শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতের সাথে স্বামী স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে এখন কী হলো?

প্রশ্ন মান্নার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ভারত সফর কেনো বাতিল হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, আগে আপনারা বলতেন আমাদের যখন ইচ্ছা তখন যেতে পারি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন আমাদের মধ্যে সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো। আহ! ভারতের সাথে সেই স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কের এখন কি হলো? যতবেশি বাগাড়ম্বর করবেন, মিথ্যাচার করবেন তত আপনারা ধরা খাবেন এবং ধরা খাচ্ছেন। একেবারে সব শুদ্ধা, গোষ্ঠি শুদ্ধা ধরা খাওয়ার আগে ভালো হয়ে যান।
গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে মজুরীর দাবিতে পাটকল শ্রমিক ও প্লাস্টিক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নাকী আকাশ ছুঁয়েছে। এখন সেটা নাকী মাটির উপর গড়াগড়ি যায়। এখন কেনো দুইজন মন্ত্রী (পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) ভারত সফরে গেলেন না- সেটা কী জানতে পারি? ওই সফর আপনারা একমাস/দুই মাস আগে ঠিক করেছেন। এখন যাননি কেনো?
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিল নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মান্না বলেন, উনি (ওবায়দুল কাদের) জবাব দিয়েছেন, না কোনো সবক দেয়ার জন্যে, কোনো বার্তা দেয়ার জন্যে, কোনো রাগ করে আমরা যাইনি সেটা কোনো কথা না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বুদ্ধিজীবী ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবার জন্যে দেশে থেকে গেছেন।
নাগরিক ঐক্যের এই নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী বছরের ক‘দিন দেশে থাকেন আর ক‘দিন বিদেশ থাকেন সেই হিসাবটা একটু দেন। আগে যারা যারা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন তারা বছরে কত দিন বিদেশে থেকেছেন বলেন। ক‘জন পররাষ্ট্র মন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বুদ্ধিজীবীর স্মৃতিসৌধে পুস্পমাল্য অর্পন করতে গেছেন আমাদেরকে দেখান। তিনি বলেন, এসব ভোলচাল কেনো ছাড়েন? ১৭ কোটি মানুষ কিছু বুঝে না, আমরা কিছু বুঝি না, আমরা চালের ভাত খাই না, আমাদের মাথায় কোনো বুদ্ধি নাই।
পাট শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহŸান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি এদেশের যত শ্রমিক সংগঠন আছে তাদের সবার কাছে আহবান জানাতে চাই- পাটকল শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান, এই যে প্লাস্টিক কারখানায় যারা নির্মমভাবে মারা যান, যাদের চাকরি চলে যায় তাদের পাশে দাঁড়ান। আমি শ্রমিক সমাজের কাছে বলি, শুধুমাত্র সামনে একটা ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন আর মনে করবেন তার বন্ধনা গাইলে আপনাদের দাবি আদায় হবে-এটা ভুলে যান। হয়নি, হবে না। আপনাদের পথে নামতে হবে, আওয়াজ তুলতে হবে, নিজের দাবি পক্ষে জোরগলায় কথা বলতে হবে। ওই দুধ যারা ব্যবসা করেন তাদের কাছে বলেছি, আজ আবার বলি-রাস্তার মধ্যে দুধ ঢেলে দিয়ে মনের কষ্ট দূর করতে পারবেন না। বরঞ্চ আরো শক্ত হয়ে আপনাদেরকে এটা বলতে হবে আমরা আমাদের পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্য চাই। ধান চাষীসহ সকল চাষীদের কাছেও ন্যায্য মূল্যের দাবিতে ‘কথা বলার’ আহবান জানান তিনি।
‘৩০ ডিসেম্বর অতি কালো দিবস’
মান্না বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, এদেশের বামপন্থিদের যে ঐক্যবদ্ধ একটা সংগঠন, আলাদা আলাদা বামপন্থি সংগঠন তারা আগামী ৩০ ডিসেম্বরকে কালো দিবস ঘোষণা করেছেন। আমি বলি-এটা অতি কালো দিবস। নাহলে এর চাইতে কঠিন তো বলতে পারছি না। আরে কলুষিত না, ওটা হচ্ছে কৃষ্ণের রাত। দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে। ৩০ তারিখ আমাদের প্রতিবাদ করবার সময়। সমস্ত দল প্রতিবাদ করতে নামেন। এই বিজয়ের মাসে আমরা বিজয়ের আনন্দ যেমন করব, একই সাথে আমরা বলবো জনগণের বিজয়, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, তাদের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে সেটা আমরা ফিরিয়ে আনবো এবং তার জন্যে লড়াই করব।এই মানববন্ধনে এটাই আওয়াজ হোক- যে সেখানে আছেন পারলে একসাথে, নইলে যুগপৎ, নইলে নিজ নিজ জায়গা থেকে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্যে, মানুষের মৌলিক অধিকারের জন্যে, মানুষের মতো বেঁচে থাকার দাবিতে আমরা সবাই সংগ্রামে নামি, রাজপথে নামি। ইনশাল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে, অত্যচারী বিদায় হবে।
শুদ্ধি অভিযান কোথায়? সেই প্রশ্ন রেখে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম এই নেতা বলেন, এদের সময়ে বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় হাজারের উপরে, নিজেদের জীবন সুন্দর করেছে আর নিঃস্ব মানুষ বেড়েছে কোটি কোটি যাদের পেটে কোনো ভাত নাই। এটা ডাকাতের সরকার কেবল নয়, এটা একটা দুর্নীতিবাজদের সরকার। দুর্নীতি দমনের নাম করে কাজকর্ম শুরু করেছিলো সেটা এখন বন্ধ। আর দুর্নীতি দমন অভিযানের কথা শুনেন, শুদ্ধি অভিযানের নাম শুনেন। শুদ্ধি অভিযান করতে গিয়ে সম্মেলনের নামে আওয়ামী লীগে, যুবলীগে, স্বেচ্ছাসেবক লীগে এমন এমন সব নেতা এনেছেন যাদের চেহারা দেখলে নিজেদের চেহারা অশুদ্ধ হয়ে যায়। দলের মধ্যে কোনো শুদ্ধি অভিযান নাই, দলের মধ্যে শুদ্ধ মানুষের বড় অভাব। যারা শুদ্ধ মানুষ ছিলো তারা দল থেকে দূরে সাইড লাইনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। সরকার সেই কারণে একটাই কাজ করতে পারছে বিরোধী দলের নেতাদের ওপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়ার।
খালেদা জিয়ার জামিন না দেওয়ায় সরকারের কঠোর সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের প্রধান বলেন, তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে জামিন পান না। অথচ ১৪ বছরে সাজা নিয়ে, ১০ বছরের সাজা এখনো মাথায় নিয়ে মন্ত্রীত্ব করে বেড়াচ্ছেন -এটা কোনো দেশ হলো। এই দেশে হুলিয়া নিয়ে, মামলা নিয়ে মন্ত্রী হয়, শত শত কোটি টাকার ঋণ খেলাপীরা মন্ত্রী হয়ে যাচ্ছেন আর আড়াই কোটি টাকার মামলায় দেশ বরণ্যে নেতারা জেলের মধ্যে।
নাগরিক ঐক্যের নেতা শহীদুল্লাহ কায়সারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মোফাখারুল ইসলাম নবাব, এনামুল হক ও সাকীব আনোয়ার বক্তব্য রাখেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন