বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকারদলীয় কর্মকর্তাদের সিটি নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে

গুলশানে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ক্ষমতাসীন সরকার দলের সমর্থিত কর্মকর্তাদের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের ব্যাক গ্রাউন্ড আমরা জানি। কে গাড়ির অনুমোদন নেয়ার জন্য ফাইল বদল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেছেন, কারা নিজের স্কুল পারমিশন নেয়ার জন্য সরকারি জমি নিয়েছেন-এসব খবর আমাদের কাছে আছে। তারপরে এসব মানুষকে যাদের কোনো মোরালিটি নেই, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল’ এর উদ্যোগে বিগত আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের হাতে গুম, হত্যা, পঙ্গু হওয়া নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে এই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে গুম হওয়া ১০ পরিবারের সদস্যদের হাতে শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়।

ইভিএমের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইভিএম দিয়ে কখনোই মানুষের রায়ের প্রতিফলন হবে না। আমরা এখনো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এর বিরোধিতা করছি। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা আজকে জনগণের ভোটারের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এমন একটা সমাজ তৈরি করছে, এমন একটা রাষ্ট্র তৈরি করছে যে সমাজ এবং রাষ্ট্র এদেশের মানুষের ভবিষ্যতকে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারপরও বলি, হতাশ হবেন না, ছেড়ে দেবেন না। নেভার গিভ আপ। যত কষ্ট আসুক, যত যন্ত্রণা আসুক, যত অত্যাচার লাঞ্ছনা আসুক এদেশের মানুষ বার বার উঠে দাঁড়িয়েছে, তরুনরা উঠে দাঁড়িয়েছে, দাঁড়াবে, দাঁড়াচ্ছে। সব জায়গায় প্রতিরোধ হচ্ছে, প্রতিরোধ হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বর্তমানের সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনে চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১০ সাল থেকে আমরা আক্রমণের শিকার হচ্ছি। আওয়ামী লীগ যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে সংগ্রাম করেছিলো, গণতান্ত্রিক লড়াই করেছিলো তারাই স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে দানবে পরিণত হয়েছে। একবার তারা ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলো। ২০০৮ সালের পরে তারা একইভাবে শুধু খোলসটা পাল্টিয়ে দিয়ে ভিন্ন আঙিকে তাদের একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে, নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করবার জন্যে তারা সংবিধান সংশোধন করেছে। এর মধ্যে যারা প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন, রাজপথে নেমে এসেছিলেন তারা আজকে অনেকে আজকে আমাদের মাঝে নেই। তাদের অনেককে এনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন আর খোঁজ নেই, গুম হয়ে গেছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে অথবা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গোটা দেশকে গোটা জাতিকে একটা নির্যাতনের কারখানা তৈরি করে ফেলেছে।

গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের ছোট ছোট সন্তানদের দিকে তাকিয়ে তিনি আবেগ প্রবণ কন্ঠে বলেন, আজকে শিশুরা এখানে আছে। ওরা প্রতিমুহূর্তে ভাবে যে, তার বাবা ফিরে আসবে, আসে না। মা আছেন ভাবেন যে, এই বোধহয় ছেলে দরজা নক করলো, আসে না। স্ত্রী অপেক্ষা করে থাকে কখন তার প্রিয় মানুষটা পাশে আসবে। এই পরিস্থিতি একটা অসহনীয় একটা পরিবেশ, একটা দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। এই সমাজ আজকে কিভাবে এই ধরনের একটা পরিস্থিতি সহ্য করছে-এটাও একটা চিন্তার ব্যাপার। এরা সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নগুলোকে ছারখান করে দিয়েছে, তছনছ করে দিয়েছে। এজন্য তাদের দাম্ভিকতার শেষে নেই। তাদের কথা শুনবেন, তারা যে বক্তব্য রাখে, তারা যে কথা বলে, তার মধ্যে তাদের যে দাম্ভিকতা এটা প্রকাশ পায়। প্রতিমুহুর্তে এতো যে তারা নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে- এজন্য তাদের এতটুকু অনুতাপ পর্যন্ত কখনো হয় না। একনায়কদের, স্বৈরাচারদের কখনো অনুতপ্ত হয় না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ‘সকলকে উঠে দাঁড়ানো’র আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

হত্যার মহাউৎসব চলছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিন/চার বছরের শিশুকে পর্যন্ত হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ যেন একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। মানুষ এখন আর কথা বলে না, কথা বলার সুযোগ নেই। এটাই চেয়েছিলো ওরা (সরকার)। ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে পুরো ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, সেটাই করেছে তারা।

সংগঠনটির সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, সাবেক ছাত্র নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শফিউল বারী বাবু, মামুন হাসান, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, হেল্প সেলের নাসির উদ্দিন শাওন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
রুবেল শিকদার ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:১৩ এএম says : 0
এ আর নতুন কি
Total Reply(0)
তাইজুল ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:১৩ এএম says : 0
িএসব বলে কি আদৌ কোন লাভ আছে ?
Total Reply(0)
আশরাফ ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:১৪ এএম says : 0
নির্বাচনের মাধ্যমে শুধু শুধু দেশের কতগুলো টাকা নষ্ট হচ্ছে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন