বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

একটি কঠোর আইন : ডন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:২৬ এএম

নরেন্দ্র মোদির তদারকিতে ভারত যে একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে তাতে সংশয়ের অবকাশ আছে সামান্যই, এখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো সমাজে প্রান্তিক অবস্থানে নেমে যাবে। মঙ্গলবার লোকসভায় ও বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পাস হওয়ার মাধ্যমে নয়া দিল্লির বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার জোরালোভাবে ও স্পষ্ট করে আরেকটি বার্তা দিলো: মোদির ভারতে মুসলিমরা গ্রহণযোগ্য নয়। এই আইনের অধীনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা অমুসলিমেরা অনেক সহজে ভারতের নাগরিকত্ব লাভ করবে। বিতর্কিত বিলটির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমর্থকেরা বলছেন, আইনটি এসব দেশে নির্যাতিত সংখ্যালঘুরা ভারতে আশ্রয় পাবে। অবশ্য, এই পদক্ষেপ মানবিক উদ্বেগ লাঘব করা এবং ইসলামফোবিয়া ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়নি। মনে হচ্ছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার অমুসলিম সম্প্রদায়গুলোকে নিয়ে বিজেপি খুবই উদ্বিগ্ন, কিন্তু তা করতে গিয়ে ভারতের মুসলিমদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলছে। সঙ্ঘ পরিবারের এজেন্ডা দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভারত সরকারের গ্রহণ করা এসব পদক্ষেপ মূলধারার ভারত থেকে মুসলিমদের কোণঠাসা করে বের করে দেবে। গরু পরিবহন বা খাওয়ার সন্দেহে মুসলিমদের পাকড়াও ও পিটিয়ে হত্যার মতো বর্বর কাজে সরকার সহায়ক হচ্ছে। আর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করাও ছিল ওই জঘন্য এজেন্ডার অংশবিশেষ। এদিকে নাগরিকত্ব নিবন্ধনের কাজও আসামে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিজেপির কার্যক্রম এগিয়ে চললে এই পদক্ষেপ ভারতীয় মুসলিমদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে তা ব্যবহৃত হতে পারে। ভারতীয় সমাজের অনেক অংশ এসব পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। তারা মনে করছে, এটি ভারতের সেক্যুলার সংবিধানের পরিপন্থী। কিন্তু হিন্দু ভারতের স্বপ্নে বিভোর বিজেপি সব প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। ভারতীয় মুসলিমদের জন্য সময়টা খুবই খারাপ। যাদের শিকড় ভারতে নিহিত, যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতে বাস করছে, তারা এখন পরদেশি ঘোষিত হতে পারে। এসব অশুভ পদক্ষেপের মাধ্যমে বিজেপি কোটি কোটি ভারতীয় মুসলিমকে রাষ্ট্রহীন করছে, নিজ দেশে বহিরাগত করে ফেলছে। মনে হচ্ছে ভারত পরিচালনাকারী আরএসএস (যারা ইসরাইলের বিপুল ফ্যান এবং যাদের আদর্শগত পূর্বপুরুষেরা ২০ শতকে ইউরোপের ফ্যাসিবাদীদের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিল) এখন ভারতের মুসলিমদেরকে ওপর উভয় প্রভাবের ‘সর্বোত্তম প্রয়োগ’ করছে। সারা বিশ্বের দেশগুলোর উচিত এসব নিন্দনীয় কাজগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন