শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে ব্রিটেনে ৩০ লক্ষাধিক নাগরিকের স্বাক্ষর

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এবার পার্লামেন্টের আলোচনায় উঠছে ব্রেক্সিট-বিরোধীদের আবেদন
ইনকিলাব ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের সদস্য পদ নিয়ে দ্বিতীয় একটি গণভোটের জন্যে এক আবেদনে ৩০ লাখেরও বেশি নাগরিকের সই জমা পড়েছে। গত বৃহস্পতিবারের গণভোটে বেশিরভাগ মানুষ ইইউ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেয়ার পর লোকজন এই পিটিশনে সই করছেন। এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। কারণ সাধারণত কোনো পিটিশনে এক লাখের বেশি স্বাক্ষর থাকলে পার্লামেন্টে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এদিকে, গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসার পর থেকেই উত্তাল যুক্তরাজ্য। ফলাফলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষ রাজধানী লন্ডন ও স্কটল্যান্ডের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। লন্ডনের স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। তারা লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন। আর স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে স্কটল্যান্ডের কয়েকটি শহরেও। যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হতে দ্বিতীয়বারের মতো গণভোটের ডাক দেয়ার কথা জানান স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন। গত বৃহস্পতিবারের গণভোটে ৫২ শতাংশ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে আর ৪৮ শতাংশ মানুষ থাকার পক্ষে রায় দেয়। তবে লন্ডন, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ ভোটার রায় দেয় ইইউতে থাকার পক্ষে। ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা করেছেন, আগামী অক্টোবর মাসে তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। এরপরই দ্বিতীয়বার গণভোটের দাবিতে পিটিশনের উদ্যোগ নেন উইলিয়াম অলিভার হিলে। তিনি বলছেন, আমরা যারা এখানে সই করেছি, তারা সরকারের কাছে আবেদন করছি এমন একটি আইন করতে যে কোনো পক্ষে যদি ৬০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়ে এবং মোট ভোট গ্রহণের হার যদি ৭৫ শতাংশের বেশি না হয়, তাহলে আরেকটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের গণভোটে মোট ভোট পড়েছে ৭২.২ শতাংশ, যা গতবারের সাধারণ নির্বাচনে পড়া ভোটর চেয়েও বেশি। তবে এটা অলিভার হিলে যে ৭৫ শতাংশ ভোটের কথা বলছেন তার চেয়ে কম। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০১৪ সালে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে ভোট পড়েছিল ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে ১৯৯২ সালের পর থেকে কোনো সাধারণ নির্বাচনেই ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি।
হাউজ অফ কমন্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, পিটিশনে সই করার ব্যাপারে বহু মানুষের আগ্রহের কারণে সরকারি এই সাইটটি আপাতত ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার পিটিশন কমিটির জরুরি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। আরেকটি আবেদনে লন্ডনের স্বাধীনতা ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে মেয়র সাদিক খানের প্রতি। ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। ওদিকে শনিবার ইইউর প্রতিষ্ঠাকালীন ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকে ব্রিটেনকে ইইউ ছাড়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বুধবার ইইউর বাকি ২৭ টি দেশের নেতারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জরুরি বৈঠকে বসবেন। যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে ইইউতে প্রবেশের ইচ্ছে জানিয়েছে স্কটল্যান্ড। ব্রিটেনের পর এবার ফ্রান্সেও গণভোটের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির ডানপন্থী দল ন্যাশনাল ফ্রন্ট। দেখা যাচ্ছে, স্বাক্ষরদাতারা বেশিরভাগই লন্ডন, ব্রাইটন, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ এবং ম্যানচেস্টার অঞ্চলের বাসিন্দা। গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অনলাইন পিটিশনটিতে যে পরিমাণ হিট পড়েছে তাতে ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করেছে। পিটিশনের জনপ্রিয়তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, বিষয়টি অবশ্যই সংসদীয় বিতর্কের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তোলা হবে। দ্বিতীয়বার গণভোটের বিষয়টি যুক্তরাজ্যের আইন সমর্থন করে কিনা তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট না। অনেকে বলছে, যুক্তরাজ্যের আইনে এধরনের বিধান আছে। তবে এখনো ব্রিটিশ আইন কিংবা ইউরোপের কোনো আইনে এ ধরনের বিধান খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন