মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় শেষ রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দিগন্ত ঢেকে থাকার সাথে উত্তর-পূবের হিমেল হাওয়ায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের কষ্ট আর দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না। হাসপাতালগুলোতে ঠাÐাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিকেলের পর থেকে বেশিরভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মৃদু শৈত্য প্রবাহের পরে গত চার দিন যাবৎ কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়া মানুষের কষ্টকে যথেষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। তাপমাত্রার পারদও গত তিনদিনে ক্রমশ নামছে।
দিনের বেলা কুয়াশার কারণে সূর্য আড়াল থাকায় শীতের অনুভ‚তি যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ছে। চলতি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলেও তা ছিল গত বছরের চেয়ে ৩.৪ ডিগ্রি বেশি।
অব্যাহত কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়ায় শীতকালীন সবজিসহ বোরো বীজতলার ক্ষতিও যথেষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। পৌষের অকাল বর্ষণের পরে কুয়াশায় গোল আলুর গাছ ‘লেট বøাইট’ রোগে আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়ছে। বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরি’র কবলে পড়ছে। শীতকালীন সবজির গুণগত মান ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। শীতকালীন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১শ’ রোগী ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও ডায়রিয়াজনিত কারণেও দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন।
এর বাইরেও প্রতিদিন আরো কয়েকগুণ রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে এবং বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিক ছাড়াও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে ভীড় করছেন। আর রোগে আক্রান্তদের সিংহভাগই শিশু ও বয়স্ক। দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ হাসপাতালেই চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস থেকে দক্ষিণাঞ্চলে ঠাÐাজনিত রোগ বালাইসহ ডায়রিয়া চিকিৎসায় ৪ শতাধিক মেডিকেল টিম কাজ করার কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের তরফ থেকে শিশু ও বয়স্কদের ঠাÐা এড়িয়ে চলাসহ গরম পানি পান করা ও হাল্কা গরম পানিতে শিশু ও বয়স্কদের গোসল করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অনুর্ধ্ব ছয় মাস বয়সি শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখার কথা বলেছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা।