বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নালা কেটে আশুরার বিলের পানি নিষ্কাশন

বিলের জমি দখলের তৎপরতা

দিনাজপুর অফিস | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:০৩ পিএম | আপডেট : ৬:৪২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০

দিনাজপুরের আশুরার বিল দখলের দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী আশুরার বিলের অস্থিস্ত রক্ষা করে দেশী বিদেশী মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টির পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরী করা বাঁধ কেটে দিয়েছে ভূমিদুস্যু হিসাবে পরিচিত স্বার্থান্বেষী মহল। কেটে ফেলা অংশ দিয়ে পানি বের হয়ে আশপাশের কয়েক হেক্টর জমির রবি শস্য নষ্ট হয়ে গেছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত বিশাল শালবন সংলগ্ন দুই হাজার হেক্টরের বেশী জায়গা নিয়ে থাকা বিলুপ্ত প্রায় বিলটিতে পানি ধরে রাখার জন্য ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সাবমাজড পাওয়ার ড্রাম তথা বাঁধটি নির্মান করা হয়। দৃষ্টি নন্দিত কাঠের ব্রিজ নির্মানসহ সৌন্দর্য বর্ধন করে নামকরণ করা হয় শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান কিছুদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু সকল শ্রেনীর মানুষের কাছে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবী কতিপয় ভ‚মি দুস্যু বিলটির অস্থিস্ত নিশ্চিহ্ন করে আবাদি জমিতে পরিণত করে ভোগদখলের লক্ষ্যেই এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন। বাঁধটি কেটে দেয়া তবে দিনাজপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য শিবলি সাদিকের ত্বরিত হস্তক্ষেপে আইন শৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় মানুষের প্রহরায় বাঁধটি পুনঃ নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছে।

সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনাজপুর জেলার অন্যতম এবং ঐতিহ্যবাহী আশুরাড় বিলটির অস্থিস্ত বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। শুষ্ক মৌসুমে পানি শুন্য হয়ে পড়া বিলটিকে একটি চক্র অত্যন্ত সু-কৌশলে আবাদী জমিতে পরিণত করতে থাকে। সরকারী জায়গা হলেও তারা বিলটির জায়গায় ধান আবাদ করতে থাকে। এই বিলের পার্শ্বেই অবস্থিত জেলার সর্ববৃহৎ শালবন। বিলটির অস্থিস্ত রক্ষায় দিনাজপুর-৬ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এর প্রচেষ্টায় বিলে পানি সংরক্ষন করে মৎস্য চাষ করার জন্য প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মান করা হয় সাবমাজড পাওয়ার ড্রাম। তৈরী করা হয় দৃষ্টি নন্দন সুদীর্ঘ কাঠের ব্রীজ। বিলের পানিতে উকি মারতে শুরু করে শাপলা ফুলের সমারোহ। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আশুরাড় বিলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আসে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রিয় নারী-পুরুষেরা ছুটে আসে আশুরাড় বিল এলাকায়। এলাকাবাসীর মতে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত একটি চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে আশুরাড় বিল এলাকায় আমন ও ইরি বোরো ধান আবাদ করতে থাকে। বাঁধ নির্মানের ফলে পানি সংরক্ষন হওয়ায় হাত ছাড়া হয়ে ধান আবাদ। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সরকার দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় স্বার্থান্বেষী মহলটি রাতারাতি পাওয়ার ড্রামটির ক্ষতি করে বাঁধটি কেটে দেয়। বাঁধটি কেটে দেয়ায় আশে পাশের কৃষকদের কয়েক শত হেক্টর জমির রবি শস্য নষ্ট হয়ে যায়। বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্থায়ী বাসিন্দারা। তাৎক্ষনিকভাবে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন সংসদ সদস্য। নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার ইনকিলাব প্রতিনিধির কাছে, বাঁধটি কেটে ফেলার কথা স্বীকার করে জানান, জড়িত দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে একটি। বিরামপুর-নবাবগঞ্জ সার্কেল এ এসপি মিথুন সরকার জানান, খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে র‌্যাব সদস্যরা। এলাকাবাসীর সহায়তায় মাটির পাশাপাশি বালু’র বস্তা ফেলে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি পুনঃ নির্মান করা হচ্ছে।

তবে যে কোন সময়ে দূস্কৃতিকারীরা বাধটি আবারও কেটে ফেলতে পারে এই আশংকায় দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি বিল এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসীরা। উল্লেখ থাকে যে বিল সংলগ্ন বিশাল শাল বনটি দীর্ঘদিন ধরেই দুস্কৃতিকারীদের অভয়ারন্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এখানে প্রায়শই হত্যা, রাহাজানীর ঘটনা ঘটে থাকে। কিছুদিন আগেই নবাবগঞ্জ এলাকা থেকে নৈশ কোচে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একদল দৃস্কৃতিকারীকে আটক করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন