যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। রাশিয়ার সঙ্গে আঙ্কাকার মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি নিয়ে ওই নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। কাতারের রাজধানী দোহায় এক সম্মেলনে শনিবার কাভুসোগল্ ুবলেন, ‘পরিণতি যাই হোক না কেন’ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে করা চুক্তি বাতিল করবে না তুরস্ক। সাধারণত তুরস্ককে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। তবে প্রতিরক্ষা খাতে পুরোপুরি ইউরোপের ওপর নির্ভরশীল থাকতে চায় না আঙ্কারা। এজন্য রাশিয়ার কাছ থেকেও অস্ত্র কেনায় মনোযোগী হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার ঘোষণা দেয়। তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয় যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী এ বছরে দুই চালানে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হাতে পেয়েছে আঙ্কারা। নতুন করে আবারও ওই ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তুরস্কের সিদ্ধান্তেক্ষুব্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি স্থগিত করেছে। আঙ্কারার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দিয়ে আসছে তারা। শনিবার দোহায় মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা ও হুমকিম‚লক ভাষায় কোনও কাজ হবে না। যদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাই হয় তাহলে তুরস্ক পাল্টা ব্যবস্থা নেবে’। অপর এক খবরে বলা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি অটোম্যানদের হাতে বিপুলসংখ্যক আর্মেনীয়র মৃত্যুর ঘটনাকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদে তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদ‚তকে তলব করেছে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগøুর বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদলু এজেন্সি এ খবর জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেট সর্বসম্মতিক্রমে ওই প্রস্তাব পাস করে। এর আগে চলতি বছরের অক্টোবরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটি পাস করেছিল। সে সময় প্রস্তাবের পক্ষে ৪০৫ ভোট এবং বিপক্ষে ১১ ভোট পড়ে। মার্কিন রাষ্ট্রদ‚তকে তলব করার পর তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন সিনেটের ওই পদক্ষেপে যে বিরক্ত সে বার্তা মার্কিন রাষ্ট্রদ‚তের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। মার্কিন সিনেটে প্রস্তাব পাস হওয়ার পরপরই তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগøু টুইটবার্তায় এটিকে রাজনৈতিক নাটক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, যেহেতু আইনগতভাবে মার্কিন সরকার এটি মানতে বাধ্য নয়, ফলে এর কোনো বৈধতাও নেই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীর্যক মন্তব্য করে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা ইতিহাসকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করে তারা কাপুরুষ এবং তারা সত্যকে মোকাবেলা করতে সাহস পায় না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্মেনীয়রা ওই হত্যাযজ্ঞে অন্তত ১৫ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও তুরস্কের অনুমান মৃতের সংখ্যা এর এক-পঞ্চমাংশ। পশ্চিমা অনেক গবেষক দীর্ঘদিন ধরে এ ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলে এলেও অনেক ইতিহাসবিদেরই এতে আপত্তি আছে। আনাদোলু, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন