মাদারীপুর শহরের পোস্ট অফিস সংলগ্ন সরকারি গণগ্রন্থাগারে দিন দিন পাঠকের সংখ্যা আগের তুলনায় বাড়তে শুরু করেছে। ফলে গণগ্রন্থাগারটি এখন হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী পাঠকের জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র। তবে শহরের জনসংখ্যার তুলনায়, ২৭ হাজার বই পুস্তক ও পত্র-পত্রিকার এই বিশাল সংগ্রহশালায় পাঠকের উপস্থিতি খুবই কম। তবে কর্তৃপক্ষ সীমাবদ্ধতার ভেতরেও পাঠক বৃদ্ধিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর মাদারীপুর সরকারি গণগ্রন্থাগারটি পোস্ট অফিসের সামনে নতুন ভবন নির্মাণ করে এবং নির্মাণ শেষে গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নতুন নির্মাণ করা ভবনে গ্রন্থাগারের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এর আগে শহরের ঈদগাহ মাঠের পাশে এমএম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরির একটি কক্ষে এই সরকারি গ্রন্থাগারটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। বর্তমানে গ্রন্থাগারটিতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জনের বেশি পাঠক এসে বই পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা পড়ে থাকেন।
লাইব্রেরিতে বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা এসে শিল্প সাহিত্যসহ নানা ধরনের বই পুস্তক পড়ে থাকেন আবার কেউ কেউ চাকরি বিষয়ক বই পুস্তক পড়াশোনা কিংবা কোন উচ্চতর ডিগ্রির পড়াশোনাও করে থাকেন।
গ্রন্থাগারে নিয়মিত বই পড়তে আসা শিক্ষার্থী অমিত কর্মকার বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই রুটিন করে লাইব্রেরিতে এসে বই-পুস্তক পড়ি। এখানে পড়তে আসতে ভালো লাগে। এখানে বই পড়ার পরিবেশ খুবই চমৎকার, নিরিবিলি।’
আরেক শিক্ষার্থী মাকসুদা আক্তার বলেন, ‘সামনে আমার বার কাউন্সিলের পরীক্ষা। তাই বাড়িতে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে সমস্যা হওয়ায় লাইব্রেরিতে এসে আইন শাস্ত্রের বিভিন্ন বই পড়ি। এতে করে আমার প্রস্তুতিটা খুব ভালো হচ্ছে।
এদিকে মাদারীপুরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খান বলেন, আমি প্রায়ই সময় পেলে লাইব্রেরিতে এসে অনেকগুলো পত্রিকা খুঁটিয়ে খুঁিটয়ে পড়ি। এছাড়া এখানের পরিবেশ খুব সুন্দর ও নিরিবিলি। তাই এখানে সব সময়ই দেখি বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েরা এসে পড়াশোনা করে। তবে শহরের জনসংখ্যার তুলনায় লাইব্রেরি মুখী পাঠকের সংখ্যা খুবই কম। কিভাবে মানুষকে লাইব্রেরিমুখী করা যায় সে ব্যবস্থা সরকারের নেওয়া প্রয়োজন।’
কথাসাহিত্যিক রিপনচন্দ্র মল্লিক বলেন, ‘আমি তো সময় পেলেই লাইব্রেরিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ি। একটি ভালো বই দশ হাজার ভালো বন্ধুর সমান। তাই সকল বয়সের মানুষদের লাইব্রেরিতে এসে সময় কাটানো উচিত। মাদারীপুরের লাইব্রেরিটি জ্ঞান চর্চার একটি নিবিড় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে। এখানে প্রতিদিনই আগের চেয়ে পাঠক বাড়ছে। তবে তা সংখ্যায় কম।
মাদারীপুর সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান বেলায়েত হোসেন বলেন, আমাদের লাইব্রেরিতে পৃথীবির নানা ভাষার অনুদিত বইসহ ২৭ হাজারের বেশি বই রয়েছে। এছাড়া পত্রিকা, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, চাকরির খবর, ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। তাই মাদারীপুরবাসীকে আহবান করছি, আপনারা প্রতিদিন লাইব্রেরিতে আসুন। সময় দিন। নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। অনেক শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বই পুস্তক পড়ে নিজেদের সমৃদ্ধি করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। আমরা পাঠকদের সুবিধার্থে লাইব্রেরিতে সৌরবিদ্যুতের সংযোগ দিয়েছি, যাতে বিদ্যুৎ না থাকলেও পাঠকদের যেন কষ্ট না হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন