শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ডাবল ডিজিটে আসার টার্গেট ব্যবসা সহজীকরণ সূচক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

আগামী দুই বছরের মধ্যে ব্যবসার পরিবেশ সহজীকরণ ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচক ডাবল ডিজিটে আনতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ব্যবসার পরিবেশ সহজীকরণ সূচকে আমরা তেমন এগোতে পারিনি। গত বছরে আট ধাপ এগোলেও সার্বিক বিবেচনায় একে বড় ধরনের অগ্রগতি বলা যাবে না। ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৮তম। অর্থাৎ, আমরা পেছনের সারিতেই রয়ে গেছি। একই সময়ে পাকিস্তান এগিয়েছে ২৮ ধাপ, ভারত ১৪ ধাপ। আরও হতাশার খবর হলো দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে এখনো বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। একমাত্র আফগানিস্তানের চেয়ে আমরা এগিয়ে আছি।

গতকাল রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষের (বিডা) যৌথ উদ্যেগে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সাথে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিডা চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনাম। তারা আমাদের থেকে ৯৯ ধাপ এগিয়ে রয়েছে। তাদের বর্তমান ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে অবস্থান মাত্র ৬৯। বিদেশি ব্যাবসায়ীরা যদি আমাদের দেশে এসে দেখে ব্যবসার পরিবেশটা সহজ, তাহলে তারা সহজেই ব্যবসায়ে আগ্রহী হবে। আর যদি দেখে ব্যবসা করতে বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। তাহলে তারা বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই আমরা আগামী দুই বছরের মধ্যে ব্যবসা পরিবেশ সহজীকরণ সূচক ডাবল ডিজিটের মধ্যে আনতে চাই। তিনি বলেন, আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি এটার বাস্তবায়নে বেশ কিছু জটিলতাও রয়েছে। এই জটিলতা কাটিয়ে ব্যবসার পরিবেশকে ডাবল জিটে আনতে দুই বছর সময় লাগবে। ২০২১ সালের শেষে যে প্রতিবেদন বের হবে আমরা আশা রাখি তাতে ডাবল ডিজিটে আসবে আমাদের ব্যবসায় সহজীকরণ সূচক।

বিশ্বব্যাংক ১০টি সূচকের ভিত্তিতে বিশ্বের দেশগুলোর ব্যবসায়ের পরিবেশের সহজীকরণ প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। যার মধ্যে রয়েছে ব্যবসা শুরু, নির্মাণ অনুমোদন, বিদ্যুৎপ্রাপ্তি, সম্পত্তি নিবন্ধন, ঋণপ্রাপ্তি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষা, কর পরিশোধ, সীমান্ত বাণিজ্য, চুক্তি কার্যকর ও দেউলিয়াত্ব মীমাংসা। বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ব্যবসা শুরুর সূচকটি পরিমাপ করা হয় ব্যবসার বাণিজ্যিক বিরোধ মেটাতে প্রয়োজনীয় সময় ও ব্যয় এবং এ-সংক্রান্ত আইনি পদ্ধতির গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্ননয় কর্তৃপক্ষ (বিডা) বিনিয়োগকারীদের আরো দ্রæত সেবা দিতে নতুন করে ৫ সংস্থার সাথে অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে নতুন ১১টি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। বিডার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ), আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সাথে সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির ফলে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে নতুন ১১টি সেবা যুক্ত হবে, যা জুন ২০২০ থেকে বাস্তবায়ন করা হবে।

নভেম্বর ২০১৮ সালে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সোনালী ব্যাংকের সাথে স্বাক্ষরিত ছয়টি সমঝোতা স্মারকের আলোকে বর্তমানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস মাধ্যমে ১৮ সেবা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিডা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগ বান্ধব বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের আরো সহজে এবং দ্রæত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিডা, যাতে বিনিয়োগকারীরা স্বল্প সময়ে সহজ ভাবে আরো বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার পক্ষের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম দিনারুল ইসলাম, বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের মুনিম হাসান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের শাহিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদ, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মহিউদ্দিন। এ সময়ে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমহূর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন