শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শাসকগোষ্ঠি বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:১২ পিএম

শাসকগোষ্ঠি বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে যে রাষ্ট্র আমরা সবাই মিলে নির্মাণ করেছি, এই রাষ্ট্র এখন একটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যে রাষ্ট্র আমরা তৈরি করেছি সেই রাষ্ট্রে মানুষের কেনো অধিকার নেই, সাধারণ মানুষ একেবারেই সাধারণ হয়ে গেছে। যে চিন্তা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি ১৯৭১ সালে, সেই চিন্তা-চেতনা সেই ধারণাগুলো সম্পূর্ণভাবে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজকে যারা শাসকগোষ্ঠি তারা অত্যসবদ সচেতনভাবে এই রাষ্ট্রকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মরহুম প্রফেসর তালুকদার মনিরুজ্জামান স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ভিন্নমতের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দুঃখ হয় যখন দেখি যে, আমাদের গুণী মানুষ যারা রয়েছেন তাদেরকে শুধু কথা বলার কারণে কারাগারে পাঠানো হয়। যদিও তারা রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন না। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সাহেবকে এভাবে নিদারুন নির্যাতন করা হয়েছে, তাকে কারাগারে ঠিকমতো জায়গাও দেয়া হয়নি। যারা লেখেন, কথা বলেন বা যারা শুভ চিন্তা ও সত্যকে সামনে নিয়ে আসতে চান তাদেরকেও এখন একই ভাবে পর্যদুস্ত করা হচ্ছে, নিপীড়ন করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর মধ্যে উঠে দাঁড়াতে হবে, এর মধ্যেই তো কথা বলতে হবে। প্রফেসর তালুকাদার মনিরুজ্জামান সাহেব সেই কথাটি আমাদেরকে শিখিয়েছেন, পড়িয়েছেন যে, কখনো দ্বিমত না করা, লড়াই করে যাওয়া, সংগ্রাম করে যাওয়া। অবশ্যই আমরা জয়ী হবো। এদেশের মানুষ সংগ্রাম করেই জয়ী হয়েছে। আমি বিশ্বাস করে তালুকদার মনিরুজ্জামানের স্বপ্ন এখানে বাস্তবায়িত হবে। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার মাগফেরাত কামনা করছি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান বলেন, বাংলাদেশে আদর্শ শিক্ষক বলতে যা বুঝায় তালুকদার মনিরুজ্জামান ছিলেন তা। গবেষণা কর্মে তিনি সবসময় সম্পৃক্ত ছিলেন কিন্তু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদের পেছনে দৌড়াননি, তিনি প্রক্টর হতে চাননি। তিনি হয়েছেন জাতীয় প্রফেসর, এই অধ্যাপনাই ছিলো তার নেশা, তার পেশা এবং আমি মনে করি যে, বাংলাদেশের শিক্ষকরা যদি তালুকদার মনিরুজ্জামানকে অনুসরণ করে তাহলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আরো অনেক উন্নতি হওয়ার সম্ভব। ড. তালুকদারের মনিরুজ্জামানের বিশেষত্ব হলো তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বিশ্লেষাণাত্বক যে আলোচনা ও বিশ্লেষণ সেটা তিনি শুরু করেন। এর আগে বাংলাদেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মূলত; বর্ণনামূলক আলোচনা হতো। তিনি আমাদের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবেন। আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মাহবুবউল্লাহ, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনহ এহছানুল হক মিলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শামসুর রহমান, অধ্যাপক একেএম শহীদুল্লাহ, প্রফেসর গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর সিআর আবরার, প্রফেসর আসিফ নজরুল প্রমূখ মরহুম তালুকদার মনিরুজ্জামানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণ করেন।

অনুষ্ঠানে মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। অনুষ্ঠানে পরিবারের পক্ষ থেকে তালুকদার মনিরুজ্জামানের ছেলে প্রফেসর সাদিদ মনির ও আয়োজকদের পক্ষ থেকে সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন