মামলা দায়েরের পর এবার বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করলেন নগরীর খ্যাতনামা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ‘দি রিভার ক্যাফে’র স্বত্বাধিকারী বাপ্পী রঞ্জন রায়। তার অভিযোগ, ডিআইজি ও পুলিশ সুপার আইনের লোক হয়েও বেআইনি কাজ করছেন। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত অবমাননারও অভিযোগ করেন বাপ্পী। তিনি পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন বাপ্পী রঞ্জন রায়।
গতকাল দুপুরে বরিশাল জেলা পুরিশ লাইন্সের জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রিভার ক্যাফে রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাপ্পী অভিযোগ করে বলেন, রেস্টুরেন্ট ভবনের জমি পুলিশ লাইনের হওয়ায় সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে তার মালিক পুলিশ সুপার। ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন পুলিশ সুপারের সাথে ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়। যার মেয়াদ ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়। এর মধ্যে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় করে রেস্টুরেন্টের আনুসঙ্গিক সংস্কার করা হয়। যে কারণে পরবর্তীতে চুক্তিপত্র ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এই চুক্তির সময়ের মধ্যে পুলিশ সুপারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকায় ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর চুক্তির মেয়াদ ২০২৮ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ করা হয়।
কিন্তু বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির চিঠির প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি পুলিশ হেডকোয়াটার্স পুলিশ সুপারের সাথে সর্বশেষ চুক্তিপত্র বাতিল ঘোষণা করলে পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে সে চিঠি আমাকে প্রেরণ করা হয়। চিঠি চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ চুক্তিপত্র বাতিলের আদেশ স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করে। এই আদেশ বলবৎ থাকা অবস্থায় গত ৩ নভেম্বর পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ক্যাফেটোরিয়ার পিছনের অংশ জরুরি ভিত্তিতে অপসারণ করার জন্য চিঠি প্রেরণ করেন। যা বেআইনি বলে দাবি করেন বাপ্পী রঞ্জন। এ কারণে গত ৫ জানুয়ারি বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করার পর পরই পুলিশ সুপার প্রতিষ্ঠানটির পানির লাইন কেটে দেয়। যা এক দিকে উচ্চ আদালতকে অবমাননা অন্যদিকে বেআইনি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি কাজের জন্য ক্যাফেটোরিয়ার পিছনের মাত্র ১২ ফুট জমি দরকার। যা দিতে সে বাধ্য। শুধু সেই টুকু ছাড়ার জন্য তাকে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি মামলাসহ যা যা করছেন তা দুঃখজনক। তিনি ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন আমাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী লোককে দিয়ে ফোন করাচ্ছেন।
এসপি আরো বলেন, আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, ২০১৩ সালে চুক্তিপত্রটি বাড়িয়ে এক লাফে ২০২৮ সাল পর্যন্ত করা হয়। যা অস্বাভাবিক। পুলিশ সুপার জানান, আমি ঢাকায় আছি। বরিশালে ফিরেই আপনাদেরকে বিষয়টি পরিস্কার করব। পাশাপাশি একই সাথে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করবেন বলেও জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন