‘ভাল ডায়েট’ এর অর্থই হচ্ছে বয়স এবং শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা। অনেকসময় নানাধরনের শারীরিক সমস্যা ঘিরে ধরে কিন্তু নিয়মমাফিক চললে এসব সমস্যা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব। প্রয়োজন রোজকার জীবনে একটু ডিসিপ্লিন এবং সঠিক ডায়েট ও ফিটনেস প্ল্যান। তাহলেই দেখবেন বয়স ধরে রাখা কোনও সমস্যাই নয়। আর বয়স মানে তো শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মনটাকে সজীব সর্বোপরি ভাল থাকুন। তাহলেই দেখবেন, বয়সটা কেবল একটা সংখ্যা মাত্র।
যেকোনও বয়সেই সুস্থ এবং ফিট থাকার জন্য ওয়র্কআউট খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে বয়সের সঙ্গে প্রয়োজন বুঝে ওয়র্কআউট প্ল্যান বেছে নেওয়া উচিত। সঠিক ফিটনেস প্ল্যানের অন্তর্গত তিনটি বিষয়, এক্সারসাইজ, ডায়েট এবং মানসিক স্বাস্থ্য।
তিরিশের পর থেকেই ধীরে ধীরে মাসল ক্ষয় হতে থাকে। যাঁরা সারাদিন বসে কাজ করেন, কায়িক শ্রম একেবারেই হয় না তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও প্রকট। আসলে পেশি যত বেশি ব্যবহার হয় ততই পেশির ফাইবার এবং শক্তি বাড়ে। এখন পেশি যত বেশি ক্ষয় হবে ততই বার্ধক্য আসতে থাকে। তাই পেশিকে বজায় রাখতে হলে জোর বাড়ানোর এক্সারসাইজ় করা উচিত। তিরিশের মধ্যে বয়স হলে শারীরিক সমস্যা থাকে না বা কম থাকে। তাঁরা পায়ের জন্য স্কোয়াট, সিঙ্গল লেগ ডেড লিফ্ট, স্টেপ আপ এইধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। এতে শরীর টানটান থাকে, পেশি বজায় থাকে। ফলে বয়সজনিত ছাপ পড়ে না।
চল্লিশের পর কিন্তু অনেকেরই হাঁটুতে ব্যথা শুরু হয়। ফলে স্কোয়াট, ক্রাঞ্চ এই ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। এরকম ক্ষেত্রে এক্সারসাইজে একটু বদল আনতে হবে। যেমন পায়ের জোর বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন ফিটেড লেগ এক্সটেনশন, লেগ প্রেস ইত্যাদি। স্টেপ আপ করুন ছোট বক্সে। এতে হাঁটুতে অনেক কম চাপ পড়ে। কোমরে ব্যথা থাকলে কোর এক্সারসাইজ় বেছে নিন। যেমন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ ইত্যাদি। একে পেটের মাসল শক্তিশালী হয়। এছাড়া একটা বয়সের পর ডায়াবিটিস, হাই কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। এইসময় অনেকেই সহজ সমাধান হিসেবে হাঁটা বা জগিং বেছে নেন। কিন্তু আধুনিক রিসার্চ বলছে অনেকক্ষণ ধরে হাঁটা কিন্তু হাঁটুর জন্য ভাল নয়। কারণ বেশি হাঁটলে হাঁটুর বন্ধনীর অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ওভার ইউস ইনজুরি হয়, যার থেকে আর্থ্রাইটিসের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
পঞ্চাশের পর কিন্তু এক্সারসাইজে অনেক বদল আনতে হয়। এইসময় শরীরে নানারকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের ডায়াবিটিস, হার্টের সমস্যা, আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হন। পাশাপাশি দেখা দেয় ওবিসিটি। তাই এক্সারসাইজ় নির্বাচন করতে হবে খুব সতর্ক ভাবে। সবচেয়ে ভাল হয় কোনও একজন বিশেষ়জ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ওয়র্কআউট প্ল্যান করলে। তাছাড়া এই বয়সে অনেকসময়ই অবসাদ ঘিরে ধরে। তাই এক্সারসাইজের পাশাপাশি অনেকটা গুরুত্ব দিয়ে হবে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে।
বয়সকালে সবার যে এক সমস্যা হবে তা নয়। কারও বয়সের সঙ্গে শরীরে ক্যালশিয়ামের অভাব হয়, কারও বা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, কারও শুগার বাড়তে পারে। সুতরাং ডায়েট প্ল্যানটাও আলাদা হতে হবে। কী খাবেন, কী খাবেন না, তা নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন। একটু নিয়ম মেনে চলা আর ডায়েটে কিছু রদবদল, এটাই সুস্থ ও সুন্দর থাকার চাবিকাঠি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন