বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তথ্যচিত্র প্রমাণ দিচ্ছে ইরান, মিথ্যা বলছে আমেরিকা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২০, ২:০৪ পিএম

ইরানের জেনারেল সোলাইমান হত্যার পর ইরাকে অবস্থানরত বেশ কিছু মার্কিন ঘাটিতে হামলা চালিয়েছে দেশটি। তবে ইরাকে অবস্থিত আমেরিকার বিমানঘাঁটি আইন আল-আসাদে যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তার ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপারে আমেরিকা মিথ্যা বলছে। এ কথা বলেছেন, ইউরোপের বিখ্যাত সাংবাদিক রবার্ট ইনলাকেশ যিনি অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিষয়ক নানামুখী রিপোর্ট করেছেন। এছাড়া, তিনি মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বিশেষ করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে বিশ্লেষণ করে থাকেন।

ইনলাকেশ তার এক নিবন্ধে বলেছেন যে, “আমাদের কাছে এ পর্যন্ত যে তথ্য এসে পৌঁছেছে তাতে অবশ্যই আমেরিকা তার নিজের ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলছে।” তিনি বলেছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আইন-আল আসাদ ঘাঁটির যে অংশে বেশিরভাগ আঘাত হেনেছে সেখানে আমেরিকার অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার ছিল। হেলিকপ্টার রাখার ছয়টি হ্যাঙ্গার ধ্বংস হয়েছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে অন্তত ছয়টি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার-গানশিপ ধ্বংস হয়েছে।

সাংবাদিক ইনলাকেশ ডেনমার্কের একজন সেনার বরাত দিয়ে আরো বলেছেন, বহুসংখ্যক হেলিকপ্টার দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, আইন আল-আসাদ ঘাঁটির ড্রোন অপারেটর ব্যারাক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু হামলার পরপরই আমেরিকার পক্ষ থেকে কয়েকটি গাড়ি পার্কিং এবং তাবু ধ্বংস হওয়ার কথা দাবি করা।

ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আইন আল-আসাদ ঘাঁটির যে কমান্ড সেন্টার থেকে আইআরজিসি'র কুদস ফোর্সের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে সেই কমান্ড সেন্টারও শহরে ধ্বংস করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি এক বিশেষ প্রতিবেদনে মার্কিন ফার্স্ট সার্জেন্ট ওয়েসলি কিলপ্যাট্রিকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইরানি হামলায় ওই রাতে ড্রোন পরিচালনা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়।

এসব তথ্য তুলে ধরে সাংবাদিক রবার্ট ইনলাকেশ বলেছেন, আমেরিকা অবশ্যই তাদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা। শুধু তাই নয়, গত ১৬ বছর ধরে তারা এই ঘাঁটিকে আমেরিকার বিমানঘাঁটি বলে দাবি করে এলেও এখন তারা একে ইরাকি ঘাঁটি বলে উল্লেখ করছে।

মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানোর জন্য ইরান স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ফতেহ-৩১৩ এবং কিয়াম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। ফতেহ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা হচ্ছে ৫০০ কিলোমিটার এবং কিয়াম ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৮০০ কিলোমিটার। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়।

ফতে-৩১৩ ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই নিখুঁত যে তা লক্ষ্যবস্তুর এক মিটারের মধ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে যে দশটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে তার মাত্র দুটি ক্ষেপণাস্ত্র উন্মুক্ত টারমাকে আঘাত এনেছে। কিয়াম ক্ষেপণাস্ত্রে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়।

হামলার পর স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে যে, কোনো কোনো স্থানে দুইবার হামলা চালানো হয়েছে। হামলার পর প্রাথমিকভাবে চল্লিশটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার কথা বলা হলেও পরে প্রকৃত তথ্যে দেখা গেছে- ইরান ১৩ থেকে ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। সাংবাদিক রবার্ট ইনলাকেশ তার নিবন্ধের শেষে উপসংহারে বলেছেন, সামগ্রিক তথ্য-প্রমাণে একথা পরিষ্কার হচ্ছে যে, আমেরিকা সম্পূর্ণভাবে ইরানি হামলার ভয়াবহতার কথা অস্বীকার করেছে। একই সঙ্গে পশ্চিমা মূলধারার গণমাধ্যমও ধ্বংসযজ্ঞের প্রকৃত তথ্য স্বীকার করা থেকে বিরত থেকেছে।

সূত্র: পার্সটুডে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Asaduzzaman Fakir Anis ১৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:১৭ পিএম says : 1
ট্রাম্প মিথ্যে বলে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন