সাবলীলভাবে সচলের জন্য অন্তত ৩০ শতাংশ ইয়ার্ডসহ অবকাঠামো সুবিধা খালি রাখা প্রয়োজন। কিন্তু বছরজুড়ে পণ্যভারে টইটম্বুর চট্টগ্রাম বন্দরে খালি জায়গা তেমন নেই। অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও চট্টগ্রাম পূর্ণাঙ্গ একটি কন্টেইনার পোর্ট হিসেবে বহির্বিশে^ সুনাম কুড়িয়ে চলেছে। লয়েডস বিশ^সেরা বন্দরের তালিকায়ও সম্মানজনক অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দরের। বিশেষজ্ঞমহল মনে করেন, সুনাম অর্জন যেমন কঠিন ধরে রাখা আরও কঠিন। ভারতের জন্য ট্রানজিট দেয়া হলে বন্দরের কী অবস্থা দাঁড়াবে তার জন্য আগেই দূরদর্শী ও সময়োচিত চিন্তাভাবনা অপরিহার্য।

এ প্রসঙ্গে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি প্রবীণ শিল্পপতি মীর্জা আবু মনসুর গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভারতীয় মালামাল ওঠানামা করতে হলে বন্দরে আলাদা জেটি, বার্থ নির্মাণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় বিদ্যমান জেটিগুলোতে আমাদের পণ্য ও ভারতীয় পণ্য হ্যান্ডলিং করতে গেলে তালগোল পাকিয়ে যাবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে জটের যে বেসামাল অবস্থা সেখানে একমাত্র আল্লাহ জানেন ভারতের মালামালও ট্রানজিট করা হলে কী অবস্থা দাঁড়ায়। আমরা আশা করি সরকার বিষয়টি বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করবেন। ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়টি আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে বড়জোড় ছয় মাস দেখা দরকার। এরজন্য সরকারের পর্যাপ্ত পূর্বপ্রস্তুতি ও সজাগ থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় বিরাট সমস্যা রূপ ধারণ করবে। এ বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। ভারতকে সুবিধা দিতে হলে বন্দরের সুবিধা কতদূর আছে তা দেখতে হবে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মু. সিকান্দার খান ইনকিলাবকে বলেন, সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য পরিবহনের বিষয়টা একটা বড় ডিলের অংশ হিসেবে করা হচ্ছে কিনা তা আমি নিজেও জানি না। এর বিনিময়ে আমরা কী পাচ্ছি কী পাচ্ছি না সে সম্পর্কে খোলাসা হওয়া প্রয়োজন। তার নিশ্চয়তা চাই। আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত হারে লেভি, ট্যাক্স আমাদের প্রাপ্তি কী নিশ্চিত হয়েছে? আমাদের পণ্য পরিবহনের জন্য বন্দরের যে চাপ রয়েছে তার সাথে ট্রানজিটের বাড়তি চাপ কী আমরা সামাল দিতে পারব? চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের ক্যাপাসিটি উদ্বৃত্ত যদি থাকে তাহলে আমরা তা ব্যবহার করতে পারি। মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রেখে যেন তা (ট্রানজিট সুবিধা প্রদান) করা না হয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি ও চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, অর্থনৈতিকভাবে আমরা লাভবান হলে ট্রানজিট বা ট্রানশিপমেন্ট ব্যবস্থাটা ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। ভারতের জন্য ট্রানজিটের বিনিময়ে ট্যারিফ নিশ্চিত থাকা প্রয়োজন। উভয় দেশের সমান লাভের ভিত্তিতে অর্থাৎ ‘উইন উইন সিসুয়েশনে’ ট্রানজিট ব্যবস্থা দেয়া যেতে পারে। তবে সেই সঙ্গে আমাদের দেশের নিজস্ব আমদানি-রফতানি প্রতিনিয়ত যেভাবে বাড়ছে তার জন্য বর্তমানে বন্দরের সক্ষমতা যথেষ্ট নয়। চট্টগ্রাম বন্দরের প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামো, দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ট্রানজিট, ট্রানশিপমেন্ট কিংবা কানেকটিভিটি যে নামেই বলি না কেন নীতিগতভাবে ২০১৯ সালে এসে একেক দেশ পরস্পরের ভূমি, বন্দর, নৌপথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পৃথিবীর কোথাও ‘না’ করার পরিবেশ নেই। তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমার দেশের স্বার্থটি উপযুক্তভাবে রক্ষা হচ্ছে না বলেই ধারণা জন্মেছে। আশা করি একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার অধিকার ও প্রাপ্য আর্থিক লাভ, স্বার্থাদি উপস্থাপন করতে লজ্জা পাবে না কিংবা ভীত হবে না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ট্রানজিটের বিনিময়ে কী কী লাভ হবে একথাগুলো ৯ বা ১০ বছর আগে যেভাবে বলা হতো, সরকার দলীয় লোকদের মুখে জিগির ছিল- ‘ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হবে’। নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার দেশের স্বার্থে কোনো আপোস আশা করি না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (17)
Nazim Uddin Pitu ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৬ এএম says : 0
চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ভারতের ট্রানজিট সুবিধায় দিয়ে দেশ ও জাতির ক্ষতি ছাড়া লাভের কানাকড়িও নেই। এটা আওয়ামী লীগ জানে না, নাকি না জানার ভান করছে? একতরফা ভারতপ্রীতি? ফলাফল হিসাব করুন।
Total Reply(0)
আশফাক আহমেদ ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
বাংলাদেশের উন্নত মালামাল ভারতের সাতটা রাজ্যে রফতানি আটকে রেখেছে বন্ধু ভারত। এমনকি নেপাল ও ভূটানে বন্দর নেই, তবুও সেখানে বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে বাধা দিয়েছে। নেপালী পণ্যও বাংলাদেশে আসতে দিচ্ছে না। তারপরও ভারতকে ট্রানজিট দিতে হবে কেন?
Total Reply(0)
K H Ali ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
খাল কেটে কুমির আনার দরকার তাই তো ভারতের জন্য ট্রানজিট। চট্টগ্রাম বন্দরের এমন চমৎকার পরিবেশ থাকবে কিনা সরকারের ভাবনা চিন্তা থাকা দরকার।
Total Reply(0)
MD Mekail Hossain ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
এটাইতো তোরা চাই ছিলি,তাঁবেদার
Total Reply(0)
Arif Billah ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
মহা প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের কবলে বাংলাদেশ!
Total Reply(0)
Nitol Amin ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
দাদাদের সন্তুষ্ট রাখার ট্রানজিট
Total Reply(0)
Ashraf Hossain ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় কন্টিনার আসতে সময় লাগে১-২মাস।আর চায়না থেকে চট্টগ্রাম আসতে লাগে ১৩-১৫ দিন। বাকিটা বুঝে নিন
Total Reply(0)
মিলন মাহমুদ ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের জাহাজের জট মালামালের জট দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করবে তাতে সন্দেহ নাই।
Total Reply(0)
Zinnah Chowdhury ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
নিজে উপোস থাকবো তবুও বন্ধুকে খাওয়াবো। বাহ্ আমরা কত দয়ার সাগর! কিন্তু সেই নিঠুর বন্ধুটি যে পানিতে মারছে সেটা কেন ভুলে যাই?
Total Reply(0)
ডা. জাহেদুল হক ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:০০ এএম says : 0
ভারতকে ট্রানজিট দিয়ে আমাদের দুইটা সমুদ্র বনদরকে সমস্যার মাঝে ঠেলে দিয়েন না। অতি লোভে তাঁতী নষ্ট।
Total Reply(0)
ash ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:১৪ এএম says : 0
OPODARTHO CHATAR DOL DESH TA CHALACHE !
Total Reply(0)
ahammad ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:২১ এএম says : 0
আরে পনিতে মরছে জনসাধারন তাতে সরকারের অসুবিধা নাই। দাদারা খুশি থাকলেতো গদি ঠিক থাকবে, তাই নয় কি ??? ছাগলের তৃতীয় বাচ্ছার ন্যায় আমরা না খেলেও খুশিতে পালপারবো।
Total Reply(0)
** হতদরিদ্র দিনমজুর কহে ** ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:৫৪ এএম says : 0
কোথায় মিলিয়ে গেলো,সেই শ্লোগান? জান দেবো,জীবন দেবো,ট্রানজিট দেবো না।
Total Reply(0)
আজিজুর রহমান স্বপন ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:০৪ এএম says : 0
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার পূর্বে জনমত যাচাই করা উচিৎ ছিল। তিস্তা নদীর পানি তো মোদীর কাছে থেকে নিতে পারলেন না।
Total Reply(0)
জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:১১ এএম says : 0
দাদাদের আর কত উজাড় করে দিবেন? বন্দরের ভেতর ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সময় থাকতে সরে আসুন।
Total Reply(0)
jack ali ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:০০ পিএম says : 0
we fought Pakistan because they used to dominate us in every aspect of our life. now India is dominating our life due to the enemy of our beloved country who claim they love our country.... O' people of Bangladesh wake up --- still there is time to change the course of our life to say no.....
Total Reply(0)
নূরুল্লাহ ৯ মার্চ, ২০২০, ৮:০৪ পিএম says : 0
আমাদের ভবিষ্যত কার হাতে তুলে দিচ্ছি? আমার আশঙ্কা ব্যক্ত করছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে- বাংলাদেশ সরকারকে সঙ্কটগুলোর উত্তরণ ঘটাতে হবে যেভাবে বাংলাদেশের জন্য ভারত প্রয়োজন নাকি ভারতের জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজন- এ প্রশ্নটি বেশ কয়েকবার আমার মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে। আসলে তিনদিক বেষ্টনকারী বিরাট একটি প্রতেবেশি দেশের সাথে আমাদের অনেক বিষয়িই জড়িত থাকতে পারে অসম্ভব নয় কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কাকে প্রয়োজন কার জন্য বেশি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে যতটুকু পড়াশোনা আমার ছিল, সে বিচারে আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রয়োজন ভারতকে যত না বেশি তার চেয়ে ভারতের বাংলাদেশকে কাছে পাওয়ার প্রয়োজন অনেক অনেক বেশি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, আজ বাংলাদেশ তার সেই মূল্য ঘোষণা দিতে পারছে না। বাংলাদেশের ঐ ইমেজটা নষ্ট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আর্থিক বিষয় যেমন আছে রাজনৈতিক দুর্বলতা ও অসচেতনতার দায় তারচে বেশি। আজ ভেবে অবাক হই, কয়েক দশক আগেই আমাদের এক সচেতন লেখক বিষয়টার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তার আশঙ্কা ও আতঙ্কের কথা বলেছিলেন কিন্তু মনে হয় আমরা তার কথা গুরুত্ব দিয়ে কেউ বিবেচনা করতে পারিনি। সেই পরলোকগত লেখকের কথার কিছু উদ্ধৃতি আমি নিচে পেশ করবো। তার পূর্বে বলবো, প্রধানমন্ত্রী, এখনও সময় আছে, দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। দেশের রাজনৈতিক স্থিতি ও পরস্পর মানুষের ভ্রাতৃত্বকে সংহত করুন। সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতিকে উৎসাহিত করুন। অগভীর উগ্র দুর্বল চিত্ত ও দুর্বল চরিত্রকে বর্জন করে ভারসাম্যপূর্ণ গভীর জ্ঞানী দীনদার মানুষদের কথাকে গ্রাহ্য করুন। এতে দেশের স্বাধীনতা, সমৃদ্ধি টিকবে, আপনার কীর্তি ও সুনামও অক্ষুণ্ন থাকবে। জনগণ-নির্ভর রাজনীতি করুন তাহলে ভিনদেশি শকুনরা এমনিতেই স্যারেন্ডার করবে। সময় কারও জন্য এক থাকে না, রাজত্বও কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়- এটা আল্লাহর বিধান। দেশের জনগণকে আস্থায় না আনতে পারলে ক্ষমতা ধরে রেখে লাভ নেই, এতে দেশের মঙ্গল হয় না, জাতির ভবিষ্যত অন্ধকার। তাই এমন কাজ করা জরুরি, এমন মানুষদের সঙ্গে রাখা জরুরি যার বিনিময়ে দেশবাসী আস্থাশীল হয়। তাতে দেশের স্বার্থ ও নিজেদের ইজ্জত রক্ষা পাবে। অন্যথায় ইতিহাসের জানালা খুলে দেখতে হবে। একটি জাতি ও দেশের পতনের পূর্বে কী অবস্থা বিরাজ করে, আমাদের মধ্যে সেসব উপস্থিত হলো কিনা। অতি অবশ্যই মনে করতে হবে পলাশীর পরবর্তী রাজনীতি ও সার্বিক অবস্থা। তারপরের অন্ধকার দিনগুলোর কথা।.. এবার আমি ঐ জ্ঞানী লেখকের বক্তব্য তুলে দিচ্ছি। বন্ধুরা, আশা করি আপনাদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন: “ভারতবর্ষের ক্রমাগ্রসরমান পুঁজির যে অভিযাত্রা বাংলাদেশ তার একটি প্রধান প্রয়োগ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। .. বাংলাদেশে ভারতের পুঁজি বিনিয়োগ হচ্ছে বিরাট হয়ে। ভারতীয় পুঁজি বৃদ্ধি পেলে আমাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অর্থহীন শব্দে পর্যবসিত হবে। [আজ তার কতটুকু বাকি আছে?] আমরা ভারতীয় পুঁজিপতিদের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ঢুকে পড়বো। নিজেদের জাতিগত উত্থানের কোন সুযোগ থাকবে না। অথচ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জনগোষ্ঠী ভারতের গণতন্ত্রের যে সুযোগ সুবিধা ও অধিকার ভোগ করছে আমরা সেগুলো ভোগ করতে পারবো না। [আহমদ ছফা, নির্বাচিত প্রবন্ধ ৩৯৮] পুঁজির সঙ্গে অবশ্যই বাধ্যবাধকতার প্রশ্নটা জড়িত। ভারতের পুঁজি বিকাশমান অবস্থায় আছে। একারণে তার চরিত্রটাও নিষ্ঠুর। সেই তুলনায় পশ্চিমা পুঁজি এখানে ব্যবহৃত হলে ভারতের প্রতিস্পর্ধী একটি অর্থনীতি এখানে গড়ে উঠবে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের কাজের জন্য বিদেশ ঘুরতে হবে না।... এই বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন, একটি দেশে উৎপদনের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকা, হরতাল, কর্মবিরতি, শ্রমিক সহিংসতা ইত্যাদি না থাকা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না থাকা, ভারতের মতো দেশের শত্রুতা- এই সমস্যাগুলো বাংলাদেশে পশ্চিমা বিশ্বের পুঁজি আসার জন্য বিশেষ বাঁধাস্বরূপ। ভারত বিশ্ব্যবাপী কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে বলে থাকে, কোন সভ্য সমাজ বাংলাদেশে তৈরি হয়নি। এখানে ভদ্রলোকের জান, মাল, সম্পদ কিছুই নিরাপদ নয়। [ঐ ৩৯৯] বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো পেটমোটা কর্মচারীদের বিহারক্ষেত্র, আমলাদের অনেকেই দেশপ্রেমহীন, রাজনীতিবিদেরা নাবালক এবং হ্রদদৃষ্টিসম্পন্ন। [৪০০] আগে বাংলাদেশ ছিল কলকাতার শিল্পকারখানার কাঁচামালে যোগানদার এবং অর্থনীতির পশ্চাদভূমি। নির্বিচারে ভারতীয় পুঁজি বাংলাদেশে এলে বাংলাদেশের আবার ভারতীয় অর্থনীতির পশ্চাদভূমির ভুমিকায় ফেরত যেতে হবে। [৪০১] বাংলাদেশের একটি পছন্দবোধ, একটি রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা এবং অর্থৗনৈতিক উন্নয়নের কর্মসূচী না থাকলে অনুগত অর্থনৈতিক এলাকার ভাগ্যকে বরণ করতে হবে।... ধনতন্ত্র কায়েম হয়ে বসলে চক্রবৃদ্ধি হারে শোষেণের ঝুরি প্রসারিত করে।...” আল্লাহপাক আমাদের বুঝবার তাওফিক দান করুন। আমরা যেন অপরাধীদের মধ্যে গণ্য না হই মহান আল্লাহ হেফাজত করুন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন