ইউটিউব বা ডিজিটাল মাধ্যমে গান মুক্তি দিয়ে রয়্যালিটি হিসেবে একটি গানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, প্রযোজক যা পান তার চিত্রটি খুবই করুণ। ডিজিটাল মাধ্যমে একটি গান ১০০ টাকা বিক্রি হলে গানটির মূল মালিক গীতিকার, সুরকার, গায়ক বা প্রযোজকরা প্রত্যেকে পান ২ থেকে ৩ টাকা মাত্র। ফলে গান যতই জনপ্রিয় বা ব্যবসাসফল হোক, তার অধিকাংশই চলে যায় অপারেটর ও মধ্যস্বত্বভোগীর হাতে। ডিজিটাল যুগে ফাঁকির মারপ্যাঁচে শিল্পীর উপার্জন চলে যাচ্ছে অন্য কারও হাতে। বহুজাতিক কো¤পানিগুলো তাদের নিযুক্ত কিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পীর গানের ডিজিটাল বিপণন শুরু করে ২০০৪ সালে। ডাউনলোড, আরবিটি, সিবিটি, ডাবিøউএপি, লাইভ স্ট্রিমিং, মোবাইল, রেডিওসহ প্রায় ১১টি মাধ্যমে গানগুলো তারা বিক্রি শুরু করেন। পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিজিটাল সংগীত প্ল্যাটফর্ম ¯পটিফাই একটি গান বিক্রির টাকা থেকে শিল্পীদের রয়্যালিটি প্রদান করে ৭০ শতাংশ। ইউটিউব ভিডিও প্ল্যাটফর্ম মেন্টেন করে শিল্পীকে রয়্যালিটি প্রদান করে ৫৫ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলো প্রথমেই একটি গানের আয় থেকে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ টাকা কটে রাখে কমিশন হিসেবে। এক হিসেবে দেখা যায়, ডিজিটাল সংগীত বিতরণমাধ্যম ৭০ শতাংশ রাখার পর অগ্রিম ১০% ট্যাক্স ও ৬.৫% আরডিটিএফ কেটে রেখে বাকি ৩০% বা ২৫% প্রদান করে সিপি নামে তাদেরই ঠিক করা একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। এই ৩০%-এর অর্ধেক চার ভাগে ভাগ করে নেন প্রযোজক, গায়ক, গিতীকার, সুরকার। এ হিসেবে একটি গান থেকে তার ২-৩ টাকা পান। সঙ্গীতজ্ঞরা বলছেন, দেশে শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে রয়্যালিটি নিয়ে বৈষম্য চলছে। এমন বৈষম্য বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার। শিল্পীরা যদি তাদের গাওয়া গানের রয়্যালিটি সঠিকভাবে পান, তবে শেষ বয়সে তাদের আর আর্থিক সংকটে পড়তে হবে না। কারো কাছে হাতও পাততে হবে না। তারা মনে করেন, অবৈধভাবে অনুমতিহীন গান বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশনা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে শিল্পীদের ৭০%রয়্যালিটি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই একজন শিল্পী সুস্থ ও সচ্ছল জীবনযাপন করতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন