শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সাইক্লিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৭ পিএম

বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর! দীর্ঘদিন ধরেই সাইক্লিষ্ট এবং পুরনো সংগঠকদের মনে পাহাড়সম অভিযোগ জমা থাকলেও তা শোনার যেন কেউ নেই। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাসান’কে নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে একটি কথা বার বার ঘুরে-ফিরে আসছে। তিনি নাকি বিএনপির একজন ঘোর সমর্থক। যিনি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ক্রীড়া সংগঠন বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন। ২০১০ ঢাকা সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে সাইক্লিং কেলেংকারীর দায়ে অভিযুক্ত। তখন এই পারভেজ হাসান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তাকে সাইক্লিং থেকে নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। অথচ প্রায় তিন বছর আগে তাকেই সাধারণ সম্পাদক করে সাইক্লিংয়ের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করে এনএসসি। ২০১৭ সালের ফেব্রয়ারি মাসে এ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই যেন স্থবির হয়ে পড়ে সাইক্লিং ফেডারেশনের কর্মকান্ড। দায়িত্বে আসার পর দায়সারাভাবে বছরে একটি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করা ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর কোন কাজ করতে পারেনি এই কমিটি। যার প্রভাব পড়েছে এবার নেপাল এসএ গেমসে। কাঠমান্ডু থেকে পদকহীনই ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশের সাইক্লিংকে। নেপালে পদক তো আসেইনি উপরন্তু ফেডারেশন কর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন সাইক্লিষ্টরা। জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত নেপাল এসএ গেমসে প্রতিযোগিতায় নামার আগের দিন পাওনা অর্থের জন্য আন্দোলন পর্যন্ত করেছিলেন জাতীয় দলের সাইক্লিষ্টরা। দু’শো ডলার দেয়ার কথা থাকলেও খেলোয়াড়দের তা দিচ্ছিলেন না কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত নিজেদের অর্থ আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হয় তাদের। অবস্থা বেগতিক দেখে পরে অবশ্য সেই অর্থ নাকি কর্মকর্তারা দিতে বাধ্য হন সাইক্লিষ্টদের। ফেডারেশনের বেশ ক’জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৩তম এসএ গেমসে ভালো করতে ১৫ দিন আগে নেপাল পাঠানো হয় সাইক্লিষ্টদের। সেখানে তারা অনুশীলন করেন। কিন্তু গেমস শুরু হলেও তাদের পাওনা ২০০ ডলার দিচ্ছিলেন না কর্মকর্তারা। বিস্বস্ত সুত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে ১১ জন সাইক্লিষ্টের জনপ্রতি দু’শ ডলার করে অর্থ পাঠানো হয়েছিল আগেই। কিন্তু সেই অর্থ পাচ্ছিলেন না সাইক্লিষ্টরা। তাই আন্দোলনের পথই বেছে নিতে হয় তাদের। ফলে মনযোগ নষ্ট হওয়ায় প্রতিযোগিতায় নেমে ব্যর্থ হন সাইক্লিষ্টরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাইক্লিষ্ট বলেন, ‘আমি আগেই জেনেছিলাম যে, আমাদের জন্য বাংলাদেশী টাকা মার্কিন ডলার করে সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাসানের কাছে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমাদেরকে তা দেয়া হচ্ছিল না। তাই খেলার আগের দিন আমরা ন্যায্য অর্থ পেতে গো ধরেছিলাম। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্মকর্তারা আমাদের পাওনা অর্থ দিতে বাধ্য হন। তবে খেলায় আমাদের কোন গাফলতি ছিল না। চেষ্টা করেও আমরা পদক জিততে পারিনি।’

ধার্যকৃত অর্থ পাননি দলের কোচ ওয়ালিদ হোসেনও। তিনি বলেন, ‘আমি ও আশরাফুল ইসলাম দু’জনেই কোচ ছিলাম। আমাদের জন্য গেমসের আট দিনে ২৪০ ডলার করে ধার্য করা ছিল। কিন্তু আমরা সেই অর্থ পাইনি। তাছাড়া ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিওএ ভাতা দিলেও আমরা শেষ দশদিনের অর্থ পাইনি। আমাদের টাকা মেরে দেয়া হয়েছে।’

ওয়ালিদ আরো বলেন, ‘ট্র্যাকে নামার আগের দিন পর্যন্ত আমরা সাইক্লিষ্টদের ইন্ডিভিজুয়াল সাইক্লিংয়ে অনুশীলন করিয়েছি। অথচ আমাদের খেলতে হয়েছে মাসস্টার্টে। কতটা অনভিজ্ঞ হলে আমাদের কর্মকর্তারা নিজেদের ইভেন্টের বিষয়েও জানতে পারলেন না।’ আরেক কর্মকর্তা জানান, আবদুল কুদ্দুস, সাহিদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম রিজু এই তিনজন টেকনিক্যাল কর্মকর্তাকে ৬০ ডলার করে দেয়ার কথা ছিল গেমস কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে সেই অর্থ পাননি বাংলাদেশের এই তিন টেকনিক্যাল কর্মকর্তা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন