শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হিলারির প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস-এর সমর্থন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন দৌড়

প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বেদনাদায়ক বিগত বছরে, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচিত পদের জন্য স্বল্প অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবেই নিজেদের তুলে ধরেছেন। ফাঁকা গুলি, অন্তসারশূন্য স্লোগান দিয়ে রাজ্যে রাজ্যে প্রচার-প্রপাগা-ার মাধ্যমে আমেরিকানদের উপর তারা রীতিমত বোমাবর্ষণ করে গেছেন। অপরদিকে প্রকৃত ইস্যুগুলো নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক বিতর্কের পর গণতন্ত্রমনা প্রাথমিক ভোটারদের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী বেছে নেয়ার এখন সুযোগ এসেছে।
হিলারি ক্লিনটন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রথম নারী প্রার্থী মনোনিত হতে পারেন। তিনি একটি বড় রাজ্যের (নিউইয়র্ক) একজন সিনেটর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বুদ্ধিমান ও দ্বিধান্বিত স্বামী প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে ফার্স্ট লেডি হিসেবে জাতীয় পর্যাায়ে তার অভিজ্ঞতার উল্লেখ না করেই টাইমস পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ড ফেডারেল পদের জন্য তাকে সমর্থন করেছে। নিউইয়র্ক টাইমস এরআগে সিনেটর পদের জন্য দুইবার এবং ২০০৮ সালে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর জন্যও একবার হিলারিকে সমর্থন করেছিল এবং আবারও তারা আস্থা ও উদ্দীপনার সঙ্গে হিলারির প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করছে। দলের ভেতরে মিসেস ক্লিনটনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্বঘোষিত সমাজতন্ত্রী সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স মিসেস ক্লিনটনসহ বেশীরভাগ মানুষের কাছে অধিকতর বিস্ময়কর হিসেবে প্রমাণিত। তিনি আয় বৈষম্য ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দীর্ঘ বেদনাকে তার প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছেন। অর্থনৈতিক ইস্যুতে হিলারি যেখানে এক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারতেন সেখানে স্যান্ডার্স তাকে বামপন্থার দিকে কিছুটা ঠেলে দিয়েছেন। স্যান্ডার্স সামরিক বাহিনী ব্যবহারে ব্যাপকভিত্তিক সংযমের প্রয়োজনীয়তাসহ গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নগুলোও সামনে নিয়ে এসেছেন।
শেষ পর্যন্ত যদিও, স্যান্ডার্সের ব্যাপক অভিজ্ঞতা বা নীতি নির্ধারণী কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই যা হিলারির রয়েছে। স্যান্ডর্সের সাহসী প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকগুলোকে খোলনলচে বদলে দেয়া এবং ওষুধসহ সবার জন্য সার্বিক স্বাস্থ্য সেবা সংস্কার চালু করা। তার এই ধারণা বিচ্ছিন্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোটার ও তরুণ সম্প্রদায়ের সমর্থন লাভ করেছে। অবশ্য এই লক্ষ্য অর্জনে তার পরিকল্পনা বাস্তবভিত্তিক নয়। অপরদিকে এই দুটো বিষয়েই মিসেস ক্লিনটনের প্রস্তাবগুলো খুবই ভালো ও বাস্তবায়নযোগ্য।
ডেমোক্রেটিক পাটির তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন মার্টিন ও ম্যালে। তিনি একজন দায়িত্বশীল ও যুক্তিবাদী উদারনৈতিক হিসেবে পরিচিত। অবশ্য মেরিল্যান্ডের গভর্নর ও বাল্টিমোরের মেয়র হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে যে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রেসিডেন্টের চেয়ে তাকে সেসব পদের জন্যই বেশী উপযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মিসেস ক্লিনটন মহামারি আকারে ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের বিস্তার মোকাবেলায় একটি যুক্তিসঙ্গত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোরালো প্রবক্তা । ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে স্যান্ডার্সের রেকর্ড তুলনামূলক দুর্বল। অর্থনৈতিক সংস্কারে হিলারির প্রস্তাবগুলোতে ২০১০ সালের ডড-ফ্রাংক আর্থিক সংস্কার আইন সম্পর্কে তার গভীর উপলব্ধিই প্রতিফলিত হচ্ছে। সে সময়কার আর্থিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বনের জন্য এই সংস্কার আইন করা হয়েছিল। তিনি উচ্চমাত্রার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংক নিয়ে ফাটকাবাজি কঠোরভাবে রোধের মতো দেশের জন্য অতিজরুরী পরিবর্তন সমর্থন করেন।
মি: স্যান্ডার্স ওয়াল স্ট্রিটের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে হিলারির বিরুদ্ধে বেশ কিছু জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তবে হিলারিও বেশ ভালোভাবেই তার জবাব দিয়েছেন। কার্যতো রিপাবলিকান প্রার্থীরাই এ ব্যাপারে বেশী সমালোচনামুখর।
অর্থনেতিক ক্ষেত্রে মিসেস ক্লিনটনের প্রচারের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে কর্মজীবী আমেরিকানদের অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের কল্যাণে তার অঙ্গীকার। নারী অধিকারের জন্য তাঁর দীর্ঘ লড়াই বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়েছে যদিও শিশু পরিচর্যা, অসুস্থতার জন্য নারীদের ছুটি দেয়া, অস্থিতিশীল সিডিউল ও কম মজুরীসহ নারীদের জন্য শ্রম আইনের বেশ কিছু সমস্যা এখনো রয়েছে তা সত্তেও নারীদের অধিকারের পক্ষে হিলারি খুবই সোচ্চার। এ ক্ষেত্রে তার বক্তব্য মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি নারী-পুরুষের মজুরী বৈষম্য নিয়ে খুবই সচেতন। তিনি যে শুধু এ বিষয়েই হোমওয়ার্ক করেছেন তা নয়, অন্যান্য অনেক বিষয়েও তার বেশ ভালো হোমওয়ার্ক রয়েছে। কয়েক দশকের পুরণো প্রজনন অধিকারের মতো ইস্যুগুলোতে তার অঙ্গীকার থেকে তার গভীর জ্ঞান ও উপলব্ধিই প্রতিফলিত হয়। তিনি হাইড এমেন্ডমেন্ট রদ করার আহ্বানের ক্ষেত্রে স্যান্ডার্সের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন। এই এমেন্ডমেন্টে দরিদ্র মহিলাদের গর্ভপাতের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ প্রদানকে খুবই সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে।
দেশের কল্যাণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি নিরলস কাজ করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যও অর্জন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এমন একজনকে চেয়েছিলেন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে যার জানা শোনা আছে এবং হিলারি ছিলেন তেমনই ব্যক্তিত্ব। যার আছে তারকা শক্তি এবং এই সঙ্গে আলোচনার টেবিলে কৌশলী জ্ঞান। ওবামা এমন একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেয়েছিলেন যার মধ্যে অংশগ্রহনমূলক ও প্রধান কূটনীতিকের গুণাবলীর সমন্বয় থাকবে। নির্বাচনের আগে হিলারি ছিলেন ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী তবে সারা বিশ্বের সঙ্গে আমেরিকার ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্ক পুনরায় গড়ে তুলতে ওবামার মতো একই দৃষ্টিভঙ্গী তিনিও পোষণ করতেন। ওবামার আগের রিপাবলিকান সরকারের সময় বিভিন্ন দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এক্ষেত্রে হিলারি সাফল্যের সাক্ষর রেখেছেন।
হিলারি ইরানের উপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপকে সম্ভব করে তুলতে সাহায্য করেন। এই কঠোর বিধি-নিধেধের ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত ইরান গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু চুক্তি করতে বাধ্য হয় যা এখন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
তিনি আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাও গড়ে তোলেন। তিনি চীনের সঙ্গে সংলাপ ব্যাপকতর করে তুলতে এবং এশিয়া আঞ্চলে ওয়াশিংটনের প্রাতিষ্ঠানিক বন্ধন বৃদ্ধির জন্যও কাজ করেছেন।
ফার্স্ট লেডি থাকার সময় নারীদের প্রতি আচরণের জন্য তিনি চীনের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। পরে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য তিনি কাজ করলেও বেইজিং সরকারের মানবাধিকার রেকর্ডের সামালোচকও ছিলেন।
আরব বসন্তের আগে ২০১১ সালের জানুয়ারীতে মিসেস ক্লিনটন এক ভাষণে আরব নেতাদের সমালোচনা করে বলেছিলেন, তাদের দেশগুলোর বালির গভীরে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যদি তারা তাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা উদার এবং অর্থনীতিকে স্বচ্ছ না করে তাহলে তাদের সামনে বিপদ রয়েছে। অবশ্য তার সময়ে ইসরাইলী-ফিলিস্তিনী সংকট আরো গভীর হয়েছে এবং তিনি এই সংকটের কারণসমূহ দূর করতে পারেননি।
সামরিক শক্তি ব্যবহার প্রশ্নে ওবামার চেয়ে হিলারি বেশী কঠোর। যেমন তিনি সিরিয়ায় নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠার জন্য সম্প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র যোগানোর প্রতিও তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
সিরিয়ায় নো-ফ্লই জোন এখনই সঠিক উদ্যোগ কি না তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও নিঃসন্দেহে এটা বলা যায় নির্বাচিত হলে তিনি রিপাবরিকানদের তুলনায় অনেক বেশী কার্যকর ও বিচার বিবেচনার সঙ্গে সামরিক শক্তি ব্যবহার করবেন।
ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তিগুলো সম্পর্কে মত পরিবর্তনের জন্য হিলারির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তিনি এ ব্যাপারে ভালোভাবে অবহিত ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে নতুন করে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্য শক্তিগুলোর দ্বারা কর্মচ্যুত শ্রমিকদের সাহায্য করতে আগের সরকারগুলোর চেয়ে তিনি তাদের বেশী সহায়তা করতে চান এবং এ ক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষদের জন্য যে কোন রিপাবলিকানের চেয়ে তিনি অনেক বেশী করবেন।
নির্বাচিত হলে মিসেস ক্লিনটনকে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইসুগুলোতে সমালোচনামুখর কংগ্রেসের সঙ্গে একটি দূরূহ আলোচনয় মিলিত হতে হবে। তিনি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে রিপাবলিকানদের দিক থেকে অধিকতর আক্রমণের সম্মুখীন হবেন এটা নিশ্চিত। প্রেসিডেন্ট ওবামাকেও এ ক্ষেত্রে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে।
প্রচারণার এই সময় তাকে ব্যক্তিগত জঘন্য আক্রমণেরও শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিবাহিত জীবন নিয়েও কটূক্তি করেছেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করা আইন সঙ্গত কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে যার যথার্থ জবাব তাকে দিতে হবে।
আমেরিকার জন্য একটি ভিশন তুলে ধরতে ডেমোক্র্যাটদের সঠিক পছন্দ হচ্ছে হিলারি ক্লিনটন। রিপাবলিকান পদপ্রার্থীরা যে ধরণের আমেরিকার চিত্র ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন তা থেকে এই ভিশন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ভিশন হচ্ছে আমেরিকার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সমৃদ্ধি, নারীর অধিকার সমুন্নত, বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের বৈধতার সুযোগ দেয়া, আন্তর্জাতিক জোটসমূহ দৃঢ় করা এবং দেশকে নিরাপদ রাখা।
এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে হিলারিকে যেমন সমর্থন করছে তেমনি রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে জন কাসিচের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। তাদের মতে, আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম উদার ও দারুণ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী হিলারি। আর রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থীর জায়গা রয়েছে কাসিচের।
৩০ জানুয়ারী শনিবার এক সম্পাদকীয়তে টাইমস কর্তৃপক্ষ দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের প্রার্থীদের ব্যাপারে এ মতামত দেয়।
নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে আজ ১ ফেব্রুয়ারী। আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা তাদের মতামত দিয়ে প্রার্থী নির্বাচনের ব্যাপারে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকানসহ অন্যদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
টাইমসের মতে, রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে আলোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়ে না আছে কোন অভিজ্ঞতা, না আছে এ নিয়ে তার কোন আগ্রহ। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন