৭বছরেও শেষ হচ্ছে না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধীন ফাজিল অনার্স (সম্মান)। ৪ বছরের কোর্স হলেও সেশনজটে জর্জরিত হয়ে আছে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা শেষ হতে দেড় থেকে দুই বছর সময় নিচ্ছে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে অতিরিক্ত মূল্যবান ৩টি বছরের অধিক সময় নষ্ট হচ্ছে। জানা যায়, ফাজিল স্নাতক সম্মান ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ৪র্থ বর্ষ-২০১৭ ও ১৮ সালের চূড়ান্ত পরীক্ষা এখনো সম্পন্ন হয়নি। চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু চাকরিতে আবেদন করতে পারছেনা এমন বিভিন্ন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিলে অনার্সের (সম্মান) মান চালু হয়। তখন থেকে ইবির অধীনে সারাদেশের ৩১ টি মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা ফাজিল অনার্স (সম্মান) কোর্সে ভর্তি হন। ৪ বছর মেয়াদি এই কোর্সের ৪ হাজার ১ শ’ মার্কের উপর পরীক্ষা দেন তারা। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ৩১টি মাদরাসার সবগুলোতে ৫টি সবাজেক্ট দেওয়া হয়নি। কিছু মাদরাসায় দুই একটি করে সাবজেক্ট দেওয়া হয়েছে। আবার যে সব মাদরাসায় সব সাবজেক্ট দেওয়া হয়েছে সেখানে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনটি বর্ষ চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে। বাকি দুটি শিক্ষাবর্ষ ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ চ‚ড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা ৭ বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন এসব পরীক্ষা নেবার আশ্বাস দিলেও সঠিক সময়ে কোন পরীক্ষা নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবে চলতে থাকলে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের সেশনজটে আটকে থাকবে।
জয়পুর হাট মাদরাসার ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আল-কোরআন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রহিম বলেন, ‘সাত বছরেও আমারা পরীক্ষা শেষ করতে পরছি না। ফাইনাল পরীক্ষা কবে হবে তার কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে রেজাল্ট দিতে আরো ৬ মাস কখনও এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই সমস্যার জন্য দায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান অনার্সে সময়মত পরীক্ষা হচ্ছে, দ্রæত রেজাল্ট হচ্ছে এবং তারা সেশনজটমুক্ত। তাছাড়া আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের থেকে টাকার পরিমানও বেশি নেয়। অথচ তারা সঠিক সময়ে পরীক্ষা ও রেজাল্ট দিতে পারে না। এমনকি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬ মাস পরে ভাইভা নিচ্ছে যেটা সম্পূর্ণ অনিয়ম।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমান ইবির অধিনে ফাজিল অনার্স ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ দুটি সেশন রয়েছে। ইতোমধ্যে সেশন দুটি একত্রিত করা হয়েছে। এবছর (২০২০) সালের মধ্যে তাদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে এবং ফলাফর প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন তরা যে সেশনজটের মধে আছে তাদেরকে সেশনজট থেকে মুক্ত করার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসন সর্বত্য চেষ্টা করছে।’ ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘বিষয়টি আমার অগোচরে ছিলো। বিষটি খতিয়ে দেখছি কেনো তাদের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। যাতে তাদের পরীক্ষা দ্রæত নেওয়া হয় এবং ফলাফল প্রদান করা হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন