শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ধামাচাপা দিতে মাঠে ছাত্রলীগের একাংশ

জবি প্রক্টরের নিয়োগ ও পিএইচডি জালিয়াতি

জবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রক্টর মোস্তফা কামালের নিয়োগ ও পিএইচডি জালিয়াতির সংবাদ ধামাচাপা দেয়ার জন্য জবি ছাত্রলীগের একাংশ ও নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছেন তিনি। প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা অ্যাখা দিয়ে দৈনিক ইনকিলাব ও যুগান্তর পত্রিকা পুড়িয়েছে প্রক্টরের নিজ বিভাগের কতিপয় শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জমান আসাদের অনুসারীরা। বুধবার ক্যাম্পাসে মিছিল করে রফিক ভবনের সামনে পত্রিকা পোড়ায় তারা। প্রক্টরের অনুসারীরা বলেন, ইনকিলাব ও যুগান্তর জামাত ও বিএনপির এজেন্ট। তাদের অবস্থান প্রগতিশীল চিন্তার বিরুদ্ধে যা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত।


এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টরের নিয়োগ ও পিএইচডি ডিগ্রির অনিয়মে প্রশাসনের স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জরুরী তদন্তের দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোট ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জবি শাখা। বিৃবতিতে প্রগতিশীল ঐক্যাজোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিক সহ অনলাইন পত্রিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভূতভাবে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের গুরুতর অভিযোগের সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও দ্বায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের প্রেক্ষিতে কোন রকম স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপরন্তু ভিসির পক্ষ থেকে কোন রকম তদন্ত ছাড়াই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রগতিশীল ছাত্রজোট নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রক্টরের মতো দায়িত্বশীল পদে অবস্থান করা একজন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অনাকাঙ্খিত ও উদ্বেগজনক যা সমাজে শিক্ষকদের নৈতিক অবস্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচিত এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ সময় তারা প্রক্টরের অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে এ ঘটনার দ্রæত তদন্ত ও স্পষ্ট প্রশাসনিক ব্যাখ্যা দাবি করেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোনায়েম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক তানজিম সাকিব এক যৌথ বিবৃতিতে প্রক্টরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগকে অনাকাঙ্খিত এবং উদ্বেগজনক উল্লেখ করে প্রশাসন কর্তৃক অভিযোগকে আমলে নিয়ে অবিলম্বে সঠিক তদন্তের আহŸান জানিয়েছেন এবং তদন্তকে নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার নিশ্চয়তা চেয়েছেন।

এছাড়া জালিয়াতকারীর পক্ষ নিয়ে জবি ভিসি ড. মীজানুর রহমান সাংবাদিকদের মূর্খ বলায় প্রতিবাদ জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। জবি সাংবাদিক সমিতির এক প্রতিবাদ বার্তায় সমিতির সভাপতির হুমায়ুর কবির ও সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ^াসী। বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টরকে নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের যথাযথ প্রমান ও নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে যাচাই করা। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ড.মীজানুর রহমান তার নিয়োগ ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানে অনিয়মের তদন্ত না করেই তার পক্ষে সাফাই গেয়ে উল্টো সাংবাদিকদের মূর্খ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ জায়গায় থেকে ভিসির এমন বক্তব্যে সাংবাদিক সমাজ হতাশ এবং যা কোনভাবেই আশা করে না।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি ইনকিলাবের শেষ পাতায় “জালিয়াতি করে অর্জিত পিএইচডির সনদ গ্রহণ করলেন জবি প্রক্টর” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড় উঠে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন