বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাহাড় ও সৈকতের খেলাঘর সীতাকুন্ড

v

শেখ সালাউদ্দিন, সীতাকুন্ড থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

‘আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ওই। ওই পাহাড়ের ঝরনা আমি, ঘরে নাহি রই গো..। পাহাড়-সমুদ্র ও ঝরনার মাখামাখি দৃশ্যে মুগ্ধ হয়ে কবি নজরুল লিখে ছিলেন এমন বিখ্যাত গান। সীতাকু- অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সবুজে সমারোহ সারা বছরই মেঘে ছেয়ে থাকে। পাশেই বিশাল সমুদ্র আর পাহাড়-সবুজে হরহামেশাই চলে মেঘের খেলা। প্রকৃতির এমন উদারতা আকৃষ্ট করে হাজারো পর্যটকদের। ফলে শীতের শুরুতেই পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে সীতাকু- উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট। তবে বিপুল পরিমান সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখনো পর্যটন স্পটগুলো বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে না উঠলেও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রতিদিনই পর্যটকদের আগমন ঘটছে এসব পর্যটন স্পটগুলোতে।

দর্শনীয় স্থান ও খরচ : সম্প্রতি সময়ে সব চেয়ে বেশি পর্যকটদের আগমন ঘটেছে ভাটিয়ারী লেক ও মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী বীচে। ভাটিয়ারী লেকে পৌছাতে হলে চট্টগ্রাম একেখাঁন ও অলংকার থেকে বাস যোগে ভাটিয়ারী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা। তারপর এখান থেকে অটোরিক্সায় প্রতিজন ভাড়া ২০টাকা। আর রিজার্ভ ভাড়া ১০০টাকা। অন্যদিকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ট্রেনযোগে ভাটিয়ারী রেলওয়ে স্টেশন নেমে ওখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে ভাটিয়ারী লেকে যাওয়া যায়। আর বাসযোগে ঢাকা থেকে আসলে ঠিক একই ভাবে প্রথমে ভাটিয়ারী নেমে ওখান থেকে লেকে পৌছাতে যাবে। এ স্পটে এসে ভাটিয়ারী লেক, সানসেট ও টুয়েন্টি ফোর পার্কসহ তিনটি পর্যটন স্পট পরিদর্শন সুযোগ রয়েছে।

ভাটিয়ারী পরিদর্শন শেষে এরপর কুমিরা গুপ্তাছড়া ফেরিঘাট সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এখানে দাঁড়িয়ে সোজা পশ্চিমে হাতিয়া সন্দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চোখে পড়বে। এ আর্কষণীয় গুপ্তাছড়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন স্প্রিট বোর্ট,সার্ভিস বোট ও লঞ্চ যোগে সাগর পাড়ি দিচ্ছে শতশত সন্দ্বীপ উপজেলাবাসী। তার পাশাপাশি সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াও মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী বীচ সমুদ্র সৈকতে ভ্রমন প্রেমীদের সবচেয়ে বেশি ভীড় লক্ষ্যকরা যায়। এ পর্যটন স্পটে যেতে হলে সীতাকু- পৌরসভাস্থ এলাকায় অবস্থান করে নামার বাজার হয়ে সিএনজি অটোরিক্সায় গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে পৌঁছানো যাবে। আর পৌঁছাতে রির্জাভ ভাড়া ১৫০ টাকা। মনোরম দৃশ্য উড়োন্ত পাখিদের কলতান, সমুদ্রের হিমেল হাওয়া, মনকে একবার হলেও দোলা দেবে। তবে কাঁদা মাটি ও কোথাও কোথাও চোরা বালি থাকায় কারণে সৈকতে না নামাই উত্তম। শুধু সৈকতের তীরে থেকেই সমুদ্রের মনমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করাই ভাল এবং নিরাপদ।

অপরদিকে সৈকত ভ্রমন শেষে পৌরসভাস্থ ফকিরহাট এলাকায় অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ইকো-পার্ক। পাহাড়ের সোজা তাকালেই বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলের নীল পানিরাশি চোখে পড়বে। আর চারিদিকে যেন পাহাড় আর মেঘের মিতালি! পাহাড়ের নিচেই রয়েছে বিশাল আকারের সিঁড়ি ও মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা। খুবই সুন্দর এই ঝর্ণা মনকে একবার হলেও ছুঁয়ে যাবে। পার্কের বিভিন্ন ধরনে সবুজ উদ্ভিদ রয়েছে। বিরল প্রজাতির মাইকাস চন্দন ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পর্যটকদের আরো অনেক সুন্দর ও সমৃদ্ধি করে। এখানে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণীর ও আনা গোনায় ইকো পার্কটি মুখরিত। ইকো পার্কের ইজারাদার মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, শীতের মৌসুমের শুরুতে দেশর বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পর্যটকরা পরিবার পরিজন নিয়ে ইকো পার্কের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে। এছাড়াও পতিবছর শীতের মৌসুমে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে বন ভোজনের উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। এখানে গাড়ি পার্কিং এরও সু-ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এপার্কের সাথেই আছে সবচেয়ে উচুঁ চন্দ্রনাথ পাহাড়। আর এ পাহাড়ের উচ্চতা ১৩৩৫ ফুট হলেও সব চেয়ে উঁচু পাড়ের নিচে রয়েছে প্রাকৃতিক ঝরনাও। পৌরসভা থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় রিজার্ভ ভাড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
আবাসন ও সতর্কতা : সন্ধ্যার পর চন্দ্রনাথ পাহাড়, পার্ক ও সমুদ্র সৈকতে থাকা মোটেই নিরাপদ নয়। দূরের পর্যটকরা থাকার জন্য সীতাকু- পৌরসদর বাজারে অবস্থিত নিউ সৌদিয়া হোটেল রেস্তোরাসহ আরো অন্যান্য হোটেলও রয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন