শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ম্যাখোঁর সামনে কঠিন পরীক্ষা

বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাজপথ এই সপ্তাহে আরও একবার ব্যানার, বেলুন, বিক্ষোভকারী, দাঙ্গা পুলিশ এবং টিয়ার গ্যাস দিয়ে পূর্ণ হয়েছিল। পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে গত ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘট, ক্রিসমাসের পুরো ছুটিতে অব্যাহত থেকে এখন দ্বিতীয় মাসে প্রবেশ করেছে। এই সপ্তাহে আইনজীবী, শিক্ষক, হাসপাতালের কর্মী এবং অন্যান্যরা এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।

এটি ছাড়িয়ে গেছে ১৯৯৫ সালের বিক্ষোভকেও, যার জেরে তৎকালীন আলেন জুপ্পের সরকার পেনশন সংস্কার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। ডিসেম্বরেই ইমানুয়েল ম্যাখোঁর আমলে অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি লোক রাস্তায় নেমেছিল। ফরাসী বাধ্যতামূলক-পেনশন সিস্টেমটি ৪২ টি ভাগে গঠিত, যার ফলে মোট জিডিপির ১৪ শতাংশ খরচ হয়। যেহেতু জনগণের টাকা দিয়েই পেনশন প্রদান করা হয়, তাই জটিল পেনশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন বলে মনে করছে সরকার। সরকারী পেনশন উপদেষ্টা পরিষদের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে সামগ্রিক পেনশনের ঘাটতি ৮০০ কোটি ইউরো থেকে ১৭০০ কোটি ইউরোর মধ্যে পড়বে।

পরবর্তী নির্বাচনের মাত্র দু’বছর বাকি, এবং ব্যয়বহুল জ্বালানির বিরুদ্ধে (হলুদ জ্যাকেট) বিক্ষোভ মোকাবেলার পরে ম্যাখোঁ সম্ভবত কোনও প্রযুক্তিগত স্থিরতা বেছে নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, পেনশন চার্জের ০.৭ শতাংশ-পয়েন্ট বৃদ্ধি, ২০২৫ সালের মধ্যে অর্থের ঘাটতি বন্ধ করবে। তবে ম্যাখোঁ ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য শ্রম, প্রশিক্ষণ ও কল্যাণ ব্যবস্থার পুনর্র্নিমাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যাতে চাকরির সৃজন, উৎসাহীকরণ ও ফ্রান্সকে ‘অবসর’ যুগের জন্য অভিযোজন করতে, গতিশীলতা স্বাচ্ছন্দ্য করতে এবং বেকারদের রক্ষা করতে।

এই লক্ষ্যে, ম্যাখোঁ তার ইশতেহারে শপথ করেছিলেন যে, পেনশনের ৪২ টি বিধি একত্রিত করে সকলের জন্য একই পয়েন্ট-ভিত্তিক সিস্টেম চালু করবেন। তবে এর সাথে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো একমত হয়নি। কনফেডারেশন জেনারেল ডু ট্র্যাভেল (সিজিটি), যাদের রয়েছে দীর্ঘ শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস, প্রস্তাবিত নতুন পয়েন্ট-ভিত্তিক সিস্টেমটির বিরোধিতা করে। এটি ম্যাখোঁকে ‘অতি ধনীদের প্রেসিডেন্ট’ বলে পেনশন ব্যবস্থা ধ্বংস করার অভিযোগ করেছে। সরকার তার পরিকল্পনা বাতিল না করা পর্যন্ত সিজিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজ করতে ফিরে যেতে অস্বীকার করেছে।

গত ৭ জানুয়ারি ইউনিয়ন ও সরকারের মধ্যে আলোচনা আবার শুরু হয়েছিল। কিন্তু ম্যাখোঁ এই সংস্কার আনতে বদ্ধপরিকর। সুতরাং কোনও আপসই সিজিটিকে সন্তুষ্ট করবে না। পরিবর্তে সরকার আরও মধ্যপন্থী কনফিডারেশন ফ্রাঞ্চাইজ ডেমোক্র্যাটিক ডু ট্র্যাভেল (সিএফডিটি) এর সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করছে, যা বর্তমানে দেশটির বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ নববর্ষের বক্তৃতায় বলেছেন, আগামী ২২ জানুয়ারি আইনটি পার্লামেন্টে তোলা হবে। নতুন এই আইনে আরও অধিক সময় কাজ করতে পারবেন শ্রমিকরা। চলমান ধর্মঘট নিয়ে এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ মানুষ ধর্মঘটের পক্ষে, যাদের অধিকাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে। এ অচলাবস্থা দূরীকরণে সরকার ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর মধ্যে কার্যকর সংলাপের দাবি জানিয়েছেন ফ্রান্সের সাধারণ নাগরিকরা। সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন