শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

নতুন আশা দেখাচ্ছে বিসিবি!

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে প্রতিদিনই যোগ পাচ্ছে নতুন মাত্রা। একদিন আগেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতি শেষ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরের সকল সম্ভাবনা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দেয়া ‘দুই কিস্তিতে সফরের প্রস্তাবে রাজি নয়’- পিসিবির দেয়া এমন বিবৃতির পরদিনই বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনাল দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয় আইসিসির ব্যবসা ও অর্থ বিভাগের প্রধান এহসান মানিকে। যিনি আবার পিসিবির সভাপতিও। এরপরই নতুন মোড় নিয়েছে বিসিবির এক উদ্যোগে। নতুন করে ক্রিকেটারদের সম্মতি চায় বিসিবি। নির্ভরযোগ্য এক সূত্র নিশ্চিত করেছে, গতকালই তাদের নিয়ে বসেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

‘নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান সফরে যেতে রাজী নয় ক্রিকেটার ও কোচদের অনেকেই’- বেশ কিছুদিন আগে নাজমুলের এমন মন্তব্যের পরই মূলত সফরের অনিশ্চয়তার শুরুটা হয়েছিল। এরপর থেকেই প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনায় সফরের আকাশে জমা হয়েছিল একরাশ কালো মেঘ। তবে কী ধীরে ধীরে কাটতে শুরু তরেছে তা! টেস্ট সিরিজ নিয়ে ধোয়াশা শুধু বিসিবি-পিসিবি কুটনীতিতে আটকে নেই। পাকিস্তানে টেস্টের ব্যাপারে এখনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে। শুধু সরকার নয় ক্রিকেটারদের তরফ থেকেও আপত্তি এক মাস টানা পাকিস্তানে থাকার ব্যপারে। বোর্ড কর্তারা বেশ কবারই কথা বলেছেন সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে। গতকালই নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র টেস্ট ক্রিকেটার জানিয়েছেন, পাকিস্তান যেতে বিসিবির প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন তিনি।

যেকোনো সফরের আগে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়েই দল করতে বসেন বিসিবির নির্বাচকেরা। সে রীতি মেনে পাকিস্তান সফরই যখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে বন্দী, সেখানে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু-হাবিবুল বাশারের নির্বাচক কমিটি কি করে দল নির্বাচন করেন! তাদের পক্ষ নিয়েই গতকাল যেমন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান আরও খোলাসা করলেন, কেন তারা লম্বা সময় পাকিস্তান সফর করতে চান না, ‘পাকিস্তানে যেভাবে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে, খেলোয়াড়দের জন্য খেলায় প‚র্ণ মনোযোগ রাখা কঠিনই। যখন মাঠে যাবেন তখন বোঝা কঠিন যে ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছেন নাকি যুদ্ধ করতে যাচ্ছেন! চারদিকে এত নিরাপত্তাবাহিনী... রুমের সামনে যদি সারাক্ষণ একে-৪৭ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কেউ, হোটেলেও খেলোয়াড়েরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে না। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হচ্ছে। আমি মনে করে খেলোয়াড়েরা যখন খেলবে তখন শুধু খেলাটাই যেন মাথায় থাকে।’

তবে সফরের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্তটি আসতে পারে আগামী ১২ জানুয়ারির বোর্ড সবার পরই। যদি সবকিছু ঠিক থাকে ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরুর কথা ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাকি দুটি ২৫ ও ২৮ জানুয়ারি। এরপরই শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। যেটি খেলতে বিপিএল ফাইনালের পরদিনই (১৮ জানুয়ারি) দেশ ছাড়ার কথা বাংলাদেশ দলের।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে বিসিবি কেবল টি-টোয়েন্টি খেলতে সেদেশে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল। আর টেস্ট সিরিজ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার ইচ্ছা জানিয়েছে তারা। বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত জানার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে পাকিস্তানের কাছ থেকে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার আহŸান প্রত্যাখ্যানও করে সফরই বাতিল করে দেয় প্রতিবেশি দেশটি।

কারণ হিসেবে পাকিস্তানের কঠিন ক্রিকেটীয় সূচীকে সামনে এনেেেছ দেশটির ক্রিকেট প্রশাসন। ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত চলবে পিএসএল। এবার ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি লিগের গোটা আসরটিই নিজেদের দেশের মাটিতেই করতে চাইছে পাকিস্তান। এর পরপরই শুরু হবে তাদের ঘরোয়া ওয়ানডে টুর্নামেন্ট কায়েদ-ই-আজম ট্রফি। সেটি শেস করেই গ্রীষ্মকালীন সফরসূচিতে পাকিস্তান যাবে নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডস হয়ে ইংল্যান্ডে। সেপ্টেম্বরে আছে ঘরের মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সূচক এশিয়া কাপ। তবে গতকালের এই বোর্ড-ক্রিকেটারদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ফলপ্রসূ হলে খুব শিগগিরই সফরের ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যেতে পারে সরকারের কাছ থেকেও এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা।

২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যায় পাকিস্তানে। এরপর সীমিত পরিসরে ক্রিকেট ফিরলেও বেশিরভাগ দলই পাকিস্তানের হোম সিরিজ খেলেছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। দশ বছর পর এবারই প্রথম শ্রীলঙ্কা দল পাকিস্তানে গিয়ে টেস্ট খেলে এসেছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজ খেলার পর বাংলাদেশকে নিজেদের দেশে নেওয়ার ব্যাপারে চাপ বাড়িয়েছে পাকিস্তান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন