আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শেষ দু’টি ম্যাচের মাধ্যমেই সমাপ্তি ঘটবে গ্রæপপর্বের। তবে কি আশা করছেন? উত্তেজনা, প্রতিদ্ব›দ্বীতা? এই আশা করে থাকলে হয়তো ভুলই করছেন। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনকে ১১ রানে হারিয়েছে রংপুর রেঞ্জার্স। তাতে পয়েন্ট টেবিলে পেছালেও আপাতদৃষ্টিতে কোন ক্ষতি হয়নি ঢাকার। জিতে আবার লাভ হয়নি রংপুরেরও। আগেই বিদায় নেয়া রংপুর পেয়েছে সান্তনার জয়। আর হেরে পয়েন্ট টেবিলের তিনে অবস্থান করছে ঢাকা। তবে বিপত্তি ঘটেনি এই ম্যাচ। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ৯২ রানে হারে ¤øান হয়ে গেছে পয়েন্ট টেবিলের সৌন্দর্য। আজ প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স লড়বে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে। আরেক ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনের প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। তবে এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ে কারোই তেমন কোন মাথাব্যাথার কারণ নেই। সহজ কথায় এই চার দলই যে পৌঁছে গেছে শেষচারে।
গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচ রংপুরের জন্য ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার। অন্যদিকে ঢাকার সুযোগ ছিল শীর্ষে ওঠার। জিতলেই সেরা দুইয়ে থাকা অনেকটাই নিশ্চিত হতো। কিন্তু এমন ম্যাচে রংপুরের কাছে হেরে যায় ঢাকা। আসরের শেষ ম্যাচে দারুন জ্বলে ওঠে রংপুরের বোলাররা। ফলে ঢাকাকে ১১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএল শেষ করল দলটি। টস জিতেছিল ঢাকাই। প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। বল হাতে তিনিই প্রথম রংপুর শিবিরে আঘাত হানেন। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক শেন ওয়াটসনকে ফেরান তিনি। তার সঙ্গে দুই স্পিনার মেহেদী হাসান ও শাদাব খানও দারুন বোলিং করেন। ফলে দলীয় ৫০ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। তারপর বাকিদের ছোট ছোট সংগ্রহে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে দলটি। ঢাকার পক্ষে ২৩ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন থিসারা। ২৫ রানের বিনিময়ে শাদাবের শিকার ২টি।
মাঝারি ধরণের লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ৯ রানেই এনামুল হক বিজয়কে হারায় ঢাকা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে মেহেদী হাসানকে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। এরপর মেহেদী আউট হলে মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। হাল ধরতে পারেননি কোন ব্যাটসম্যান। স্কোরবোর্ডে ৪০ রান যোগ করতে ৭টি উইকেট হারিয়ে বড় বিপর্যয়ে পড়ে দলটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন তামিম। ৩৩ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। মেহেদী হাসান করেন ২০ রান। রংপুরের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জুনায়েদ খান, তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। ১টি করে শিকার করেছেন লুইস গ্রেগরি ও মুস্তাফিজুর রহমান।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে একই ভেন্যুতে টস জিতে খুলনাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কুমিল্লা। শুরুতেই ইরফানের ঘূর্ণিতে ফিরে যান শান্ত। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রুশোও (২৪)। তবে এরপর মেহেদী মিরাজ ও মুশফিকুর রহিমের জুটি দলকে পৌঁছে দেয় পর্বতসম রানে। মুশফিক ৯৮ রানে ও মিরাজ ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেও সেঞ্চুরি করতে পারেননি মুশফিক। এবারের আসরে এরআগেও ৯৬ রান করেছিলেন তিনি। ২০ ওভারে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১৮ রানে। মুজিব ও ইরফান একটি করে উইকেট পান।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় থারাঙ্গা ৩২, ইয়াসির ২০, ফারদিন ২২ রান করলেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ঠ ছিলনা। ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান তুলেছে কুমিল্লা। শহিদুল ৩টি, আমির ও আমিনুল পেয়েছেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া ফ্রাইলিঙ্ক ও শামসুর একটি করে উইকেট পান। এই জয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠে এসছে খুলনা।
পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় হার পয়েন্ট রানরেট
চট্টগ্রাম ১১ ৮ ৩ ১৬ ০.২৩৮
খুলনা ১১ ৭ ৪ ১৪ ০.৮৯৯
ঢাকা ১১ ৭ ৪ ১৪ ০.৭০১
রাজশাহী ১১ ৭ ৪ ১৪ ০.৩৬১
কুমিল্লা ১২ ৫ ৭ ১২ -০.৩৩৫
রংপুর ১২ ৫ ৭ ১০ -০.৮২৬
সিলেট ১২ ১ ১১ ২ -০.৮২২
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন