সাতক্ষীরার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। একই সাথে পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় তার অপর সহযোগী জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ ইসালামের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজানুজ্জামান রিমান্ড শুনানি শেষে সাদিককে অস্ত্র মামলায় দুই দিন ও পর্নোগ্রাফি মামলায় সাদিক ও আকাশকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় কাঠগড়ায় দাড়িয়ে সাদিক উচ্চ স্বরে কাঁদছিলেন ও কালেমা পড়েছিলেন।
তবে, এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে পর্নোগ্রাফি মামলার আসামি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, এশিয়ান টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি তুহিন, যুবলীগ নেতা তুহিনসহ অন্যান্যরা।
প্রসঙ্গত, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর সৈয়দ সাদিকুর রহমান রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। সাদিকের নেতৃত্বে এই বাহিনী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে ঘটাতে থাকে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
গত ৩১ অক্টোবর জেলার কালিগঞ্জের পাওখালিতে অস্ত্র ঠেকিয়ে বিকাশ এজেন্টের ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে সাদিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনার পর পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়। পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ছিনতাই চক্রের দুই সদস্য এবং সাদিকের দেহরক্ষী সাইফুল ও দীপ। সেই থেকে পলাতক ছিল সাদিক।
এদিকে, ছিনতাইয়ের রহস্য উন্মোচন হতে না হতেই বেরিয়ে আসে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সরকারি কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ীদের নগ্ন ভিডিও করে ব্লাক মেইলের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার রহস্য।
এর পরপরই ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয় সাদিক ও ব্লাক মেইলের মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত সুমাইয়া শিমু নামে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের এক যুবতী। তার আগেই গ্রেফতার হয় তাদের আরেক সহযোগী জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ ইসালামসহ সাদিক বাহিনীর আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী।
সাদিক, আকাশ ও শিমুসহ গ্রেফতারকৃত সবাই একে একে ছিনতাই ও ব্লাক মেইলের বিষয়ে নিজেদের কুকর্মের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
তাদের জবানবন্দীতে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক নানা ঘটনার কথা। আর এই চক্রের সহযোগী হিসেবে প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, এশিয়ান টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি তুহিন, যুবলীগ নেতা তুহিনসহ কয়েকজনের নাম।
এই সন্ত্রাসী বাহিনী ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার অন্তত ৭০জনকে এমন ব্লাক মেইলের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় পরপরই সাদিক বাহিনী হত্যা করে শহরের মুন্সীপাড়ার সোহাগ নামে এক যুবককে। একই সাথে পৌরসভার শিবতলায় জমি দখল করে গেলে সাদিকের পিস্তলে গুলিবিদ্ধ হয় তারই এক সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা ফারাবি।
কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধির নিকটাত্মীয় হওয়ায় পার পেয়ে যায় সাদিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন