বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

১৪ সেলাই নিয়েও খেলবেন মাশরাফি!

অঘোষিত ‘নকআউটে’ ঢাকা-চট্টগ্রাম ষ ফাইনালেচোখ খুলনা-রাজশাহীর

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনের সামনে ছিল শীর্ষে ওঠার হাতছানি। মুমিনুল হক-মেহেদী হাসানের ব্যাটে সে আশাকে আরও পোক্তই করেছিল দলটি। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্তর চওড়া ব্যাটে ভর করে ২০৭ রানের লক্ষ্য হয়ে গেল মামুলি। ১১ বল হাতে রেখেই জিতল খুলনা টাইগার্স। তাতেই কেল্লা ফতে। কপাল পুড়ল স্বাগতিক দলের। তবে দিনশেষে ঢাকার হারকে ছাপিয়ে গেছে দলপতি মাশরাফি মুর্তজার চোট।
সেই ম্যাচের একাদশ ওভারের ঘটনা। মেহেদী হাসানের বল উড়িয়ে মেরেছিলেন খুলনার রাইলি রুশো। কাভারে ক্যাচ নিতে বামদিকে ঝাঁপিয়েছিলেন মাশরাফি। ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি। বরং বলের আঘাতে রক্তাক্ত হাত নিয়ে ব্যথার তীব্রতায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। পরে জানা যায়, তার হাতে লেগেছে ১৪টি সেলাই। তবে ঢাকা প্লাটুনের অধিনায়ক তারপরও মাঠে নামতে মরিয়া। হাতে সেলাই নিয়েই তিনি খেলতে চান চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে।

এই চোট সেরে উঠতে ৫-৭ দিন লাগে বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরি। তবে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করলে খেলা সম্ভব বলেও মত তার, ‘হ্যাঁ, যদি কেউ খেলতে চায় তাহলে খেলা সম্ভব, তবে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।’ অন্যদিকে দলের ম্যানেজার আহসানুল্লাহ হাসান বলেছেন, ‘আপনারা তো তাকে চেনেন। তিনি লড়াকু মানুষ। সেলাই নিয়েও তিনি খেলতে চাইছেন। তিনি মাঠে নামতে মরিয়া। অনেক সময় অনেক রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেহেতু মাশরাফির বোলিং হাত না, তাই আমরা আলাপ করে দেখব কী করা যায়। আগামীকাল (আজ) আমরা সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’

আজ দিনের প্রথম ম্যাচেই মাশরাফির ঢাকা ফাইনালের সিড়ির কাছাকাছি পৌঁছতে লড়বে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে। মাশরাফি যদি খেলেন তবে তাকে মুখোমুখি হতে হবে ক্রিস গেইলের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের। তাছাড়া যেকোন আঘাত হতে উঠতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ। বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ জানিয়েছেন, ‘যদি মাশরাফি এবং তার দল মরিয়া হয়, তাহলে আমরা একটা ব্যবস্থা করব। কিন্তু এ ব্যাপারে মাশরাফি বা তার দল এখনও আমাকে কোনো অ্যাপ্রোচ করেনি। আর খেললে ঝুঁকি থাকবে। সেটা মাথায় নিয়েই খেলতে হবে।’

অন্যদিকে ঢাকা চট্টগ্রামের অঘোষিত ‘নকআউট’ ম্যাচে হারলেই বিদায়। তবে বিদায় শব্দটি দ‚রে রেখে আপাতত জয়ের ছকইন আঁকছে চট্টগ্রাম ফ্যাঞ্চাইজি। চট্টগ্রামের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান বলেছেন চট্টগ্রামের হাতে অপশন আছে একটিই- জয়, ‘আমরা যেহেতু নক আউট স্টেজে এসে গেছি জেতা ছাড়া আর কোনো অপশন নেই আমাদের। দুইটা ম্যাচ অনেক ইম্পর্টেন্ট। জেতা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমরা অনেক ম্যাচে টিম হিসেবে খেলার কারণে জিততে পেরেছি। যদি ফাইনাল ধরি আমাদের হাতে তিনটি ম্যাচ থাকবে। তিনটা চিন্তা না করে একটা একটা চিন্তা করাই ভালো।’

গ্রæপ পর্বে দুই বারের মুখোমুখিতে দুইবারই জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তাই একমাত্র এলিমিনেটর ম্যাচে ঢাকার থেকে দাপুটের দিক থেকে চট্টগ্রামই বেশ এগিয়ে থাকবে। নুরুল হাসান সোহান আজ ম্যাচ প‚র্ববর্তী সংবাদসম্মেলনে এসে জানালেন, ঢাকা শক্তিশালী দল, তবে চট্টগ্রাম আগের মতো ভালো খেলে এই ম্যাচ জিততে চায়, ‘কালকে ঢাকার বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচ, আমার মনে হয় পুরোপুরি ফোকাসটা এখানেই দেয়া উচিত। আমরা যদি শতভাগ দিতে পারি তাহলে ভালো কিছু হবে। ঢাকা অনেক শক্তিশালী দল, ভালো দল। আমরা ঢাকার বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জিতেছি। আমার মনে হয় পরবর্তী ম্যাচে যারা ভালো খেলবে, নিজেদের কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারবে তারাই জিতবে। দুইটা দলই ভালো, আশা করি প্রতিযোগীতাম‚লক ম্যাচ হবে।’

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যায় হবে মর্যাদার লড়াই। মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের দুই শীর্ষ দল খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস। যে জিতবে সেই সরাসরি উঠে যাবে ফাইনালে। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারলেও সমস্যা নেই। ফাইনালে ওঠার জন্য আরো একটি সুযোগ পাবে পয়েন্ট টেবিলে এক ও দুই নম্বরে থাকা দল দুটি।
এলিমিনেটর রাউন্ডে জয়ী দল ও প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারা দল দু’দিন বাদে (১৫ জানুয়ারি) অংশ নিবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচে নির্ধারিত হবে আরেক ফাইনালিস্ট। সব লড়াই শেষে বাকি আর এক ম্যাচ। মর্যাদার লড়াইয়ে মিরপুরে মুখোমুখি দুই ফাইনালিস্ট। ১৭ জানুয়ারি নির্ধারিত হবে চ্যাম্পিয়ন দলের নাম। সপ্তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হবে কে জানতে অপেক্ষা করতে হবে!

এবারের বিপিএলের গ্রæপ পর্বের শেষ ভাগের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাল্টে গেছে প্লে-অফের সব হিসেব-নিকেশ। পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখানো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স নেমে গেছে তিনে। ঢাকার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয়ে টেবিলের শীর্ষে খুলনা টাইগার্স। রাজশাহী রয়্যালস নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে আছে টেবিলের দুইয়ে। শীর্ষে থাকা তিন দলেরই পয়েন্ট এক। ১২ ম্যাচে ১৬। বোঝাই যায় বেশ প্রতিদ্বন্দিতাপ‚র্ণ ছিল এবারের আসর।

এবার প্লে-অফেও সেরকমই উত্তেজনা আর জমজমাট লড়াইয়ের প্রত্যাশা। খুলনা-রাজশাহীর ম্যাচ থেকে এক দল নিশ্চিতভাবেই উঠবে ফাইনালে। তবে কোন দলটি উঠবে? নাম না জানা সেই দলের প্রতিপক্ষই বা কে হবে? জানতে ইচ্ছা করছে এই প্রশ্নের জবাব। অবশ্য উত্তরটা পেতে করতে হবে একটাই কাজ। অপেক্ষা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন