বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিজ্ঞপ্তি-পরীক্ষা ছাড়াই ৩৫০ জন নিয়োগ

ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিয়োগ বাণিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

জনবল নিয়োগের কোন বিজ্ঞপ্তি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। কোন প্রকার নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়নি। অথচ রাজস্ব খাতে সাড়ে ৩ শ’ লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উপ পরিচালক এবং সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ অন্যান্য পদের কর্মকর্তা কর্মচারী। এসব পদ সমূহের বেশিয় ভাগই এখনো সৃজন হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইফা মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে নিজে নিজে কাল্পনিক পদ সৃষ্টি করে উক্ত পদে লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে সরকারের রাজস্বখাত থেকে। অদ্ভূত এ নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে সরকারি অর্থে পরিচালিত দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। সম্প্রতি এ সব তথ্য প্রকাশ করেছে দেশের একটি সাংবিধানিক সংস্থা। বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের সিভিল অডিট অধিদপ্তরের এক নিরীক্ষা পরিদর্শন প্রতিবেদনে উঠে এসছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ইফার এ নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, জেলা কোটা, মহিলা কোটা কিংবা অন্য কোটা অনুসরণ করা হয়নি। প্রথমে তাদের দৈনিক ভিত্তিক নিয়োগ দেখানো হয়েছে । তার পর নিয়মিত করনের নামে সিলেকশন কমিটির সভা ডেকে কর্মপত্র তৈরি করে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাকরি বিধিতে এ ধরনের দৈনিক ভিত্তিক নিয়োগ কিংবা নিয়মিত করণের নামে চাকরি প্রদানের কোন বিধান নেই। নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেয়া হচ্ছে সরকারের রাজস্বখাত থেকে। ইতোমধ্যে তাদের বেতনভাতা বাবদ খরচ হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটিরও বেশি টাকা।

ভবিষ্যতে পেনশনসহ তাদের পেছনে সরকারের ব্যয় হবে আরো শত শত কোটি টাকা। ইতোমধ্যে একদিনেই ১৩৫ জনের রাজস্বখাতে সরকারি চাকুরির নিয়োগ পত্র দেয়া হয়েছে। নিরীক্ষা পরিদর্শন প্রতিবেদনের ৫৬ নং অনুচ্ছেদে তাদের জন্য সরকারের ক্ষতি বলা হয়েছে ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৭২ হাজার ৪২৭ টাকা। উপপরিচালক পদমর্যাদার মহিলা কোঅর্ডিনিটের, আইন উপদেষ্টা, সম্পাদক, এবং সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার সহকারী সম্পদকসহ প্রায় ডজন খানেক পদে কোন বিজ্ঞপ্তি এবং পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সব পদ সমূহ সৃজনের আগেই জনবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে সরকারের ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনের ৫২এবং৭০ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে । নিয়মবহির্ভূতভাবে ২২৪ জন দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের ৫৫ নং অনুচ্ছেদে এতে সরকারের ইতোমধ্যে ক্ষতি ২ কোটি ২৫ লাখ ৪ হাজার টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের নিয়মিত করণের নামে রাজস্ব খাতে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়।

বিধিবর্হিভূত এ বিশাল নিয়োগ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে ইফা মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের ঘনিষ্ঠ একটি সিন্ডিকেট । মহাপরিচালকের কয়েকজন নিকট আত্মীয়ও এই সিন্ডিকেটে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ ভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের কেউ কেউ নিয়েগের কয়েকদিনের মধ্যে নিজেও নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন বলে ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়।

জানা গেছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে এ নিরীক্ষা চালানো হয়। এতে প্রাথমিকভাবে ১৩২টি অনুচ্ছেদে প্রায় ৯শ কোটি টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ উত্থাপিত হয়।
পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের জবাব এবং কয়েক দফায় প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার পর তা ৯৬টিতে নেমে আসে। গত ২৪ নভেম্বর সিভিল অডিট অধিদপ্তর, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের প্রতিনিধিদের ত্রিপক্ষীয় এগ্রিড বৈঠক সম্পন্ন হয়। এতে ৯৬টি অনুচ্ছেদের আপত্তির কোনটিই নিষ্পত্তি হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md,Maynul Islam ৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:২৮ এএম says : 0
আমি স্নাতকোত্তর পাশ করে, বেকার। জীবনযাপন করছি।আমি গরীব। যদি কোনো একটা ছোট খোটো চাকরি হতো তাহলে বেকারত্বের অভিশাপ হতে মুক্তি পেতাম।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন