পাবনায় পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ থাকার পরও খারাপ আবহাওয়া, আমদানি সংকটস নানা অজুহাতে পেঁয়াজের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসায় দাম কমলেও অসাধু এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পেঁয়াজের দাম ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্র ও শনিবার রবিবার ও সোমবার বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে মান ভেদে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়। এই পেঁয়াজ এখন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা প্রতি কেজি। রাতের বাজারে একটু বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। বাজারের এমন অস্বাভাবিক দামে ক্রেতারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন । সদর উপজেলার চরতারাপুর এলাকার কৃষক মো. আবু সালেহ জানান, ‘শৈত্যপ্রবাহ ও বৃষ্টির কারণে শুক্র ও শনিবার তাদের গ্রামের চাষিরা পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে তুলতে পারেনি। কম উত্তোলন করায় বাজারে সরবরাহ কম হয়েছে। এই সুযোগে অসাধু চক্র গুজব ছড়িয়ে বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, সরকারি নজরদারি না থাকায় বাজারে যে যার মতো দাম নির্ধারণ করছে। গত মঙ্গলবার তিনি চার হাজার টাকা মণ দরে দুই বিঘা জমির পেঁয়াজ বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। আমার জীবনে কখনো পেঁয়াজের এমন দাম দেখিনি।
আজ মঙ্গলবার পাবনার বড় বাজারে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন ক্রেতা, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে। তারা জানান, ভারতের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে সম্প্রতি পাগলা ঘোড়ার মতো লাগামহীন হওয়া বাজারের ঊর্ধ্বগতি রুখে দেওয়ার জন্য দেশে উৎপাদিত মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে পর্যাপ্ত রয়েছে। কৃষিবিভাগ এমন আশ^াস দিলেও এখনো নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের বাজার। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়েছে উৎপাদন। বাজারেও সরবরাহে ঘাটতি নেই। তাহলে কেন এই পরিস্থিতি, এর সদুত্তর দিতে পারেননি কোনো ব্যবসায়ীই। সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ বলেন, সামান্য বৃষ্টির অজুহাতে পেঁয়াজের দাম মণ প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে বেড়ে যাওয়া কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। বৃষ্টিতে পেঁয়াজের এমন কোনো ক্ষতিও হয়নি যে, দাম এতো বাড়বে। ‘অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এমন কান্ড ঘটাচ্ছে।’ এসব কাজে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজহার আলী সরকার জানান, চলতি বছর পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষের নয় হাজার ৮০০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত হয়েছে নয় হাজার ২৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে চার হাজার হেক্টর জমির পেঁয়াজ উত্তোলনের পর এখনো মাঠে রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির পেঁয়াজ। ফেব্রুয়ারী শুরুতেই রোপন করা চারা লাগানো পেঁয়াজও বাজারে আসবে। কিন্তু এখন জেলায় যে পরিমান পেঁয়াজ আছে তাতে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা নয়। ।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক দিয়েছেন। যে কোনো সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত কাঁচা বাজারে নামবে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন