সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা অস্বীকার করেছেন তাদের মুখেই বঙ্গবন্ধুর নাম বেশি শুনতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাংলাদেশে বিরাট অনৈক্য সৃষ্টি করে চলেছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণ ম্যান্ডেট দিল ৬-দফাভিত্তিক গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। নির্বাচিত সদস্যদের উদ্দেশ করে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যারা ৬ দফার সাথে বেঈমানি করবে তাদেরকে জ্যান্ত কবর দেয়া হবে। কিন্তু যারা ভারতে গিয়েছিলেন তাদেরই একাংশের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে একদলীয় শাসনের প্রয়োজনে ভোটারবিহীন নির্বাচন হত্যা-গুম, ব্যাংক লুট, দুর্নীতি, নারী ধর্ষণ সবই গ্রহণীয়। জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টিই তাদের সাফল্য। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে মরহুম প্রফেসর তালুকদার মনিরুজ্জামান স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুমের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শাসকগোষ্ঠি বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। যে রাষ্ট্র সবাই মিলে নির্মাণ করেছি, এই রাষ্ট্র এখন একটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যে রাষ্ট্র আমরা তৈরি করেছি, সেই রাষ্ট্রে মানুষের কেনো অধিকার নেই, সাধারণ মানুষ একেবারেই সাধারণ হয়ে গেছে। যে চিন্তা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি ১৯৭১ সালে, সেই চিন্তা-চেতনা সেই ধারণাগুলো সম্পূর্ণভাবে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেন, আদর্শ শিক্ষক বলতে যা বুঝায় তালুকদার মনিরুজ্জামান ছিলেন তা। গবেষণা কর্মে তিনি সবসময় সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদের পেছনে দৌড়াননি। তিনি প্রক্টর হতে চাননি। তিনি হয়েছেন জাতীয় প্রফেসর। এই অধ্যাপনাই ছিলো তার নেশা ও পেশা। তাকে যদি শিক্ষকরা অনুসরণ করেন তাহলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আরো অনেক উন্নতি হওয়া সম্ভব। তিনি আমাদের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবেন। তিনি মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সভায় অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মাহবুবউল্লাহ, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শামসুর রহমান, অধ্যাপক একেএম শহীদুল্লাহ, প্রফেসর গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর সিআর আবরার, প্রফেসর আসিফ নজরুল প্রমূখ মরহুম তালুকদার মনিরুজ্জামানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণ করেন।
অনুষ্ঠানে মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। অনুষ্ঠানে পরিবারের পক্ষ থেকে তালুকদার মনিরুজ্জামানের ছেলে প্রফেসর সাদিদ মনির ও আয়োজকদের পক্ষ থেকে সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন