বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী না খুলনা?

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা হাতে নিয়ে ফটোসেশন করতে দেখা গেল দুই দলের অধিনায়ককে। খুলনা টাইগার্সের হয়ে জাতীয় দলের কান্ডারি মুশফিকুর রহিম। রাজশাহী রয়্যালসের ক্যারিবিয়ান অলারাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। তবে একটি জায়গায় দুই অধিনায়কেরই দৃষ্টি আটকে থাকতে দেখা গেল। কারো নজরই সরছে না সেখান থেকে। সেটা আর কিছু না। ফটোসেশনে ফেলে আসা ট্রফি। সেই ট্রফিকে নিজের করে নিতে দীপ্ত শপথ, প্রতিজ্ঞা, একাগ্রতা সবই ফুটে উঠল মুশফিকের চোখে। রাসেলের মুখের ভাষা ভিন্ন হলেও চোখের ভাষা সেই একই। মুখের ভাষা, চোখের ভাষাকে ছাপিয়ে আজ ক্রিকেটীয় ভাষায় যে নৈপুণ্য দেখাতে পারবে, কাঙ্খিত শিরোপা কথা বলবে তার সাথেই।

গতকাল বিপিএলের ফাইনালের আগে আন্তরিকতার দেখা মিললেও আজ খেলার মাঠে প্রতিদ্ব›িদ্বতা ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে বলে মনে হয় না। কারণ, আজ ফাইনাল। খুলনা ও রাজশাহী। এবারের আসরের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল। কি খটকা লাগছে? চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে আড়াল করছি না। কিন্তু গ্রæপপর্বের ফেলে আসা পয়েন্ট টেবিলের দিকে একটু নজর দিয়ে দেখুন। শীর্ষ দু’টি দলই খেলছে। একই সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটের বিবেচনায় খুলনা ছিল এক নম্বর পজিশনে। আর দুইয়ে থেকে শেষ করেছিল রাজশাহী। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে খুলনার বিপক্ষে হেরে গেলেও দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে চট্টগ্রামকে আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটের সামনে মাথা নত করতে হয়েছে। আবারও দৃুই দল একে অপরের প্রতিপক্ষ। তবে শুধু বদলে গেলে মঞ্চটা। আগে গ্রæপপর্বে ও প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে হারের পরও ছিল সুযোগ। তবে এবার আর নেই। হারলেই হাতছাড়া হয়ে যাবে শিরোপা স্বপ্ন।

খুলনা দলের মূল শক্তি মুশফিকের নেতৃত্ব। তার নেত্বত্বগুণের প্রশংসা করেছেন দলের দেশী-বিদেশী খেলোয়াড়রা। দেশী দুই তারকা নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ উদ্বেধনী জুটিতে খেলছেন বেশ স্বাচ্ছন্দে। শান্তর ব্যাট থেকেই আসে এবারের আসরের প্রথম কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি। এরপর রাইলি রুশো, শামসুর রহমান, মুশফিকুর রহিম, নাজিবুল্লাহ জাদরান ও রবি ফ্রাইলিঙ্ক মিডল অর্ডারের শক্তির জানান দিচ্ছে। এই শকিতশালী ব্যাটিংয়ের পাশপাশি বোলিংয়ে মোহাম্মদ আমিরের মতো পেসার আছেন এই দলে। যিনি গত ম্যাচে একাই তুলে নিয়েছিলেন ৬টি উইকেট। আমির ছাড়াও শহীদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, রবি ফাইলিঙ্ক, আমিনুল ইসলামরা আছেন মুশফিক ব্রিগেডে।

কম যায় না রাজশাহীও। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও আফিফ হোসেন নিজেদের উজাড় করে দিয়ে খেলছেন। মিডল অর্ডারে শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নওয়াজ ও ফরহাদ রেজার মতো অস্ত্র আছে আন্দ্রে রাসেলের ভাÐারে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ক্ষুরধার বোলিং আক্রমণভাগেরন নেতৃত্বে আছেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ ইরফান, আবু জায়েদ রাহী, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ফরহাদ রেজা ও রাসেলের মতো তারকারা। দলের প্রয়োজনে বল হাতে উইকেট নেয়ার সামর্থ্য এবং দক্ষতা আছে নওয়াজ ও মালিকের। আর অধিনায়ক নিজেও যে কম যান না, তার প্রমাণ কিন্তু আজকের ফাইনালে রাজশাহীর পা রাখা।

সাম্প্রতিক ফর্ম ও খেলোয়াড় বিবেচনায় এগেিয় রাখছেন কোন দলকে? এমনই একটা প্রশ্ন, যার কোন সঠিক উত্তর দেয়া আদৌ সম্ভব নয। এই নিয়ে আলোচনা করতে গেলে হবে বহু বিতর্ক। তারচেয়ে এই সিদ্ধান্তে আসাই উত্তম, যে দল ভালো খেলবে; জয় জুটবে তাদের ভাগ্যেই।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সাতটি আসরে সর্বোচ্চ তিনবার শিরোপা জিতেছে ঢাকা। ২০১২ ও ২০১৩ সালে ঢাকা গøাডিয়েটর্স নামে। ২০১৬ সালে ঢাকা ডায়নামাইস নামে। দুইবার এই শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স (২০১৫ ও ২০১৯)। আর ২০১৭ সালে একবার ট্রফি জিতেছিল রংপুর রাইডার্স। রাজশাহী ও চট্টগ্রাম, কোন দেেলরই অভিজ্ঞতা নেই বিপিএলের শিরোপা জয়ের। ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম রানার্স-আপ হয়েছিল। ২০১৬ সালে রানার্স-আপ হয়েছিল রাজশাহী। দুই দলকেই রানর্স-আপ হওয়ার তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল ঢাকা। তবে এবার যেহেতু ঢাকা ছিটকে গেলে আগেই। তাই এখন অপেক্ষা নতুন চ্যাম্পিনকে বরণ করে নেয়ার। তবে সেজন্য জানতেতো হবে, আসলে কে চ্যাম্পিয়ন হল। হ্যাঁ, সেজন্য আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন