শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে মিয়ানমার-বাংলাদেশ একমত

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবি ডিজি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মানব ও ইয়াবা পাচার বন্ধে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। গতকাল বুধবার পিলখানা বিজিবি সদর দফতরে বিজিবি ও মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ ফোর্সের (বিজিপি) উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সীমান্ত সম্মেলন শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম এ সব কথা বলেন।

মিয়ানমারের সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ওই দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে মিয়ানমার পুলিশ প্রধানের এমন অভিযোগের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই এবং বাংলাদেশের ভূমি কোনো অপরাধী অথবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয় না। এর পরও সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্যাম্প বা আস্তানা থাকার তথ্য পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে শূণ্যরেখার ৫০ মিটারের বাইরে মাইন থাকলে সেটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের দেখার বিষয় হলো শূণ্যরেখা থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত মাইন আছে কী না। এরপর তারা মাইন রাখলে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁঁটাতারের বেড়া এবং মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিবি প্রধান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে সেনাবাহিনী। তবে আমরা বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এটি পাস হলে শুরুতে যেসব এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে সেদিকে বেড়া দেওয়া হবে।

ইয়াবা চোরাচালান বন্ধে মিয়ানমার তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা জব্দ ইয়াবা নাফ নদিতে ফেলে দিয়েছেন- আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তারপরও তাদেরকে মাদকবিরোধী অভিযানে আরো তৎপর হতে আহŸান জানিয়েছি।

বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তরে ইয়াবার কারখানা পরিচালনা এবং ইয়াবা পাচারের বিষয়টি সম্মেলনে উত্থাপন করেন। এ প্রসঙ্গে বিজিপি প্রধান জানান, এ ধরনের তথ্য আমাদের জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মাদক, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো আরও জোরদার করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলে একযোগে সমন্বিত টহল জোরদার করতে উভয় দেশ সম্মত হয়। উভয় বাহিনীর যৌথ টহলের ফলে বিগত একবছরে ইয়াবা পাচার অনেকটা কমে এসেছে বলেন উল্লেখ করেন।

বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, মানব পাচার, অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম ও মাদক পাচার বন্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষত বিওপি বা ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রতিনিয়ত যোগাযোগের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সীমান্ত এলাকায় মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্য বিশেষত ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বজায় রাখবে এবং মিয়ানমার পক্ষ তার জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুযায়ী মাদকবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। উভয় পক্ষই একে অপরের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া সীমানা রেখার উভয় পার্শ্বে ৫০ মিটার এর মধ্যে যে কোনো ধরনের সীমানা লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এছাড়া উভয় পক্ষই সীমান্তে গোলাগুলি বা গুলি চালানোর ঘটনা (যদি থাকে) তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একে অপরকে জানাতে সম্মত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, উভয় পক্ষ নিজ দেশের নাগরিক কর্তৃৃক অজ্ঞতাবশত সীমান্তরেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে উভয়ে দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী তাদেরকে ফেরত পাঠাতে তৎপর থাকবে। উভয় পক্ষই সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর সমাধানে সঠিক তথ্য আদান-প্রদান করতে সম্মত হয়। সীমান্ত সুরক্ষা ও যথাযথ আইন প্রয়োগ নিশ্চিতকরনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তে যৌথ টহল পরিচালনা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। গতকাল যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে (বিজিবি) ৭ম সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন