শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শেখ হাসিনাকে নজিবুল বশর এমপি : যে কথা দিয়েছেন সে কথা রাখুন

ফটিকছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:২৭ পিএম

ত্বরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চৌদ্দ দলীয় জোট নেতা আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো- আপনি যে কথা দিয়েছেন; সে কথা রাখুন। আমি বাংলার জনগণের কথা বলছি। আমাদেরকে মানুষের প্রশ্নের সম্মূখীন হতে হচ্ছে। জি কে শামীম-সম্রাটকে ধরা হয়েছে। ওমর ফারুক ও শেখ মারুফের একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কারণে প্রশ্ন আসছে- এ জায়গায় কোন সমস্যা আছে কি-না? তারা বাইরে কেন?
আমরা এবং বাংলার জনগণ আপনার সাথে আছে; আওয়ামীলীগও আপনার সাথে। জি কে শামীম যে কথাটি বলেছে- সেটি প্রত্যেকটা পত্রিকা এবং মিডিয়ায় আসছে। শুধুমাত্র একটা মন্ত্রণালয়; যে মন্ত্রণালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে জি কে শামীম দেড় হাজার কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন। কোন একটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না- একটা চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেড় হাজার কোটি টাকা খেতে পারে! সে সর্বোচ্চ ২০/৩০ কোটি টাকা খেতে পারে। তাহলে তখনকার মন্ত্রী যারা ছিল; তারা এর সাথে নিশ্চিয় জড়িত। তাদের সকলকে তদন্ত সাপেক্ষে দুদক আইনের আওতায় আনা হোক।
তিনি তৎকালীন পূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নাম উল্লেখ না করে বলেন, যে হোক কিংবা যে মন্ত্রণালয় হোক; তাদের ছাড় দেয়া ঠিক হবে না। এগুলোর যদি দৃশ্যমান শাস্তি না হয়; ভবিষ্যতে আপনার এ বক্তব্যও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হতে চাই না। আমরা চাই- আপনি শত বছর বেচে থাকুন। আপনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে; তার ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। এগুলো বলার কারণ হচ্ছে দেশের স্বার্থ। অনেকে হয়তো চিন্তা করবে না; বলবে আমি কেন এসব বলছি। ব্যক্তিগত কোন আক্রোশে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে; আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না; আমি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী নিজে বাঁচার জন্য এ কথা বলছি। শেখ হাসিনা যদি না থাকে আমাকে মেরে ফেলবে। শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় না থাকে; দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। আগে ছিল বাইরের শত্রু; এখন ঘরেও শত্রু তৈরী হয়েছে। না হলে আজকে ওবায়দুল কাদেরকে কথা বলতে হয় কেন ‘দূষিত রক্ত থাকতে দেয়া হবে না’। পর্যালোচনাক্রমে বোঝা যায়- দূষিত রক্ত তাহলে দলের ভেতরে রয়েছে! ‘ইট ইজ এডমিট বাই শেখ হাসিনা এন্ড সেক্রেটারি জেনারেল অব আওয়ামলী লীগ’। তাদের বক্তব্যে প্রকাশিত এবং ২০০% কনফার্ম ‘দলে দূষিত রক্ত আছে’। কেউ বিএনপি’র সাথে আঁতাত করে, কেউ জামাত-শিবিরকে লালন-পালন করে। এদের থেকে আওয়ামীলীগকে মুক্ত করতেই এ শুদ্ধি অভিযান। দুর্নীতি মুক্ত করাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, এমন কিছু আছে- যা পত্রিকায়ও আসেনি। আমি বলছি- ওসি নিয়োগের ব্যাপারেও ‘এদের’ কারসাজি আছে। এগুলোর ব্যাপারে আত্মীয়-স্বজন জড়িত। উনি এখন ওনার ঘরের মধ্যেও নিরাপদ নয়। অথচ এত সৎ সাহসী নেত্রী দেশে নেই। এ রকম সৎ সাহসী ছিলেন বঙ্গবন্ধু, যিনি মৃত্যুঞ্জয়ী ছিলেন, শেখ হাসিনাও মৃত্যুঞ্জয়ী। যে মৃত্যুকে ভয় পায় না।
আজকে বিএনপিকে দেখেন- টেন্ডারবাজি নিয়ে কিছুই বলছে না। ক্যাসিনো নিয়ে কোন কথা নেই। জামাত-শিবির কোন কিছু বলে না। কারণ- এসবের টাকা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কয়েকজন যেমন পেত; একইভাবে বিএনপি-জামাতও বড় অংশ পেত। যার জন্য এটার বিরুদ্ধে তারা কোনো কথা বলেনি। তারেক জিয়া-মির্জা আব্বাসসহ সকলে এখানে জড়িত। তাহলে আওয়ামীলীগ; যারা স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা কেন আজকে দু’চারজন মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, ৪/৫ জন এমপি, দু’চারজন নেতার দায়-দায়িত্ব বহন করতে যাবে? আমরাও দায় বহন করতে রাজি না; মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকেও বহন করা প্রয়োজন নেই। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, দুদকের মাধ্যমে তদন্তের ব্যবস্থা নিন। কারণ পূর্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে যদি বলতে হয়- তবে আমি তথ্য-প্রমাণ দিতে পারবো। চট্টগ্রামের বাবুলের কথা এখানে বলে যাচ্ছি। তার মাধ্যমে প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রে ৫% করে ওখানে যেতে হয়েছে আর নারী-মদসহ টাকা দিয়েছে ফটিকছড়ির জিয়া। আমাকে যদি আরো বলতে হয়; টাকা-পয়সার অংকও বলতে পারব। তাই আজ জনগণের প্রশ্ন- এরা বাইরে কেন? এরা আওয়ামীলীগের বড় পদে কেমনে থাকে? আমি সম্মেলনের আগেই এ প্রশ্ন তুলছি। এখানে তুলছি, ঢাকায়ও তুলবো, প্রয়োজনে ডিসেম্বরের শুরুতে জাতীয় সংসদেও তুলব অবশই। আমি যা বলছি তা ঢাকা শহরের সাংবাদিকরাও জানেন। আমি এখানে নাম বলছি না; যার গণভবনে যাওয়া বন্ধ, তার নিকটজন সেলিম প্রধানই অনলাইন ক্যাসিনোর মালিক। তার ফিফটি পার্সেন্ট পার্টনার হচ্ছেন ‘উনি’। এ জন্য যুবলীগকে তার কাছ থেকে নিয়ে শেখ মনির ছেলের কাছে দেয়া হয়েছে। জিকে শামীমের গডফাদার হচ্ছে বিএনপির মির্জা আব্বাস, তারেক জিয়াসহ অনেকে আর আমাদের এদিকে দু’জন সাবেক মন্ত্রী ও একজন সাবেক ওসি, সব মিলিয়ে ওনারা ১৩ জনের সিন্ডিকেট। তাদের দায়িত্ব আওয়ামীলীগ নেবে কেন? শেখ হাসিনা নেবে কেন? কোনো প্রয়োজন নেই। অতএব বিজয়ের মাসে আওয়ামীলীগ নতুন সাজে সাজবে। নতুন নেতৃত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে- এটাই হোক আজকের অঙ্গিকার। দুুর্নীতি আর জঙ্গিবাদ এবং সমস্ত কলুষমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় নিতে হবে। তাই যেগুলো দৃশ্যমান হয়েছে- সেগুলোর ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা চাই।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার (১৭/১২/২০১৯) দুপুরে ফটিকছড়ি উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মোঃ আবু তৈয়বের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভা এবং ইউএনও মোঃ সায়েদুল আরেফীনের সভাপতিত্বে আইনশৃংখলা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্œাহার মুক্তা, ভাইস চেয়ারম্যান ছালামত উল্লাহ চৌধুরী, ফটিকছড়ি পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন, নাজিরহাট পৌর মেয়র এসএম সিরাজুদ্দৌল্লাহ, উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জানে আলম, ভূজপুর থানার ওসি শেখ আব্দুল্লাহ, ফটিকছড়ি থানার ওসি বাবুল আখতার, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, আবু তালেব চৌধুরী, সরোয়ার উদ্দীন চৌধুরী শাহীন, ইব্রাহিম তালুকদার, ফটিকছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
চৌধুরী হাটহাজারী ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:৫৭ এএম says : 0
ধন্যবাদ
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন