বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আজ উপ-নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়াই চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম ৮ আসনে নৌকা নাকি ধানের শীষ : ইভিএমের দিকে সবার চোখ

রফিকুল ইসলাম সেলিম ও আইয়ুব আলী | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে উপ-নির্বাচন আজ সোমবার। এ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচনই চ্যালেঞ্জ। এ উপ-নির্বাচনে শতভাগ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সবার ঝোঁক ইভিএমের দিকে। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। ইভিএমে ভোটগ্রহণে ‘আস্থা ও অনাস্থার’ সঙ্কটের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সরকারি দলের নেতাদের মতে, ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট হবে। বিএনপি অহেতুক মিথ্যাচার করছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বরছেন, ইভিএম ভোট কারচুপির যন্ত্র। এ নির্বাচনে ছয় প্রার্থীর মধ্যে মূলত লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও ধানের শীষের প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মধ্যে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতারা এ নির্বাচনকে নিজেদের মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছেন। এ আসনে তিনটি নির্বাচনে (২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে জাসদের (একাংশ) কার্যকরী সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৭৩ সালের পর আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া। একাধিকবার আসনটি থেকে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচিত হন। জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবেন তা নিয়ে এখন চলছে তুমুল আলোচনা। শেষ হাসি কে হাসবেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ নাকি বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান।
এছাড়া এ উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন- ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ, বিএনএফ চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক ও ন্যাপের বাপন দাশ গুপ্ত। চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পশ্চিম গোমদন্ডী, পূর্ব গোমদন্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯২২ ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪ জন।
১৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে নির্বাচনে ৫৮টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৮টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। উপ-নির্বাচনে শতভাগ ইভিএম’এ ভোটগ্রহণের জন্য আড়াই হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৭০টি কেন্দ্রের ১১শ’ ৯৬টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সতর্কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী : উপ-নির্বাচনকে ঘিরে সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মহানগরীর অংশে ১০১টি এবং বোয়ালখালীর ৬৯টি ভোটকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। ভোটের পরিবেশ নির্বিঘœ করতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে থাকছে আধা-সামরিক বাহিনী বিজিবি, এলিট বাহিনী র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএন ও আনসারের বিপুল সংখ্যক সদস্য।
ইভিএমে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএমসহ নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে গেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের চাহিদা মতো সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীর কেন্দ্রগুলোতে ভোটারেরা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন একই সাথে ভোটের পরেও যাতে পরিবেশ শান্ত থাকে তা নিশ্চিত করা হবে।
সিএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে পাঁচ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার এবং ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) কেন্দ্রে ছয় জন পুলিশ ও ১২ জন করে আনসার মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের ২৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। মাঠে থাকবে বিজিবি, র‌্যাব, এপিবিএনে বিশেষ টিম।
পুলিশ সুপার নূরেআলম মিনা বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা পুলিশ। বোয়ালখালীর ৬৯টি কেন্দ্রে এক হাজার ২৫০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৮০০ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন